৬৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি, গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশিতঃ 8:26 pm | September 23, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ
গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৬৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর। এজন্য ব্যাংকিং ও নন-ব্যাংকিং সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া ভ্যাটযোগ্য সেবা প্রদান করার পরও প্রতিষ্ঠানটি এখনো ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করেনি। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছে রাজস্ব বিভাগের ভ্যাট গোয়েন্দারা।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের (মূল্য সংযোজন কর) মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাজমুন নাহার কায়সারের নেতৃত্বে একটি দল প্রতিষ্ঠানটির ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে। তদন্তকালে গ্রামীণ ব্যাংকের এসব অনিয়ম বের হয়।
ভ্যাট গোয়েন্দারা জানান, তদন্তকালে প্রতিষ্ঠানটি সি.এ. ফার্ম কর্তৃক প্রত্যায়িত বার্ষিক অডিট প্রতিবেদন এবং প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাখিলকৃত অন্যান্য দলিলাদি আড়াআড়ি যাচাই করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া তদন্ত চলাকালীন প্রতিষ্ঠানের একাধিকবার আত্মপক্ষ সমর্থনে বিভিন্ন তথ্যাদি ও বক্তব্য আমলে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত মেয়াদে প্রদত্ত বিভিন্ন সেবা হতে প্রাপ্ত আয়ের বিপরীতে ৩৪ হাজার ৯১০ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৩০ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬০০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ৩০ কোটি ৩৬ লাখ ৪৮ হাজার ৬৯০ টাকা ভ্যাট ফাঁকি উৎঘাটন করা হয়। উক্ত ভ্যাট সময়মতো পরিশোধ না করায় আইন অনুসারে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মাসিক ২% হারে ১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭০৬ টাকা সুদ ধরা হয়।
প্রতিবেদনের আরও উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত মেয়াদে বিভিন্ন খরচের বিপরীতে উৎসে ভ্যাট বাবদ ৮ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ৮১৯ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করে। কিন্তু তদন্ত মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির উৎসে কর্তন বাবদ প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ২৩ কোটি ৯৩ লাখ ১০ হাজার ০৭৪ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির অপরিশোধিত ১৫ কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ২৫৬ টাকা ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। আর উক্ত ভ্যাট সময়মতো পরিশোধ না করায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মাসিক ২% হারে ৭ কোটি ২৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৭ টাকা সুদ ধরা হয়।
এভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের ৬৬ কোটি ৯৮ লাখ ৬০ হাজার ৬২৯ টাকা ভ্যাট পরিহারের তথ্য উদঘাটিত হয়। এই টাকা সরকারি কোষাগারে রাজস্ব হিসেবে আদায়যোগ্য।
কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল