‘বাবার কাছে শিখেছি, আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে মাথা নত করি না’

প্রকাশিতঃ 3:28 pm | November 04, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার বাবার কাছে শিখেছি, আল্লাহ ছাড়া কারও কাছে মাথা নত করি না। আল্লাহকে মানি, ধর্মকে বিশ্বাস করি। বারবার আমার ওপর আঘাত এসেছে। আল্লাহই রক্ষা করেছেন। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পাই না। মরা-বাঁচা আল্লাহর হাতে। যেদিন তিনি নিয়ে যাবেন সেদিন কেউ ঠেকাতে পারবে না। তবে এটুকু চাই যে, আল্লাহর রহমতে যেন মান-সম্মান নিয়ে যেতে পারি।’

রোববার (৪ নভেম্বর) আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত শুকরানা মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মাননা জানানোর আগে তাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দেন কওমি মাদ্রাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা ‘আল-হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিআাতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’র সদস্য মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন।

পরে বক্তৃতা শুরু করেই মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন ও আলেম-ওলামাদের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা সংযুক্ত হলেই একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গ হয়। আর কেউ যেন কওমি স্বীকৃতি বাতিল করতে না পারে সেজন্য এই আইন (স্নাতকোত্তর স্বীকৃতি) করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী এসময় নির্বাচনে দোয়া চেয়ে বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যদি খেদমতের সুযোগ দেন তাহলে আবারও আসবো। না হলে আফসোস নেই।’

তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। যারা এই শান্তির ধর্মের শিক্ষা দেন তারা কেউ অবহেলিত থাকবেন না। তাদের সবাইকে মূল্যায়ন করা হবে।

ওলামা-মাশায়েখদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা এতিমদের আশ্রয় দিয়েছেন, তাদের শিক্ষিত করছেন, মানুষ করছেন। এর চেয়ে ভালো কাজ আর হতে পারে না। আমরা সনদ দিয়ে তাদের স্বীকৃতি দিয়েছি। এখন তারা বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে চাকরি করে খেতে পারবে। এজন্য আইন পাস করেছি। পরবর্তীতে কেউ যেন এসে সেটা বন্ধ করতে না পারে। আমরা মসজিদের ইমামদের ভাতা দিচ্ছি। বাংলাদেশের ৮০ হাজার আলেম-ওলামা ভাতা পাচ্ছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ হচ্ছে। এসব মসজিদে ইসলামী কালচারের ব্যবস্থা থাকবে। এখানেও অনেক আলেম-ওলামার কর্মসংস্থান হবে।’

‘আমি হযরত মোহাম্মদ (স.) এর পথ অনুসরণ করি। আল্লাহর যা কিছু সৃষ্টি, আল্লাহর নবী যে শিক্ষা দিয়েছেন সেই শিক্ষা নিয়ে পথ চলি এবং চলবো। কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়, সকলের প্রতি রইলো আমার শুভ কামনা।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে কোনো সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও দুর্নীতিবাজের স্থান হবে না। সবাই ভালো থাকবে, সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশে কোনো ভিক্ষুক থাকবে না। যারা কাজ করতে পারবে না তাদের ভাতার ব্যবস্থা করবো।’

দেশের প্রতিটি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কওমি শিক্ষার্থীদের দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে হবে।

সংবর্ধনায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মো. জয়নুল আবেদীন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব আল্লামা আবদুল কুদ্দুস।

আল্লামা আহমদ শফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আল্লামা আশরাফ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ আবদুল্লাহ, মাওলানা মাজহার আলী, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, মাওলানা রুহুল আমীন, মাওলানা আবদুল লতিফ, মাওলানা নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

কালের আলো/এনএল