নির্ধারিত সময়েই বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ : মোস্তাফা জব্বার
প্রকাশিতঃ 9:00 pm | October 08, 2021
নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ ২০২৩ সালের মধ্যেই মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে দুই বছর ধরে নিজেদের কারিগরি সহায়তায় ত্রুটি-বিচ্যুতি ছাড়াই সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বৃহস্পতিবার (০৭ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড-বিএসসিএল আয়োজিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মাধ্যমে দেশের বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার শুরুর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন মোস্তাফা জব্বার।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশের গৌরবই কেবল অর্জন করিনি, বরং গত দুই বছরে আমাদের নিজেদের ছেলেদের কারিগরি সহায়তায় কোনো ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি ছাড়াই নিরবচ্ছিন্নভাবে স্যাটেলাইট সেবা প্রদান অত্যন্ত গর্বের বিষয়।’
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. আফজাল হোসেন এবং অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এটকো সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসসিএল-এর চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।
২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০২১ সাল বাংলাদেশের ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে রূপান্তরের বছর উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, আইটিইউ ও ইউপিইউ-এর সদস্যপদ অর্জন, টিঅ্যান্ডটি বোর্ড প্রতিষ্ঠা, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা প্রবর্তনসহ ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপণ করে গেছেন বঙ্গবন্ধু।’
মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শত্রুরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথকে থমকে দেয়। ২১ বছরের জঞ্জাল ও পশ্চাৎপদতা অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের শাসনামলে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর রোপন করা বীজটিকে চারা গাছে রূপান্তর করেছেন।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোবাইল ফোনের মনোপলি ভেঙে দিয়ে ৪টি মোবাইল কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদান, কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার, ভি-সেটের মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রবর্তন, তথ্যপ্রযুক্তি—বিশেষ করে সফটওয়্যার রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় করণীয় নিরূপণে ড. জামিলুর রেজার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেন। তিনি মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে স্পারসোর মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বারো বছরে ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ায় বাংলাদেশ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’ কোভিডকালে বাংলাদেশের মানুষের সচল জীবনযাত্রা এবং প্রবৃদ্ধি অর্জনে ডিজিটাল সংযোগ বৈশ্বিক অবস্থানের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
টিভি চ্যানেল মালিকদের এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবাই নিজ দেশের স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে পেরে গৌরব অনুভব করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অচিরেই দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’ সভায় মোস্তাফা জব্বার বিএসসিএল-এর সঙ্গে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আলোচনা শেষে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
কালের আলো/এসবি/এমএম