শেখ হাসিনার সরকারে গুরুত্বপূর্ণ বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্তদের উত্তরাধিকাররা

প্রকাশিতঃ 10:48 am | March 18, 2022

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, অ্যাকটিং এডিটর :

স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের টানা চারবারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দীপু মনি। দু’জনের বাবা রফিক উল্লাহ চৌধুরী ও ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ খ্যাত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে। ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন। জীবনের চলার পথের বাঁকে বাঁকে অনেক কঠিন পরিস্থিতি ও সংগ্রামমুখর জীবনের সঙ্গে লড়াই করেছেন।

জীবনের ঝুঁকি নিয়েও বাঙালি জাতির ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আমৃত্যু শতভাগ বিশ্বস্ত ছিলেন। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের পিতা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বাবা হামিদুর রহমান ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বাবা ছহিউদ্দিন বিশ্বাস বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে থেকে দেশের জন্য, আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে গেছেন নিরন্তর।

স্বাধীনতার পর অনেক নেতাই আওয়ামী লীগবিরোধী হয়ে উঠলেও তাঁরা কখনও জাতির পিতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। হাসিমুখেই কারান্তরীণ হয়েছেন কেউ কেউ। টুঙ্গিপাড়ার মহামানবের ৫৫ বছরের মহাজীবনের বর্ণাঢ্য অধ্যায়ের সঙ্গে তাঁরা গভীরভাবেই জড়িয়েছিলেন নিজেদের।

শেখ পরিবারের আদরের ‘খোকা’, বাঙালির ‘মুজিব ভাই’ তাদের পছন্দ করতেন। নিজেদের কর্মদক্ষতায় তাঁরাও তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন সারা দেশে। মহান জাতির পিতা তাঁর রাজনৈতিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা তাদেরকে নিয়ে বাস্তবায়ন করতেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্তদের রক্তের উত্তরাধিকারদের ঠাঁই দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার সম্পর্কও খুবই ঘনিষ্ঠ। তাঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের বাবার রাজনৈতিক স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই শ্রম, মেধা ও কর্মের দ্যুতি ছড়িয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রগাঢ় আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রেখেই জনস্বার্থের রাজনীতিকে নিজেদের পরম ব্রত করেছেন স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের টানা চারবারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দীপু মনি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। দীর্ঘ পথচলায় নানা চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়েছেন। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন।

প্রত্যেকেই দৃঢ়ভাবেই বিশ্বাস করেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ অপবাদকে চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশকে বিশ্বপরিমন্ডলে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে উন্নয়ন-সমৃদ্ধির মহাসোপানে নিয়ে গেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি চলমান অগ্রযাত্রাকে সমুন্নত রাখতে নিজেদের নিবেদন করেছেন একদিন-প্রতিদিন। তাদের হৃদয়ে চিরকাল বঙ্গবন্ধু এবং প্রেরণার বাতিঘর একজন শেখ হাসিনা।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে রাজনীতিতে উঠিয়ে আনেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজের মেয়ের মতোই আদর করেন তাকে। নির্লোভ ও ধৈর্য্যশীল শিরীন শারমিন নিজের দক্ষ কর্মযজ্ঞে জাতীয় সংসদকে অর্থবহ, কার্যকর ও প্রাণবন্ত করে তুলেছেন।

বাবা যেমন বঙ্গবন্ধুর জন্য বারবার জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন তেমনি তাঁর কন্যা, শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনিও ওয়ান ইলেভেনে নিজের বিশুদ্ধ রক্তের প্রতীকী স্বাক্ষর রেখেছেন। মঈন-ফখরুদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে প্রতিবাদের ঝান্ডা হাতে শেখ হাসিনার মুক্তির পক্ষে আওয়াজ তুলেন। অসীম সাহসে চরম ঝুঁকি নেন। রুখে দেন শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে ‘মাইনাস’ করার ষড়যন্ত্র। আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদের মধ্যে দু’মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন দীপু মনি। সততার শক্তিতেই ষড়যন্ত্রকারীদের বারবার পর্যদুস্ত করেছেন। তাঁর বড় ভাই ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ডায়াবেটিক ফুট সার্জারিতে দেশের একমাত্র বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসক।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ দশম সংসদে নির্বাচিত হয়ে সরকারের ভূমি প্রতিমন্ত্রী ও একাদশ সংসদে তিনি একই মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘদিনের প্রথা ভেঙে ভূমি মন্ত্রণালয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন মন্ত্রী। দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন, আমি তাঁর প্রতিদান দেবো।’ জনগণের সেবা নিশ্চিত করতেই বাস্তবায়ন করছেন একের পর এক পদক্ষেপের।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন। ১৯৯৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কেরানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ছিলেন। ২০০১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রানিংমেট’ হিসেবে বিপু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ঘরে ঘরে শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করেছেন। বিদ্যুৎ খাতে বড় বড় মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কথায় নয় কাজেই নিজের প্রমাণ দিয়েছেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন মেহেরপুর-১ আসনের টানা দু’বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক চিন্তা-চেতনা, মননশীলতায় ও মেধায় জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি নিবেদিত থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তোলার মিশনে পূর্ণোদ্যমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূলের রাজনীতি করে আসা নেতাদের বেশি দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। তাদের কারও কারও পরিবার আবার দাদা বা বাবার আমল থেকেই আওয়ামী লীগে জড়িত। অনেকের বাবাই ছিলেন সংসদ সদস্য। আবার অনেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতি করে উঠে এসেছেন। শেখ হাসিনা রক্তকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁরা বঙ্গবন্ধুকন্যার আস্থা বজায় রেখেই পথ চলেছেন।

কালের আলো/এসবি/এমএম