আলোচনায় নতুন সরকার কর্মব্যস্ত সচিবালয়

প্রকাশিতঃ 10:44 am | October 14, 2018

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:

তিন মাস পরই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। চলতি মাসেই নতুন নির্বাচনকালীন সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করতে যাচ্ছে। সরকারের শেষ সময়ে প্রশাসনিক বিভিন্ন সেক্টরে কাজের চাপ আগের তুলনায় বেড়েছে। সবার মাঝেই এখন নতুন সরকারের অবস্থান নিয়ে চলছে নানা রকমের গুঞ্জন।

অপরদিকে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়েও চলছে বিভিন্ন কাজের অবস্থান নিয়ে নানান আলোচনা। ফাইল ছাড় করাতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশেষ করে প্রকল্প পাস করানো বা বদলির ফাইলগুলো নিয়ে তৎপর সংশ্লিষ্টরা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে উন্নয়নমূলক কাজের গতি বাড়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও বেড়েছে ব্যস্ততা।

তারা বলছেন, সরকারের শেষ সময়ে আমাদের কাজগুলো রুটিন মাফিক চললেও বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে বিভিন্ন কাজের চাপ বেড়েছে। এছাড়া তৃণমূলের কাজের গতি-প্রকৃতি যাচাই-বাছাইয়ে আমাদের প্রতিনিয়ত ব্যস্ত থাকতে হয়। এদিকে বর্তমান সরাকরের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করতে বড় কর্তাদের অতিরিক্ত চাপেও থাকতে হচ্ছে বলে বেশ কয়েকজন সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানাগেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অক্টোবর মাসের শেষদিকে অথবা নভেম্বরের শুরুতে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠিত হবে। আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে নভেম্বরে। এ সময়ে সরকার তার রুটিন কাজের বাইরে কিছুই করতে পারবে না।

অপরদিকে বেশকিছু মন্ত্রণালয়ে সরেজমিন দেখা গেছে, তাদের মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নমূলক কাজগুলো চলতি বছরের মধ্যেই যেগুলো শেষ হবার কথা সেগুলোর কাজ জোর দিয়ে চলছে। তবে বেশকিছু প্রকল্পের কাজ বাজেট বৃদ্ধি ও মেয়াদ বাড়ানোয় সেই কাজগুলো চলছে। ফাইল ছাড় করানো নিয়ে কর্মব্যস্ততার শীর্ষে রয়েছে শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, বাণিজ্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, জনপ্রশাসন, এলজিআরডি, ভূমি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, অর্থ, স্বরাষ্ট্র ও খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এছাড়াও অন্য মন্ত্রণালয়েও কাজের ব্যস্ততা বেড়েছে। কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের জন্য অপেক্ষায় থাকা বিলগুলো নিয়ে ব্যস্ততা লক্ষ্য করা গেছে। এবিষয়ে, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মাহমুদা শারমীন বেনু  বলেন, আমাদের সরকারি দপ্তরগুলোতে সকল কাজ ডিজিটাল সিস্টেম হওয়ায় রুট পর্র্যায়ে উন্নয়নমূলক কাজের পর্যালোচনা বেড়েছে। তিনি বলেন, আমরা সাধারণত যে কাজগুলো করি তা এনজিওভিত্তিক। দেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে। আমাদের কাজের মাত্রাও বেড়েগেছে।

আমরা প্রতিদিনই তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন কাজ মনিটরিং করছি। আমাদের প্রতিদিনই প্রায় মিটিং করতে হয়। সরকারের শেষ সময়ে কাজের অবস্থানের বিষয়ে মাহমুদা শারমীন বলেন, আসলে আমাদের কাজগুলো সবই রুটিন মাফিক। তবে আমাদের প্রকল্পের কাজগুলো সময়ের মধ্যেই শেষ করার জন্য একটা চাপতো থাকছেই।

এছাড়াও সচিলায়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের শুরু থেকে অপেক্ষমাণ ফাইলের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তোড়জোড় বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই তদবির ও সুপারিশ আসছে। এছাড়াও বদলি ও প্রশাসনিক কাজগুলো শেষ করার তাগিদ রয়েছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) রুপন কান্তি শীল বলেন, সরকারের শেষ সময়ে কাজের চাপ থাকবেই। তফসিল ঘোষণা হলে অনেক কিছুতে বাধ্যবাধকতা থাকে। আমাদের উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করতে হয়।

তিনি বলেন, কাজগুলো আমাদের রুটিনমাফিক করতে হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেহেতু সংসদ বহাল রেখেই অনুষ্ঠিত হবে এবং উন্নয়ন প্রকল্পের দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ওপর, ফলে তাদের মাধ্যমেই এসব প্রকল্পের অর্থ ব্যয় হবে। এ ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবেই কাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়গুলো।

কালের আলো/এনএম