প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ছে বাংলাদেশ-তুরস্কের, প্রশিক্ষণ বিনিময়ও পাচ্ছে প্রাধান্য

প্রকাশিতঃ 10:48 am | August 26, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা আরও বাড়াতে আগ্রহ দেখিয়েছিল তুরস্ক। গত বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশ সফরে আসা তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসগলু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করে নিজেদের এই আগ্রহের কথাই জানিয়েছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আবদুল মোমেনও তুরস্কের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছিলেন।

এর প্রায় ৮ মাসের মাথায় তুরস্ক সরকারের আমন্ত্রণে ৮ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের শুরুতেই দেশটির ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মন্ত্রী ইসমাইল দেমির এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী মুহসিন দেরে এর সঙ্গে সাক্ষাতে ঢাকা-আঙ্কারা আর দু’ দেশের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সৃদৃঢ় সম্পর্কের গভীর তাৎপর্যপূর্ণ এক বার্তাই দিয়েছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদও।

দু’দেশের কৌশলগত বন্ধুত্বের ধারাবাহিকতায় দেশটিতে সফরত সেনাপ্রধান গত ২৩ ও ২৪ আগস্ট তুর্কি চিফ অব ল্যান্ড ফোর্সেস জেনারেল মুসা আভ সেভ এবং চিফ অব জেনারেল স্টাফ জেনারেল ইয়াসের গুলের সঙ্গেও গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। খবর আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর)।

তারা জানিয়েছে, সাক্ষাতে দু’দেশই প্রতিরক্ষা বিষয়ক সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ ও প্রশিক্ষণ বিনিময়কে প্রাধান্য দিয়েছেন।

‘সম্পর্কের গভীরতা পরিমাপে সফর টুল বা উপাদান হিসেবে বিবেচ্য হয়। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে দেশ দু’টির শীর্ষ সামরিক ব্যক্তিত্বের সাক্ষাত ইতিবাচক প্রভাব রাখবে’ এমনটিই মনে করছেন বিশ্লেষকরাও।  

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশকে এশিয়ার ‘রাইজিং স্টার’ এবং সব দেশের জন্য ‘মডেল’ মনে করে তুরস্ক। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের দূরদর্শীতা দু’দেশের সম্পর্কের ভিত্তিকে আরও মজবুত করেছে।

ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিজেদের উষ্ণ সম্পর্ক সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েই একযোগে কাজ করছে বাংলাদেশ-তুরস্ক।

ইতোমধ্যেই তুরস্ক থেকে ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ’ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করছে সরকার। ওই চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মন্ত্রী ইসমাইল দেমির উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে এক টুইটে লিখেছিলেন- ‘থেমো না, এগিয়ে যাও।’

বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গেও গত বৃহস্পতিবারের (১৯ আগস্ট) বৈঠকে দেশ দু’টির মাঝে প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ এবং কল্যাণকর করার কথাই দৃঢ়ভাবে জানান দিয়েছিলেন দেমির। এর মাধ্যমে বন্ধুপ্রতিম দু’টি দেশ কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে, এমন মত বিশেষজ্ঞদের।

তুরস্ক এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা
বুধবার (২৫ আগস্ট) রাতে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, তুর্কি চিফ অব ল্যান্ড ফোর্সেস জেনারেল মুসা আভ সেভ এবং চিফ অব জেনারেল স্টাফ জেনারেল ইয়াসের গুলের সঙ্গে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের সাক্ষাতে তুরস্ক এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

তুর্কি সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি সেনাপ্রধান তুর্কি আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেম (ইউএএস) এর অপারেশন কন্ট্রোল রুম, আর্মি এভিয়েশন সদর দপ্তর এবং তুর্কি এয়ারস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ পরিদর্শন করেন।

এছাড়াও তিনি আঙ্কারায় অবস্থিত মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক এর সমাধিস্থল এবং জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং সেখানে তার (কামাল আতাতুর্ক) স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

কালের আলো/আরআই/এমএএএমকে