‘প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ ছাড়া সংবাদ প্রকাশ নয়’

প্রকাশিতঃ 2:21 pm | November 01, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
প্রশ্ন ফাঁসের গুজব যারা ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘যারা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া প্রশ্ন ছড়িয়ে গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনও সময় তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনবে।’

‘প্রমাণ ছাড়া পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সংবাদ প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার সকালে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

নানা উদ্যোগ নেয়ার কারণে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘গত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। এবারো এখন পর্যন্ত জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর পাওয়া যায়নি। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা নিয়েছি। ফলে এবারও প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষার সঙ্গে পাঁচটি মন্ত্রণালয় জড়িত। সবাই মিলে যার যার পক্ষ থেকে কাজ করছি। এর ফলে গত এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি, আর এখন পর্যন্ত প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর পাওয়া যায়নি।’

পরিসংখ্যান তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘সকাল থেকে সারাদেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এবার জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩ জন শিক্ষার্থী অংশে নিচ্ছে। তার মধ্যে ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ৬০১ জন ছাত্রী এবং ১২ লাখ ২৩ হাজার ৭৩২ জন ছাত্র। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ২৪ লাখ ৬৮ হাজার ৮২০ জন।’

‘তার মানে এক বছরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২ লাখ ১ হাজার ৫১৩ জন। অর্থাৎ ঝরে পড়া কমছে, শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সব দেশেই ঝড়ে পড়ার সংখ্যাটি রয়েছে। কোথাও কম কোথাও বেশি। কিন্তু আমরা গত ১০ বছরে শিক্ষার সার্বিক ক্ষেত্রে যে অর্জন করেছি তার কোনো তুলনা নেই। তবে এখনও যেসব শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে, তাদের ধরে রাখার জন্য নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।’

এবারের পরীক্ষায় ছাত্রদের থেকে ছাত্রীর সংখ্যা ২ লাখ ২২ হাজার ৮৬৯ জন ছাত্রী বেশি জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘বর্তমানে ছেলে-মেয়ের মধ্যে সমতা এসেছে। বরং এবার ছেলেদের চেয়ে ২ লাখ ২২ হাজার ৮৬৯ জন বেশি মেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।’

মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বলেন, আমাদের শিক্ষার মান বাড়েনি। এটি ঠিক নয়, বরং আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের পাবলিক পরীক্ষা আয়োজন ও ফল প্রকাশে একটি শৃঙ্খলা আনা হয়েছে।’

নির্বাচন কমিশন সব বার্ষিক পরীক্ষা ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার যে প্রস্তাব সে বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব পরীক্ষা শেষ করার জন্য আহ্বান করেছেন। সিলেবাস অনুযায়ী, সব পর্যায়ের বার্ষিক পরীক্ষা ১০ তারিখের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। ফলে কোনও সমস্যা হবে না।’

এ সময় শিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক মো. জিয়াউদ্দিন, কারিগরি মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন ভূঁইয়া, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হাফিজুল ইসলাম, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুন নাহার শাহীন উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এনএম