বিশ্বের অর্থনীতি আজ হুমকির সম্মুখীন: অর্থমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 6:47 pm | September 13, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
করোনার প্রভাবে সারা বিশ্বের অর্থনীতি আজ হুমকির সম্মুখীন, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো এর ব্যতিক্রম নয়। এমন একটি মুহূর্তে এই বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়ে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের উপায় এবং পথ খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২১-এ ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান লর্ড মারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী এবং বাণিজ্য বোর্ডের সভাপতি এলিজাবেথ ট্রাসসহ আরও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পুরো বিশ্ব সম্প্রদায় এখন একটি ক্রান্তিকাল পার করছে। অপ্রতাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯-এর প্রভাবে সারা বিশ্বের অর্থনীতি আজ হুমকির সম্মুখীন, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো এর ব্যতিক্রম নয়। এমন একটি মুহূর্তে এই বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়ে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের উপায় এবং পথ খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা সবাই অবগত যে, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত বছর বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩% সংকুচিত হয়েছে, যেখানে কমনওয়েলথভুক্ত অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে প্রায় ১০%, যা বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ হ্রাসের অন্যতম প্রধান নিয়ামক। দি ইউনাইটেড ন্যাশন্স কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট এর একটি প্রতিবেদনে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, ২০২০ সালে গ্লোবাল ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট হ্রাস পেয়েছে ৪২%। আর এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কমনওয়েলথ অর্থনীতি ৫০% এরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পটভূমিতে, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ উভয় ক্ষেত্রেই একটি শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের পথ খুঁজে বের করাই আমাদের আজকের এই সভার মহৎ উদ্দেশ্য।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ২০২০ সালের আইএমএফ-এর অক্টোবরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতিতে গড় ৪.৪% শতাংশের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। সেসময়ে অল্প কয়েকটি ইতিবাচক অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী, মহামারি প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্ব জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ব অর্থনীতিতে কমনওয়েলথ দেশগুলোর ভূমিকা মাত্র ১৩%, বৈশ্বিক এফডিআইয়ের মাত্র ২০% এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের ১৪%। কমনওয়েলথ বাণিজ্যে ৫৪টি দেশের মোট বাণিজ্যে মাত্র ১৮%। তারপরও যুক্তরাজ্যের মোট বাণিজ্যের মাত্র ৯.১ শতাংশ রয়েছে সমস্ত কমনওয়েলথ দেশগুলোর। এই পরিসংখ্যানগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, বাণিজ্য সম্পর্কিত কমনওয়েলথের বিদ্যমান নীতি এবং কৌশলগুলো কমনওয়েলথ দেশগুলোর জন্য সন্তোষজনক নয়।
মন্ত্রী বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের উপায় এবং পথ খুঁজে বের করার পাশাপাশি আমরা কমনওয়েলথের গৌরবময় অতীত ফিরে পেতে পারি।
কমনওয়েলথভুক্ত দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনোয়োগ বৃদ্ধি করে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের উপায় এবং পথ খুঁজে বের করতে একসঙ্গে কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
কালের আলো/আরএস/এমএইচএস