শ্বশুরালয়ের জেলায় ‘অন্য রকম’ আইজিপি!
প্রকাশিতঃ 1:51 am | October 18, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) বিয়ে করেছেন ‘প্রাচ্যের ড্যান্ডি’ হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জে। এখানকার সদর উপজেলার ফতুল্লা’র কাশীপুরের সরদার বাড়ি’র জামাই তিনি। এই হিসেবেই রাজধানী ঢাকার উপকন্ঠের এই জেলার সন্তান মনে করেন নিজেকে।
স্বভাবতই শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ের বদলে যাওয়া এই জেলার চিত্রপট নিজের চোখেই দেখেছেন পুলিশ প্রধান। এক সময় যে জেলা ছিলো অবহেলিত এখন সেখানেই ঝকঝকে দালান, সুপ্রশস্ত সড়ক, উড়াল সেতু, বড় বড় শিল্প-কারখানা আরো কত কী! সার্বিক অবকাঠামো আর দৃশ্যমান উন্নয়নে দৃশ্যপট বদলে যাওয়ার গল্পই উচ্চারণ করলেন বাহিনীটির সর্বোচ্চ এই কর্মকর্তা।
নিভৃতচারী ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বললেন, ‘আপনাদের (নারায়ণগঞ্জের) একজন সন্তান হিসেবে বলতে চাই আমার চোখের সামনেই এই জেলা কীভাবে উন্নয়নের শিখড়ে ওঠতে দেখেছি। আমার মনে পড়ে আমি প্রথম যখন এসেছিলাম তখন কেমন দেখেছি আর এখন কেমন উন্নত দেখছি। সামনে আরও উন্নতি হবে এই শহরের। দিনদিন এই শহরের শ্রীবৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করি আবার এ শহরের আরো উন্নয়ন দেখতে পাবো।’
বঙ্গবন্ধুর প্রতি নি:স্বার্থ ভালোবাসার অনুকরণীয় দৃষ্টান্তের পথিকৃৎ এই মানুষটি নিজের শ্বশুরালয়ের জেলার উন্নয়ন আর অগ্রসরতার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকার আশাবাদী উচ্চারণ করেন তিনি।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের আমলাপাড়া এলাকায় শারদীয় দূর্গাপূজার মন্ডপ পরিদর্শন করতে এদিন এসেছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক।
শ্বশুরালয়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির দেখেও অভিভূত পুলিশ বাহিনীতে অনুকরণীয় সৎ, নিষ্ঠাবান ও নিবেদিতপ্রাণ মানুষটি।
ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর প্রতি অমর-অব্যয় ভালোবাসা নিজের চিন্তা-চেতনা, মন-মননে ধারণ করার বিষয়টি অকপটে ওঠে আসে তাঁর জবানীতে- ‘বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ আমরা চেয়েছিলাম। যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে দেখিয়েছিলেন। আমি আজকে এই আমলাপাড়া এসে সেই স্বপ্নের যথার্থতা অনুভব করছি, অসম্প্রাদায়িক বাংলাদেশ।’
আমলাপাড়া যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের এক টুকরো গল্প, সম্প্রীতির বন্ধনের অনন্য উদাহরণ এবং বিরল এক দৃষ্টান্তও সেই কথাই যেন বলছিলেন তিনি। আইজিপি বলেন, ‘এক ফুটের ব্যবধানে মসজিদ এবং মন্দির। এটাই আসলে আসল বাংলাদেশ। সাধারণ জনগণ এই বাংলাদেশকে কতটুকু ভালোবাসে সেটা এখানে জনগণের স্বত:স্ফুর্ত হাসি মুখ দেখেই কিন্তু অনুভব করা যায়।’
দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব মডেল, দেশের অগ্রযাত্রা আর উন্নয়নের চমকের রূপকার বঙ্গবন্ধু কন্যার দূরদর্শী নেতৃত্বের গুণমুগ্ধ এই পুলিশ প্রধান বিশ্বাস করেন, ‘২০৪১ নয়, ২০৩০ সালের মধ্যেই উন্নয়নের মাইলফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ। আর সেটি সম্ভব হবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলেই।’
সতের কোটির বাংলাদেশের স্বপ্নছোঁয়ার প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে আবারো স্মরণ করেন জাতির জনককে। তাঁর ভাষ্যে- ‘যে স্বপ্নটি আমাদের জাতির জনক দেখিয়ে গিয়েছিলেন, সেই স্বপ্নটি জাতির জনকের সুযোগ্য তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখাচ্ছেন। ২০২১ এর স্বপ্ন, ২০৪১ এর স্বপ্ন। আমরা দেখতে পারছি ২০৪১ নয় তার অনেক আগেই আমরা সেই স্বপ্ন আমরা ছুঁয়ে যাবো।
সেই উন্নত বাংলাদেশ আমাদের সকলের চোখের সামনেই, আমরা যারা এখানে আছি, যারা পরবর্তী প্রজন্ম ২০৪১ এর আগেই উন্নত বাংলাদেশ দেখতো পাবো।’
আরও পড়ুন: পুলিশের ওপর মানুষের ‘আস্থা’র কথাই জানালেন আইজিপি
কালের আলো/এএ