দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আর কষ্ট পাবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 2:35 pm | October 27, 2018
কালের আলো প্রতিবেদক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। এ এলাকার মানুষ আর কষ্ট পাবে না। জীবনমান উন্নত হবে।
শনিবার (২৭ অক্টোবর) পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুনর্বাসন প্রকল্প ‘স্বপ্নের ঠিকানা’সহ ১৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ অঞ্চলটা সবসময় অবহেলিত ছিল। ১৯৯৬ সালের পর থেকেই উন্নয়নের কাজ শুরু করেছি। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ সবক্ষেত্রে কাজ শুরু করেছি। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৮ প্রায় দশ বছর জনগণের ভোট নিয়ে সরকারে আছি আমরা। এই দশ বছরে নিরলসভাবে উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এই অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০ হাজার মেগাওয়াট বৃদ্ধি করেছি। এখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ফলে শুধু মানুষের ঘরে ঘরেই বিদ্যুৎ যাবে না, কারখানাও গড়ে উঠবে, কৃষির যান্ত্রিকীকরণ করবো।
তিনি বলেন, ‘এ এলাকার মানুষ আর কষ্ট পাবে না। জীবনমান উন্নত হবে। পায়রা বন্দর ডিপ সি-পোর্ট হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এখান থেকে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত যাতে নদীপথে সরাসরি সহজে যোগাযোগ করা হয় সে ব্যবস্থা করা হবে। এখানে যাতে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, সে ব্যবস্থাই করছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই এলাকায় এনএলজি টার্মিনাল করবো। এসব উন্নয়ন করতে যেয়ে মানুষ যাতে গৃহহীন হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখছি। যেসব জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেসব জমি প্রায় তিনগুণ বেশি দামে নিয়েছি। এই জমি নেওয়ার কারণে ১৩০ পরিবারকে ঘর তৈরি করে দিয়েছি, যাতে তারা পরিবার নিয়ে ভালোভাবে থাকতে পারে। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারে। তাদের জন্য মসজিদ-স্কুলসহ সব ধরণের ব্যবস্থা করেছি। আশা করছি তারা সেখানে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই এলাকার মানুষদের নিরাপত্তার জন্য পায়রা বন্দরে সাইক্লোন সেন্টার তৈরি করে দিতে বলেছি। আমরা এখানে একটি নৌবাহিনীর ঘাঁটি নির্মাণ করছি। এছাড়াও একটি সেনানিবাসও তৈরি করছি। এখানে একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রও করে ফেলবো।’
এসময় মানুষের উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আগামী নির্বাচনে সবার কাছে ভোট চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী ১৬টি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। সেগুলো হলো- পটুয়াখালী সরকারি কলেজে নবনির্মিত ১৩২ আসন বিশিষ্ট ৫-তলা ছাত্রীনিবাস নির্মাণ, পটুয়াখালী সরকারি কলেজে নবনির্মিত একাডেমিক কাম-এক্সামিনেশন হল নির্মাণ, হাজী আক্কেল আলী হাওলাদার কলেজে ৪-তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ইসহাক মডেল ডিগ্রী কলেজে ৪-তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত একাডেমিক ভবন নির্মাণ, কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজে ৪-তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত একাডেমিক ভবন নির্মাণ, মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজে ৪-তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত একাডেমিক ভবন নির্মাণ, আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কলেজে ৪-তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত একাডেমিক ভবন নির্মাণ, সুবিদখালী ডিগ্রি কলেজে ৪-তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত একাডেমিক ভবন নির্মাণ, দুমকি জনতা ডিগ্রি কলেজে ৪-তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত একাডেমিক ভবন নির্মাণ, দুমকি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন, মির্জাগঞ্জ ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দরের শেখ হাসিনা সড়ক, পায়রা সমুদ্র বন্দরের সার্ভিস জেটি, পায়রা সমুদ্র বন্দরের মসজিদ, পায়রা সমুদ্র বন্দরের অফিসার্স গেস্ট হাউস, পায়রা সমুদ্র বন্দরের স্টাফ ডরমিটরি।
এছাড়া পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্থরও স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রকল্পগুলো হলো- পটুয়াখালী সরকারি কলেজে ৫ তলা বিজ্ঞান ভবন, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলাধীন কাঁঠালতলী জিসি-পটুয়াখালী বেতাগী আর এইচডি (থানা ব্রীজ) সড়কের শ্রীমন্ত নদীর উপর ৯৬.০০ মিঃ ব্রীজ, উপজেলা পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (৩য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, উপজেলা পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য কৃষক প্রশিক্ষণ (৩য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলায় কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দরের ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসন এলাকা।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী তেজগাঁও এয়ার মুভমেন্ট ফ্লাইটের নবনির্মিত ‘ভিভিআইপি কমপ্লেক্স’ উদ্বোধন করেন।
বিকালে বরগুনায় ২১টি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
কালের আলো/এনএম