প্রধানমন্ত্রী চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হতে রাজি ডা: মুরাদ হাসান!

প্রকাশিতঃ 7:18 pm | November 11, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে রাজি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ হাসান এমপি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদে নিজের আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘ওখানে (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) বোধ হয় আরও কাউকে দিলে ভালো হতেও পারে, এটুকু বলতে পারি। ওনাকে (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে) সহযোগিতা করা প্রয়োজন।’

আপনাকে দায়িত্ব দিলে পালন করবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার মা। তিনি আমাকে যে দায়িত্ব দেবেন সেটাই পালন করবো। তিনি যদি বলেন, আগুনে ঝাঁপ দে, মুরাদ। আমি তাই করব।’

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

২০১৫ সালের ১৫ জুলাই থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি দেশের ৩১ তম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ নিজেও মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।

এদিন ব্রিফিংয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশে নেই, নির্বাচন হচ্ছে। আমাদের কি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত না? আমার দলের নেতা–কর্মীদের এই কমনসেন্সটা কবে গ্রো করবে? একটা মেম্বার না হলে কি হবে, না খেয়ে মারা যাবে? মেম্বার হলেই বা কি হবে?

বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর কন্যার মতো তার চেয়ে বেশি কাজ করে ফেলবেন? আমি হাত জোড় করে অনুরোধ করছি দাঙ্গা-হাঙ্গামা কইরেন না। আমাদের দলের কালচার এটা না।’

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গাফিলতি দেখছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মুরাদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অত্যন্ত নিপাট ভদ্রলোক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, দেশপ্রেমিক মানুষ। উনি অত্যন্ত নিবেদিতপ্রাণ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী মানুষ এবং প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও পছন্দের।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শুনেছি একাধিকবার, ‘আমার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনেক ভালো, কথা কম বলেন, যখন কথা বলেন অনেক হিসাব করে কথা বলেন।’ অতএব তাঁকে নিয়ে সমালোচনা করার কোনো মানসিকতা ও অধিকার রাখি না।

আমি এটাই বলতে চাই ওখানে বোধ হয়… এত বড় মন্ত্রণালয়, আমাদের দেশটা তো একেবারে ছোট না। মানুষের সংখ্যাও তো অনেক, ১৭ কোটি। ওখানে বোধ হয় আরও কাউকে দিলে ভালো হতেও পারে, এটুকু বলতে পারি। ওনাকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন’ যোগ করেন ডা: মুরাদ হাসান।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ডা: মুরাদ হাসান ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার সমালোচনা করে যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটি ভাইরাল হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘ইসলাম আমাদের রাষ্ট্রীয় ধর্ম না। এটা বিশ্বাস করি না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সংবিধান লিখে গেছেন, সেই সংবিধানই থাকবে।’

পরে যুবলীগের একটি অনুষ্ঠানেও তিনি সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গে জোরালো বক্তব্য রাখেন। ওই সময় তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শেখ ফজলে শামস পরশের কাছেও নিজের জন্য যুবলীগে সদস্য পদের আকুল আবেদন জানান।

গত শনিবার (০৬ নভেম্বর) বিকালে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ মাঠে সরিষাবাড়ী উপজেলা সকল ওলামায়েকেরাম ও ইমামদের সাথে মত বিনিময় সভায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী পুনরায় বলেন, ‘আমি ইসলামের বিরুদ্ধে যায় এমন ধরনের কোন কথা বলি নাই। আমি এসব কথা বলতে পারি না।

আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান তালুকদার একজন মসুলমান। তিনি অসংখ্য মসজিদ ও মাদ্রাসায় দান করেছেন কিন্তু অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলেন নাই।’

আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান ডা: মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসন থেকে দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়মাল্যের পর তাকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এরপর মন্ত্রীসভার রদবদলে তাকে এই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ডা: মুরাদকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে সফলতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: হাসান মাহমুদ এমপি।

কালের আলো/এসআর/এমকে