নৌকা-ধানের শীষের লড়াইয়ে বাবা-সন্তান!
প্রকাশিতঃ 9:13 pm | November 14, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে চলছে মনোনয়ন সংগ্রহের কাজ। বরাবরের মত এবারো মাঠে প্রতিপক্ষ হয়ে মনোনয়ন তুলেছেন একই পরিবারের সদস্যরা। বাবা-ছেলে বা বাবা-মেয়ে দুই পক্ষ থেকে মনোনয়ন তুলে লড়তে নির্বাচনে।
নাজমুল হুদা ও মেয়ে অন্তরা হুদা
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও দাপুটে রাজনীতিবীদ ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা এবার মনোনয়ন চাইছেন আওয়ামী লীগ থেকে। আর মেয়ে অন্তরা হুদা নির্বাচন করতে চান বিএনপি থেকে।
বিএনপির মনোনয়নে নাজমুল হুদা ঢাকা-১ (দোহার নবাবগঞ্জ) আসন থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে এবার তিনি ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান। এই আসন থেকে মনোনয়ন কিনেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলটির রাজনীতি করা নাজমুল হুদা বিএনপি থেকে বেরিয়ে গিয়ে তৃণমূল বিএনপি নামে একটি দল গঠন করেন। বাংলাদেশ জাতীয় জোট নামে একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তবে নিজের দল বাদ দিয়ে তিনি মনোনয়ন চেয়ে ফরম কিনেছেন আওয়ামী লীগ থেকে।
নাজমুল হুদা আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইলেও তার বড় মেয়ে অ্যাডভোকেট অন্তরা সেলিমা হুদা বুধবার তার প্রতিনিধির মাধ্যমে বিএনপির মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তার পক্ষে ফরম কেনেন দোহার থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন।
বাবা আওয়ামী লীগ আর মেয়ে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে অন্তরা হুদা বলেন, বাবা দল পরিবর্তন করলেও আমি বিএনপিতেই আছি। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে আমি সক্রিয়। দল মনোনয়ন দিলে বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আমি।
মনিরুল ইসলাম ইউসুফ ও ছেলে নিয়াজ মোর্শেদ এলিট
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও শিল্পপতি মনিরুল ইসলাম ইউসুফ চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসন থেকে ভোটে লড়তে বিএনপির মনিরুল দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তার ছেলে তরুণ ব্যবসায়ী নিয়াজ মোর্শেদ এলিট নিয়েছেন একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র।
মনিরুল ইসলাম ইউসুফ বলেন, ‘ভোটে বাপ-ছেলে কিংবা মা-মেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নতুন কোনো বিষয় নয়। আমাদের নেত্রী শামা ওবায়েদের মা আওয়ামী লীগ করেন। তার (এলিট) ইলেকশন সে করবে, আমারটা আমি করব। সে আমার ছেলে বলে বিএনপি’র একটা ভোট তার দিকে যাবে না। আবার আমি তার বাবা বলে আওয়ামী লীগের একটা ভোট বিএনপিতে আসবে না। নির্বাচনের মাঠে কোনো ছাড় নয়।’
নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, ‘রাজনীতিতে বাপ-ছেলে বলে কিছু নেই। যে যার আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করছে। আমার বাবার আদর্শের বাইরে গিয়েই আমি রাজনীতি করছি। আদর্শের প্রশ্নে কোনো ছাড় নয়। আদর্শের সঙ্গে কোনো কমপ্রোমাইজ নয়। ভোটের মাঠে যে কৌশলই আমাকে নিতে হবে, সেটা নেব।’
চট্টগ্রামভিত্তিক অটোমোবাইল শিল্প প্রতিষ্ঠান বড়তাকিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ইউসুফ। আর এলিট একই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পারিবারিক ব্যবসার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরে ঠিকাদারি পেশায় রয়েছেন এলিট।
মনিরুল ইসলাম ইউসুফ এক সময় জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতেন। বিএনপিতে যোগ দিয়ে গত প্রায় দুই বছর ধরে মিরসরাই উপজেলায় গণসংযোগ করছেন তিনি।
আর চট্টগ্রামের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত এলিট। তার দাবি, তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতেন। তবে গত এপ্রিলে হঠাৎ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য হওয়ার খবরে রাজনৈতিকভাবে আলোচনায় উঠে আসেন তিনি।
কালের আলো/এনএম