সিলেটের স্বার্থে নিরাপস পররাষ্ট্রমন্ত্রী, গুরুত্বপূর্ণ বার্তায় সরগরম রাজনীতি
প্রকাশিতঃ 10:21 am | December 30, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
সব সময় সিলেটের স্বার্থে কথা বলেন। গোটা সিলেটের অধিকার আদায়ের প্রশ্নেও তিনি দৃঢ়চেতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রগাঢ় আন্তরিকতা আর দূরদর্শী নেতৃত্বে দিনবদল আর পালাবদলের পালায় বদলে যাওয়া সিলেটের উন্নয়নের কথা বলেন। তাঁর কর্মে-চিন্তায়, ধ্যানে-জ্ঞানে কেবলই সামগ্রিক সিলেটের মঙ্গল।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পররাষ্ট্রনীতিতে আমরা সফল : ড. মোমেন
মিলেমিশে কাজও করতে চান সবাইকে নিয়ে। আন্তরিকতা, সততা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে সিলেটবাসীর উন্নয়নে কাজ করার জন্য দোয়াও চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. একে আবদুল মোমেন।
এসব মানবিক গুণই একজন মন্ত্রী বা রাজনীতিকের চরিত্রকে ছাপিয়ে তাকে করে তুলেছেন সিলেটের সর্বস্তরের মানুষের প্রিয় নেতায়। সিলেটবাসীর কল্যাণে তার নিবেদিতপ্রাণ ভূমিকায় এখানকার বাসিন্দাদের হৃদয়ে আস্থার ঠিকানা হয়ে আছেন একে আবদুল মোমেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে স্থানীয় রেজিস্ট্রারি মাঠে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই বিশাল সংবর্ধনা প্রকারান্তরে সিলেটবাসীর জন্য তার সাহস, সংকল্প এবং জনকল্যাণে তার নিরাপস ভূমিকার স্মরণ এবং স্বীকৃতি।
এদিন সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প অনুমোদন ও সিলেটের উন্নয়নের বিশেষ অবদান রাখায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই নাগরিক সংবর্ধনা দেয় সিলেট সিটি করপোরেশন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একক প্রচেষ্টাতেই সাড়ে ২৬ বর্গকিলোমিটারের সিলেট সিটি করপোরেশন এখন প্রায় তিনগুণ আয়তন বেড়েছে বলে অনুষ্ঠানে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। একই সঙ্গে সিলেট নগরীতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন নিশ্চিত হওয়ায় নগরবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি ধন্যবাদও জানান।

দীর্ঘদিন পর দল-মত নির্বিশেষে স্থানীয় রেজিস্ট্রারি মাঠে বিপুল জনরাণ্য সিলেটজুড়ে সব আবেগ উদ্দীপনা ও আস্থার প্রতীকে পরিণত ড. মোমেনকে এই অঞ্চলের ‘অকৃত্রিম বন্ধু’ হিসেবেই প্রমাণ করেছে। মূলত নিজের কাজের মধ্যে দিয়েই তিনি সিলেটের অভিভাবকের আসনে আসীন হয়েছেন।
দুরন্ত, দুর্বার গতিতে সিলেটের উন্নয়নের জন্য ড. একে আবদুল মোমেন সব কৃতিত্ব দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের প্রতি খুব সদয়। সিলেটের উন্নয়নে বরাদ্দ দিতে তিনি দ্বিধা করেন না। না চাইতেও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সিলেট অনেক কিছু পাচ্ছে।
সিলেট নগরীর উন্নয়নে ১ হাজার ২২৮ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা-রাস্তাঘাট উন্নত হচ্ছে। এয়ারপোর্ট অত্যাধুনিক হচ্ছে। স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। শিক্ষা খাতে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সিলেটের প্রত্যেকটি কলেজে বিশেষ অনুদান দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে মডেল সিলেট গড়ে তোলা হচ্ছে।’
সিটি করপোরেশনের গর্ব করার মতো আয়োজন এবং সব বাঁধা ডিঙিয়ে সিলেটের উন্নয়নের কান্ডারী ড.মোমেনকে বিরল সম্মানে ভূষিত করার পর নতুন এক মেরুকরণের পূর্বাভাস মিলেছে সিলেটের রাজনীতিতে। সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠে এসে বিএনপির মেয়র যেভাবে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি উন্নয়নের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সেটিও নজিরবিহীন এক ঘটনা।
ঠুনকো অজুহাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠানে না এলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেই। মূলত বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে স্থানীয় রেজিস্ট্রারি মাঠে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্থানীয়ভাবে ইতিবাচক রাজনীতির নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের গুটিকয়েক নেতার পলিটিক্যাল ইন্টারেস্ট আমলে না নিয়ে তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, কোন দল, মত বা পথ নয়- সিলেটের উন্নয়নের প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বলেছেন, সিলেটের উন্নয়নে দল ও মতের বিবেচনা নয়, উন্নয়নকেই প্রাধান্য দিতে হবে।

ড. মোমেন বলেছেন, আমাকে কেউ কেউ বলেছেন- আজকের আয়োজন আরিফ করেছেন। আমি বলেছি- আরিফ সাহেব করে নাই, করেছে সিটি করপোরেশন, বরং আপনাদের লজ্জা লাগা উচিত এই কারণে যে- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে এত ভালো কাজ করছেন, একজন অন্য দলের লোক মেয়র আরিফ সেটি স্বীকার করছে। সেটা গ্রহণ করতেছে।
আপনাদের তো ভালো লাগার কথা। আমি তো হলাম উসিলা মাত্র। তারা আমাকে নয়, সম্মান দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। যিনি আমাদের প্রতি সদয় হয়ে এতকিছু করছেন। সুতরাং সিলেটের উন্নয়নে সবাই মিলেমিশে কাজ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতারা ডাহা মিথ্যাচারে অভ্যস্ত হলেও তাদের দলেরই সিলেটের অন্যতম আলোচিত নেতা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন নিয়ে গুণমুগ্ধতায় নিজের কন্ঠ উচ্চকিত করেছেন, এটিও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি বড় সফলতা। বিজয়ের মাসে বিএনপির এই সরল স্বীকারোক্তি দেশজুড়েই কাজ করবে নিয়ামকের ভূমিকা।
আবেগ নয়, যুক্তিতে বিশ্বাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজ দলের সেই সব নেতাদের উদ্দেশ্যেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। সেটি হলো, তিনি সিলেটের ছেলে, সেখানকার সবার হৃদয়ে সিলেট। বৃহত্তর সিলেটের মঙ্গলের জন্য তিনি সব সময়ই প্রস্তুত।
এ প্রসঙ্গে একটি বিষয়ও সবাইকে জানিয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে কেউ কেউ বলেন যে, মেয়র অন্য দলের। সুতরাং আপনি উনার অনেক প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না। আমি বলি, সিলেট তো আমারও। মেয়র সাহেবেরও (আরিফের)। সুতরাং বৃহত্তর সিলেটের মঙ্গলের জন্য সব করতে হবে।’
কালের আলো/এমএইচ/এমএএএমকে