আমার কেন জানি গোলমেলে ঠেকছে!
প্রকাশিতঃ 8:56 pm | November 04, 2018
শামসুদ্দিন আহমেদ :
গত কয়েকদিন ধরে কিছু বিষয়ে খটকা লাগছে। সাংবাদিক হিসেবে পত্রিকায় লিখতে না পারার একটা যন্ত্রণায়ও ভুগছি। প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে ড. কামাল স্বাক্ষর করেছেন, শীর্ষ নেতা হিসেবে তা ঠিক আছে। কিন্তু ওবায়দুল কাদেরকে দেয়া চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন মোস্তফা মোহসীন মন্টু। ফ্রন্টের প্রধান শরিক হিসেবে কেন বিএনপির মহাসচিব এই চিঠিতে স্বাক্ষর করতে পারলেন না? সঙ্গত কারণেই ওবায়দুল কাদেরও কয়েক দফায় যোগাযোগ করেছেন মন্টুর সাথে। তাহলে কী বিএনপির চেয়েও ফ্রন্টে গণফোরামের গুরুত্ব বেশি?
এরপর বুধবার সকালে বিএনপির মানববন্ধনে ফখরুল বলেছিলেন ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিই হবে সংলাপের প্রধান এজেন্ডা’। একইদিন বিকালে জেএসডি’র অনুষ্ঠানে ড. কামাল বললেন ‘দলীয় স্বার্থ নয়, সংলাপে প্রাধান্য পাবে জাতীয় স্বার্থ’’। এরপর আসলো সংলাপে প্রতিনিধি দলের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়। বাড়তি পাঁচজনের মধ্যে বিএনপির দুজন, গণফোরামেরও দুজন। শেষ মুহূর্তে তালিকায় নাম ওঠায় যাননি অভিমানী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ফলাফল ছিল- সংলাপে বিএনপির ছয়জন, আর গণফোরামের পাঁচজন অংশ নিয়েছেন। মনে হলো বিএনপি আর গণফোরামের সাংগঠনিক বিস্তৃতি ১৯/২০।
সংলাপে আসন বিন্যাসেও আমার খটকা লেগেছে। ড. কামালের ডানে বসেছিলেন সুব্রত চৌধুরী ও মন্টু। তাদের দুজনের পরে স্থান হয়েছিল বিএনপির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের। পরের খটকা আরও বড়। সংলাপ থেকে বের হওয়ার পর ফখরুলের চেহারা আমি গভীরভাবে পাঠ করার চেষ্টা করছি। মনে হচ্ছিল তিনি ‘বলতেও পারছি না, সইতেও পারছি না’ ধরনের উভয় সংকটে পতিত।
আমার মনে হয়েছে ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা যেভাবে কথা বলার প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছিলেন, ফ্রন্টের ভেতরের বাধার কারণে সেভাবে বলতে পারেননি। গণভবন থেকে বাসায় ফেরা পর্যন্ত ড. কামালের চেহারাও আমি নানা এ্যাঙ্গেল থেকে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, ড. কামাল ‘নট আনহ্যাপি’ মুডে ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের উপর্যপুরি প্রশ্ন আর ফখরুলের প্রতিক্রিয়ার প্রভাবেই যেন ড. কামালকে বলতে হয়েছে ‘বিশেষ কোনো সমাধান পাইনি’। প্রেস ব্রিফিংয়েও ড. কামাল আর ফখরুলের চেহারার বার্তা ছিল সাংঘর্ষিক। বিষয়টা আঁচ করতে পেরেই যেন আ স ম আবদুর রব বলে দিলেন ‘আমাদের কর্মসূচি চলবে, আন্দোলন চলবে’। ঐক্যফ্রন্টের সামগ্রিক পরিবেশটাকে আমার কেন জানি গোলমেলে ঠেকছে।
লেখক: সাংবাদিক