জামায়াত নিয়ে কূটনীতিকদের উদ্বেগ এখনো কমেনি

প্রকাশিতঃ 9:56 am | October 21, 2018

পলিটিক্যাল ডেস্ক, কালের আলো:

জামায়াত নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্বেগ এখনো কমেনি। প্রায় চার বছর আগে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে জামায়াতকে নিয়ে যে প্রস্তাব তোলা হয়েছিল, সেই প্রস্তাব থেকে সরে আসেনি তারা। সবশেষ গত ১৮ অক্টোবর কূটনীতিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আবারো জামায়াত নিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন কূটনীতিকরা।

বাংলাদেশে সহিংসতা, সংঘাত ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার জন্য জামায়াতকে দায়ী করে ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব তোলা হয়। সেই প্রস্তাবে বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতেও আহ্বান জানিয়েছিল পার্লামেন্ট। তারপর বিভিন্ন সময়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফর করে তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করেন।

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা কূটনীতিকদের সঙ্গে গত ১৮ অক্টোবর মতবিনিময় করেছেন। সেখানে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কর্ম পরিকল্পনা তুলে ধরেন নেতারা। সে সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের কূটনীতিকরা জামায়াতের বিষয়ে ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের অবস্থান জানতে চান। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবের বিষয়ে তারা ইঙ্গিতও দেন। যদিও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা জোটে জামায়াত থাকবে না বলে কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করেন।

সূত্র জানায়, চার বছর আগে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে জামায়াতকে নিয়ে প্রস্তাব তোলার পর থেকে এখনো সেই অবস্থানেই রয়েছে তারা। ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের নয়টি দেশের মিশন রয়েছে। এসব মিশনের প্রতিনিধিরা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি জামায়াতের কার‌্যক্রম নিয়ে পর‌্যবেক্ষণ করে আসছেন।

এ বিষয়ে ঢাকার ইউরোপীয়ও একটি মিশনের একজন কূটনীতিকের সঙ্গে আলাপকালে জানান, জামায়াতকে নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে তোলা প্রস্তাবে কার‌্যকারিতা এখনো রয়েছে। প্রস্তাবটি পার্লামেন্ট থেকে যতদিন প্রত্যাহার বা পরিবর্তন করা না হবে, ততদিন এর কার‌্যকারিতাও থাকবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন পার্লামেন্ট থেকে জামায়াতেকে নিয়ে প্রস্তাব পাসের পর দু’বার ঢাকা সফর করেছেন পার্লামেন্টের সদস্য জা ল্যাম্বার্ট। তিনি প্রতিবারই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, জামায়াতের বিষয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট মনোভাব বদলায়নি। এছাড়া ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপকমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিশ্চিয়ান দান প্রেদার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরকালে একই অবস্থান জানিয়েছিল।

এদিকে ব্রাসেলসের একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের সহিংতার একটি ভিডিওচিত্র তৈরি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। ভিডিওচিত্রে সহিংসতার জন্য জামায়াতকেই বেশি দায়ী করা হয়। সেই ভিডিওচিত্রটি ২০১৪ সালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদেরও দেওয়া হয়। পার্লামেন্টের অনেক প্রতিনিধিই ভিডিওচিত্র দেখার পরে জামায়াতের বিষয়ে আরো বেশি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছেন।

কালের আলো/ওএইচ