কক্সবাজার পর্যটন ঘিরে আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখছেন মারমেইডের সোহাগ
প্রকাশিতঃ 3:51 pm | November 17, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:
আনিসুল হক চৌধুরী সোহাগ একজন তরুণ পর্যটন উদ্যোক্তা। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন কক্সবাজারের সেরা পর্যটন আকর্ষণ মারমেইড বিচ ও ইকো রিসোর্ট। কক্সবাজার পর্যটন ঘিরে তিনি দেখেন আকাশছোঁয়া স্বপ্ন।
কক্সবাজারকে জেনেভার মতো একটি বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দেখতেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে তাঁর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে চান কৃষকলীগের তৃণমূলের এই নেতা। স্বপ্ন বাস্তবায়নের দুয়ারে যেতে এখন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী এই তরুণ। জেলা সদর ও রামু আসনে জমা দিয়েছেন মনোনয়নপত্র।
সোহাগ তার আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরে বলেন, আগামী ১০ বছরের মধ্যে কক্সবাজারকে ১০ বিলিয়ন ডলারের পর্যটন শিল্পখাত হিসেবে পরিণত করতে চাই। যেখানে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান হবে। এখানকার প্রতিটি পরিবার হবে পর্যটন পরিবার।
কক্সবাজার-৩ (সদর ও রামু) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী আনিসুল হক তার স্বপ্ন জানিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২১ এর সঙ্গে সমন্বিত করে পর্যটন ও সংশ্লিষ্ট খাতে ২০২১ সালের মধ্যে ১০ লাখ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। ২০৪১ সালের মধ্যে প্রায় এক কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো।’
সুইজারল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার কারিগরি সহযোগিতায় কক্সবাজারে ‘বঙ্গবন্ধু পর্যটন বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করারও স্বপ্ন দেখেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয়, রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, টিউলিপ সিদ্দিকসহ জাতির জনকের পরিবারকে সরেজমিনে তার পর্যটন উদ্যোগ দেখানোর সৌভাগ্য হিসেবে উল্লেখ করছেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিধন্য কক্সবাজারের হিমছড়িতে সমুদ্র সৈকত ঘেঁষা পাহাড়ের চূড়ায় বঙ্গবন্ধুর সর্বোচ্চ ভাস্কর্য স্থাপন করবেন তিনি। এটি হবে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভাস্কর্য।
দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন নগরী গড়তে ১২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের অফুরান সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চান তিনি।
আন্তর্জাতিক সম্মেলন নগরী হবে কক্সবাজার- যে স্বপ্নের রুপকার ছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই স্বপ্ন বাস্তব করে দেখাতে সুযোগ চান তিনি।
সোহাগ বলেন, ‘কক্সবাজারে স্থাপিত হবে একটি আন্তর্জাতিক মানের বঙ্গবন্ধু জাদুঘর। আগামী দিনের সুনাগরিক গড়ার লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করে এমন একটি বিশেষ জাদুঘর নির্মাণই আমার লক্ষ্য।’
সোহাগের আরও লক্ষ্য-কক্সবাজারের প্রতিটি পরিবার হবে পর্যটন পরিবার। তাদের কোন না কোনভাবে যুক্ত করবেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে। এছাড়া দলের দীর্ঘদিনের ত্যাগী কর্মী ও তাদের সন্তানদের চাকরিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়ে মূল্যায়ন করতে চান তিনি।
কক্সবাজার মৎস শিল্পকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছাতে চান। মাদক ও মানবপাচার মুক্ত কক্সবাজার তার লক্ষ্য। প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যালয় নির্মাণের মাধ্যমে ঝরে পড়া শিশুদের স্কুলমুখী করারও স্বপ্ন দেখেন সোহাগ।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগমনে কক্সবাজারের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের যে ক্ষতি সাধন হয়েছে- বনায়ন ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণের মাধ্যমে তা পুনরুদ্ধার করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
কক্সবাজারের প্রতিটি জেলে পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চান। ডিজিটাল প্রযুক্তি তথা জিপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে জেলেদের জীবন-মানোন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়ার স্বপ্ন তার।
কক্সবাজারে প্রতি ১০ কিলোমিটার পর পর হাসপাতাল নির্মাণ করে উন্নত ও সহজলভ্য চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে চান।
কক্সবাজারের সব প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহ্যবাহী ভবনকে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে চান সোহাগ। এগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য উচ্চমানের অবকাশ যাপন কেন্দ্রে পরিণত করার উদ্যোগ নেবেন তিনি।
তার সঙ্গে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের প্রতীক হয়ে উঠবে কক্সবাজার-এমনটা মনে করেন তিনি।
সদর ও রামু মিলিয়ে আসনে এবারের এ প্রার্থী দীঘদিন থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, কক্সবাজার পৌরসভা ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে অর্থ ও শ্রম দিয়ে এগিয়ে আসছেন।
এ অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ও যোগাযোগ খাতের উন্নয়নের জন্যও সবসময় আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। পেঁচার দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়ন কৃষক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি তিনি। এছাড়া নয় নম্বর ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রকৃতির মত অনন্য করে সৈকতে তার গড়ে তোলা ‘মারমেইড ইকো টুরিজম লিমিটেড’ দেশের ভেতরেই বিদেশের ভ্রমন তৃপ্তি এনে দিয়েছে। এক খণ্ড সৈকতকে রুপান্তর করেছেন ভ্রমনপিপাসুদের শ্রেষ্ঠ গন্তব্যে।
২০০৪ সালে মাত্র আটজন কর্মী নিয়ে এ ‘মারমেইড ইকো টুরিজম লিমিটেড’ চালু করেছিলেন। ২০১৮ সালে সেখানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
সোহাগ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু পরিবার ছাড়াও সুযোগ হয়েছে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক সদস্যদের সহচর্য লাভের।
এছাড়া কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার-২ আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সারুল হক জুয়েল, খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাংবাদিক আব্দুল মাবুদ ও কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়, খুনিয়াপালংয়ের কষক লীগের সভাপতি সৈয়দ আলম সুলতান মেম্বারের মতো বহু ত্যাগী নেতা-কর্মীদের সহযোগিতা, সমর্থন ও সান্নিধ্য তাকে উৎসাহী করছে জানালেন কক্সবাজার সদর ও রামু আসনের আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী সোহাগ।
কালের আলো/ওএইচ