সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের দু:সাহসী ফ্রি-ফল জাম্প, নেতৃত্বে ব্রিগেডিয়ার মুহসিন
প্রকাশিতঃ 6:43 am | December 17, 2021
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে দৃপ্ত পদভারে এগিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন কনটিনজেন্ট। সুশৃঙ্খল মার্চপাস্টের গতিই যেন হ্যাট্টিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন এগিয়ে চলা বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। এগিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় পদাতিক, যুদ্ধাস্ত্র ও যান্ত্রিক বহরগুলো। এরই মধ্যে উপস্থাপকের ঘোষণায় পূর্ব আকাশের দিকে সবার চোখ।
স্বয়ং দৃষ্টি বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ’র। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর), ঘড়ির কাঁটায় তখন ১০ টা ৫৬ মিনিট।
বলা হচ্ছে, দেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের অকুতোভয় ফ্রি-ফলার ফ্রি-ফল জাম্প করে গ্যালারির পূর্ব প্রান্তে নেমে আসবেন। যে কথা সেই কাজ। বিজয়ের আকাক্সিক্ষত দিনটিতে নীল আকাশ থেমে নেমে আসছেন প্যারাট্রুপাররা। কুচকাওয়াজের বর্ণিল আয়োজনে যেন এক বাড়তি মাত্রা।
জানা যায়, এই ফ্রি-ফল দলের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মুহসিন আলম। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বহন করেন। ভারতীয় বিমানবাহিনীর মহিলা প্যারাট্রুপার উইং কমান্ডার আশা জোতির্মাই এই ফ্রি ফল দলের সঙ্গে জাম্প করেন।
প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডকে বলা হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একমাত্র স্পেশাল ফোর্স ব্রিগেড। ‘ডু অর ডাই’ মূলমন্ত্রে দীক্ষিত অকুতোভয় কমান্ডোরা যেকোন স্থানে, যেকোন পরিস্থিতিতে জল, স্থল ও আকাশ পথে শত্রুর সীমার অভ্যন্তরে পৌঁছে সার্জিকাল স্ট্রাইক করে শত্রুকে পরাজিত করতে সক্ষম।
এটি সম্ভব হয়েছে মূলত কমান্ডোদের নিরলস পরিশ্রম, কঠোর সাধনা ও দেশপ্রেমের কারণে। যেসব প্যারাট্রুপার অবতরণ করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল রওনক, মেজর রায়হান, মেজর জিহাদ, মেজর ফারুক, মেজর আরিফ, মেজর মশিউর, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ইউনুস।
এরপর মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদকে সালাম জানায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একমাত্র প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের প্যারাট্রুপাররা। ‘মৃত্যুপণ বিজয়ী’ মূলমন্ত্রে দিক্ষীত হয়ে দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক জাতীয় পতাকা বহন করে।
অনুষ্ঠানস্থল থেকে উপস্থাপক বলছিলেন এমন- ‘এই প্যারাট্রুপার দলের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মুহসিন আলম। তিনি ২৪ তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সঙ্গে ১৯৯১ সালের ২১ জুন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমিশন লাভ করেন।
তিনি একজন দক্ষ প্যারা কমান্ডো, অভিজ্ঞ ফ্রিফলার এবং কমান্ডো প্রশিক্ষক। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদবীতে ফ্রি ফল জাম্প সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড এর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।’
এ সময় আরও বলা হয়, উত্তর দিক থেকে আর্মি এভিয়েশনের দু’টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের চৌকষ কমান্ডো সেনাদল, স্পেশাল পেট্রোল ইনসার্শন এন্ড এক্সট্রাকশন এর মহড়া প্রদর্শন করতে এগিয়ে আসছে।
এই বিশেষ সেনাদল যেকোন প্রতিকূল পরিবেশে উদ্ভুত পরিস্থিতি অতি অল্প সময়ে মোকাবেলা করে নিরাপদ স্থানে ফিরে যেতে সক্ষম। দুর্ধর্ষ সেনাদল জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই অপারেশন পরিচালনা করছেন। অপরাজেয় ও দুর্দান্ত এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন মেজর নাঈম।
প্রথম হেলিকপ্টারে পাইলট হিসেবে রয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে আরিফ ও মেজর রায়হান। দ্বিতীয় হেলিকপ্টারে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল বারি এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল আনোয়ার। প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডের অসীম সাহসী, অপ্রতিরোধ্য ও দুর্ধর্ষ সদস্যগণ স্পেশাল পেট্রোল ইনসার্শন এন্ড এক্সট্রাকশন অপারেশন প্রদর্শন করে স্যালুটিং মঞ্চ অতিক্রম করছে।’
কালের আলো/এমএএএমকে