র‍্যাব ডিজির স্মরণের আলোয় বঙ্গবন্ধু

প্রকাশিতঃ 1:06 pm | March 26, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

মুজিবাদর্শে শাণিত বাংলার আকাশ-বাতাস জল-সমতল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ চির প্রবহমান থাকবে বলেই মনে করেন এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। অবিনশ্বর আদর্শ ও প্রেরণার বঙ্গবন্ধুকে তিনি সব সময় হৃদয়গ্রোথিত আবেগ-শ্রদ্ধায় তুলে এনেছেন। নিজের প্রতিটি বক্তব্যে স্মরণের আলোয় তিনি উপস্থাপন করেছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে।

র‌্যাব ডিজি মনে করেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তার সুযোগ্য কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বিশ্বসভায় একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল।’

২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর র‌্যাব সদর দপ্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের মধ্যে স্মার্ট এবং সাদাছড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে র‌্যাব ডিজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছেন। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের একটা বড় সময় তিনি কারাগারে কাটিয়েছেন। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি।’

‘আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তখনই গড়তে পারবো, যখন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারবো। এর আওতা থেকে প্রতিবন্ধীরাও বাদ নয়, বরং তাদেরকে শক্তি হিসেবে বিবেচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী’-যোগ করেন র‌্যাবের মহাপরিচালক।

২০২১ সালের ৭ মার্চ রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‌্যাব সদরদফতরে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে
র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯ মিনিটের যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা ছিল বাংলার প্রতিটি মানুষের মনের কথা। বাংলার লাখো-কোটি মানুষ সেদিনের রেসকোর্স ময়দানে সমবেত হয়েছিল তাদের মহান নেতার এই ভাষণ শোনার জন্য; দিক-নির্দেশনা নেয়ার জন্য। সেদিন ভাষণে তিনি যখন বলেছেন, কোর্ট-কাচারি চলবে না, দোকান-পাট বন্ধ থাকবে- তাই হয়েছিল। দোকানপাট সব বন্ধ ছিল। তিনি আরও বলেছিলেন, ব্যাংক খোলা থাকবে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে, আমার লোকজন যেন তাদের বেতন-ভাতা নিতে পারে। সেদিন তাই হয়েছিল।’

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রসঙ্গে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেই সময় যে অবস্থা ছিল, তার প্রতিটি ভাষণই এক একটা ইউনেস্কো হেরিটেজে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মতো।’

সেদিন তিনি আরও বলেন, ‘ওই দিন কোনো লিখিত আদেশের প্রয়োজন ছিল না। বঙ্গবন্ধু ওই দিন যে আদেশ দিয়েছিলেন, সারাদেশের মানুষ সেই আদেশ অনুসরণ করেছে। তার আহ্বানে সারাদেশের মানুষ শিহরিত হয়েছে, উজ্জীবিত হয়েছে। তিনি স্বাধীনতার যে আহ্বান করেছিলেন সারাদেশের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে ইপিআর, মিলিটারি, পুলিশসহ সকল বাহিনীতে যত বাঙালি ছিল, তারা একাত্ম হয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।’

চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সেদিন কেউ কিন্তু চিন্তা করেনি, আমাদের নেতা যেভাবে তার জীবনকে উৎসর্গ করে জীবনকে বাজি রেখে সব সময় এই দেশের জন্য, দেশের মুক্তিকামী মানুষের জন্য যে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি পুরো বাঙালি জাতিকে উজ্জীবিত করেছেন। এজন্যই দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধে বাংলাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। এতে মুষ্টিমেয় কিছু রাজাকার, আলবদর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল।

পৃথিবীর বিখ্যাত যেসব ভাষণ রয়েছে, সেগুলো জাতিসংঘের ইউনেস্কো দলিল হিসেবে সংরক্ষণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণটিও সংরক্ষিত হয়েছে। এই ভাষণটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের ইউনেস্কো তার গ্রহণযোগ্যতা ও সার্বজনীনতা আবারও প্রমাণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে র‌্যাব ডিজি বলেন, উন্নয়নের মহাসড়ক থেকে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এলডিসির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। আগামীতে ২০৩০ সালে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে বাংলাদেশ। ২০৪০ সালে আমাদের দেশ উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।

তিনি সেদিন আরও বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন, বাংলাদেশ খুব দ্রুত একটি স্বনির্ভর দেশ হিসেবে, উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। সে সময় এর জন্য সবাইকে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন।’

কালের আলো/.এসবিএমএম