প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতায় বিএনপি’র ‘মাথায় হাত’!

প্রকাশিতঃ 8:11 pm | December 07, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

খোয়াবের সূত্রপাত হয়েছিল সবেমাত্র। দুরভিসন্ধিও ছিল স্পষ্ট। মাঠ গরম করতে বক্তৃতাবাজির তুবড়ি ছুটছিল ফখরুল-রিজভীদের মুখে।

কিন্তু অঙ্কুরেই বিনষ্ট হলো তাদের স্বপ্ন। হ্যাঁ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বিচক্ষণ সিদ্ধান্তেই রীতিমতো ‘মাথায় হাত’ পড়লো রাজনীতির মাঠ থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে থাকা বিএনপি’র। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ফের মুর্চ্ছা যাওয়ার উপক্রম দূর লন্ডনের প্রেসক্রিপশনে পরিচালিত দলটি!

আরও পড়ুন: মুজিব কন্যার আরও একটি দূরদর্শী সিদ্ধান্ত, নতুন উচ্চতায় সরকারের ভাবমূর্তি

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ডা: মুরাদ হাসানের পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রীর নৈতিক দৃঢ়তার কাছে অসহায়ত্ব নিয়েই পরাজিত হতে হলো দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটিকে। এমন একটি বিষয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা এতো তড়িৎ এবং দ্রুত সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন এটি যেন কস্মিনকালেও ভাবতে পারেনি বিএনপি!

ফলত প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্তে মুখ থুবড়ে পড়লো দলটি। দিনের পর দিন সরকার পতনে ইস্যু খুঁজে ফেরা দলটিকে এবারও চুপসে যেতে হয়েছে ফুটো বেলুনের মতোই। ভেস্তে গেছে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে তাদের সব রকমের কূটকৌশলও।

বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও বলছেন, শেখ হাসিনার বিচক্ষণতার কাছেই বারবার পরাভূত হতে হচ্ছে। নিজ দলের প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও তিনি এতো কঠোর হতে পারেন এই বিষয়টি আঁচও করতে পারেনি আমাদের শীর্ষ নেতারা। উল্টো এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে উঠেছে। আওয়ামী লীগ নয়, শেখ হাসিনার কৌশলের কাছেই নাকানিচুবানি খেতে হচ্ছে বিএনপিকে।

মলিন মুখে দলটির মধ্যম সারির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের আলোকে বলেন, ‘ক্ষমতার সময়ে আমাদের নেতা খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়চেতা মনোভাবের পরিচয় দিতে পারেননি। ওই সময় আমাদের কোন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এমন কান্ড ঘটালে কঠোর সিদ্ধান্ত তো নয়ই, উল্টো বিরোধী দলের হাতেই ট্রাম্প কার্ড তুলে দেওয়া হতো। আসলে শেখ হাসিনার কাছ থেকে আমাদের নেতাদের রাজনীতি শেখার আছে।’

রাজনীতি বিশ্লেষণ করেন এমন কয়েকজন কালের আলোকে বলেন, সিদ্ধান্তগ্রহণে শেখ হাসিনা অতুলনীয়। তিনি মুরাদের বিরুদ্ধে যে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে কখনও এমনটি করে দেখাতে পারেনি।

উদাহরণ টেনে তারা বলছেন, বিএনপির ৯১ এর সরকারের শাসনামলে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করেও মন্ত্রী হিসেবে ছিলেন বহাল তবিয়তে। তারেকের ‘মাইম্যান’ শক্রুস খ্যাত লুৎফুজ্জামান বাবর আওয়ামী লীগকে নিয়ে ২০০১ সালের সরকারে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে অশালীন ও আপত্তিকর ভাষায় নানান কথা বলেছেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেননি খালেদা বা হাওয়া ভবন। উল্টো তাদের বেয়াদবিতে উৎসাহিত করেছেন।

আর এক্ষেত্রেও পুরোপুরি ব্যতিক্রমী এক চরিত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের রাজনীতির ইতিহাসে তিনিই প্রথম এবং একমাত্র সরকারপ্রধান যিনি নিজ দলের কেউ অন্যায়-অপরাধ করলে সর্বোচ্চ অ্যাকশনে গেছেন। ক্ষমা করেননি বা ছাড় দেননি মোটেও।

শেখ হাসিনার আরেকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- তিনি কোন দল বা গোষ্ঠীর দাবির মুখে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন না। জনকল্যাণই তার রাজনীতির মূল থিম। দলের আদর্শের প্রশ্নে তিনি অটল-অনড় থাকেন।

অপরাধীর সজ্ঞা তার কাছে কেবলই অপরাধী। দলে বড় পদ আছে এবং প্রভাবশালী মন্ত্রী তবুও নূন্যতম ছাড় দেননি। এক্ষেত্রে লতিফ সিদ্দিকী অন্যতম বড় এক উদাহরণ। গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার এবং মেয়র পদ থেকে বাদ দেওয়ার আগে লতিফ সিদ্দিকীকেও বহিস্কার করার মতো সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কালের আলো/এমএএএমকে