ইভ্যালির কোটি টাকার পণ্য ‘খোলা বাজারে’ বিক্রির অভিযোগ
প্রকাশিতঃ 4:41 pm | September 20, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
নানা সমালোচনা ও গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ই-কমার্স সাইট ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। এদিকে ইভ্যালির কর্মকর্তারা ওয়্যারহাউজ থেকে বেশ কিছু মালামাল রাতারাতি সরিয়ে নিয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। এই পণ্যগুলোর আনুমানিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে এসব মালামাল সরিয়ে মোজাম্মেল নামে প্যাকেজিং কর্মকর্তা তার শ্বশুরবাড়ি সাভারের হেমায়েতপুরের বাগবাড়িতে নিয়ে মজুদ করে রাখেন বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে ৫০০টি মোবাইল ফোন খোলাবাজারে বিক্রি করেছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাভারের এক মোবাইল ব্যবসায়ী বলেন, শনিবার ৩০০ ও রবিবার ২০০টি রিয়েলমি ৮ (৫ জি) মডেলের ফোন সাভারের বাজারে ছোট হোলসেলারদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ১৯ হাজার ৭০০ টাকা দরে। হেমায়েতপুর মোজাম্মেলের শ্বশুরবাড়ির এলাকা পূর্বহাটি থেকেই এ ফোনগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তবে ফোনগুলো কে বুঝিয়ে দিয়েছেন তা জানাতে পারেননি তিনি।
এদিকে ওয়্যারহাউজ থেকে পণ্য নিয়ে আসার খবর জানতে পেরে ইভ্যালির কিছু গ্রাহক অর্ডারকৃত পণ্য বুঝে পেতে মোজাম্মেলের শ্বশুরবাড়ির সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়েন বলে জানান স্থানীয়রা। পরে তাদের দাবিকৃত পণ্য বুঝিয়ে দিতে একদিন সময় চান মোজাম্মেল। সময় পার যাওয়ার পর থেকে মোজাম্মেলের নম্বর বন্ধ পাচ্ছে তারা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাভারের বলিয়ারপুরে ইভ্যালির ওয়্যারহাউজ থেকে ভোক্তার কাছে সরবরাহ করা হতো বিভিন্ন পণ্য। এখানেই মোবাইল ফোনসহ গ্রাহকদের অর্ডারের বিভিন্ন পণ্য মজুদ ছিল। যেখানে মানবসম্পদ বিভাগের সহকারী ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান, স্টোর ইনচার্জ হিসেবে ছিলেন মোজাম্মেলে এবং সহকারী বিক্রয় ও বিপনন হিসেবে ছিলেন- আনোয়ার, আতিক, সাবরিনা ও হাসান। তারা সবাই মিলে ওই ওয়্যারহাউজ থেকে মালামাল রাতের আঁধারে সরিয়ে নিয়েছেন।
খবর পেয়ে আহাদ নামের এক গ্রাহক মোজাম্মেলের শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ মোবাইল ফোন দেখতে পান।
তিনি বলেন, ওয়্যারহাউজ থেকে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে আমি ছুটে যাই। কারণ আমার ইভ্যালিতে ২৫ লাখ টাকা ইনভেস্ট করা আছে। মোজাম্মেলের বাড়িতে গিয়ে দেখি প্রায় ৬০০ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল যার মধ্যে ছিলো আইফোন, রিয়েলমি ৮ প্রো ৫ জি ফোন। মোজাম্মেল আমার টাকার পরিমান ফোন আমাকে দিতে চেয়েছিলে। এজন্য জাহাঙ্গীর নামের তার শ্যালকের ফোন নম্বর দিয়ে আজ যেতে বলে। কিন্তু জাহাঙ্গীর প্রথমে সাভার বাসস্ট্যান্ড পরে ওয়্যারহাউজসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা করতে চেয়ে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। সবশেষে দেখা হলে তিনি বলেন, ইভ্যলির তিনি কেউ না। এর ফাঁকে মোজাম্মেল সব মোবাইল বিক্রি করে সটকে পড়েন।
১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে মোজাম্মেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা কিছু মোবাইল ওয়্যারহাউজ থেকে বের করে বাসায় নিয়ে আসি। সেগুলো বাসা থেকে ডেলিভারি করার কথা রয়েছে। তবে পরে মোজাম্মেলের বাসায় গিয়ে কোনো মোবাইল কিংবা অন্য কোনো পণ্য দেখতে পাওয়া যায় নি। এরপর থেকে মোজাম্মেলের নম্বরও বন্ধ পাওয়া যাচ্চে।
কালের আলো/এসবি/এমএম