তাকসিম এ খানের হাত ধরে অন্যরকম হ্যাটট্রিকের পথে ঢাকা ওয়াসা
প্রকাশিতঃ 6:28 pm | July 04, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
সবার সেরা হওয়ার কৃতিত্ব প্রথম অর্জিত হয়েছিল ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে। ওই সময় ১০০ নম্বরের বিপরীতে ঢাকা ওয়াসার প্রাপ্ত নম্বরের সংখ্যা ছিল ৯৬.৬৬। ঠিক পরের বছর ৯৭.২০ নম্বর পেয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন। অত:পর ‘বেস্ট অব দি বেস্ট’ হওয়ার মন্ত্রে নিজেদের আরও শাণিত করে ২০২০-২১ অর্থ বছরে ফের সেরার মুকুট।
বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বাস্তবায়নে প্রথম স্থান দখল করে আবারো নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করেছে ঢাকা ওয়াসা। স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন ২০ টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এবার সবার সেরা তাঁরা।
দু’বার নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব জানান দেওয়ার পর ২০২১-২২ অর্থ বছরেও একই রকম সাফল্য ধরা দিলে অর্জন-অগ্রযাত্রায় নতুন একটি হ্যাটট্রিকই করবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের নেতৃত্বধীন স্মার্ট ম্যানেজমেন্টের চলে আসা সংস্থাটি।
ঢাকা ওয়াসা সংশ্লিষ্ট সবাই এজন্য তাকসিম এ খানকে ‘কৃতিত্ব’ দিলেও তিনি বলছেন ভিন্ন কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনায় ‘ঘুরে দাঁড়াও ঢাকা ওয়াসা’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব হওয়ায় ধারাবাহিক এই সাফল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
একই সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি সব সময় পাশে থেকে উৎসাহিত-উজ্জীবিত করায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম এমপি’র সরাসরি তত্ত্বাবধানকেও মোটা দাগে উপস্থাপন করেছেন ১৩ বছর যাবত ঢাকা ওয়াসাকে খোলনলচে পাল্টে দেওয়া এই এমডি।
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তাকসিম এ খান বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এই মূল্যায়ন ঢাকা ওয়াসার সার্বিক কাজের অগ্রগতির একটি বড় সূচক। এই পুরো কৃতিত্বই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি আমার ওপর সব সময় আস্থা রেখেছেন।

ঢাকা ওয়াসা আজ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে পুরো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ‘রোল মডেল’। ইতোমধ্যেই ওয়াসা রাজধানীবাসীর চাহিদার চেয়ে বেশি পানি উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘২০২০-২১অর্থবছরে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তির প্রতিবেদন ও প্রমানকসমূহ মূল্যায়নে ১০০ নম্বরের বিপরীতে ঢাকা ওয়াসা ৯৮.৫০ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। এর আগের বছর তৃতীয় ও তাঁর আগের বছর প্রথম হয়েছিলাম আমরা। সামনের অর্থবছরেও আমরা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে চাই।
এই মূল্যায়ন ঢাকা ওয়াসার সেবা কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হচ্ছে। ঢাকা ওয়াসার সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নিরলসভাবে নিজেদের কর্মসম্পাদনের জন্যও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই’-যোগ করেন ঢাকা ওয়াসার এমডি।
২০০৯ সালে তাকসিম এ খানকে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। পরে তার মেয়াদ বাড়ানো হয় ছয় দফা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ওপরেই পূর্ণ আস্থা রাখেন। ফলে তাকে ষষ্ঠবারের মতোন আরও তিন বছরের জন্য তাকে নিয়োগ দেয় সরকার।
কাজের মাধ্যমেই নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। অঙ্গীকার করেছিলেন রাজধানীর এককজন মানুষও পানি সেবার বাইরে থাকবে না। প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন। রাজধানীর পানি সরবরাহের নেটওয়ার্ক পদ্ধতি সাজিয়েছেন নতুন করে। ডিস্ট্রিক্ট মিটার এরিয়া বা ডিএমএ নামে একটি নেটওয়ার্ক পদ্ধতির আওতায় এনেছেন ওয়াসাকে।
ঢাকাকে ১৪৫টি ক্লাস্টারে (ডিস্ট্রিক্ট মিটার এরিয়া বা ডিএমএ) ভাগ করেছেন। ইতোমধ্যে বেশিরভাগের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ডিএমএর কাজ ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ হবে। এই কাজ শেষ হলেই পানির মান নিয়ে আর কোন প্রশ্ন থাকবে না। একেকটি ভাগে পানি ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক করা হয়েছে।
প্রতিটি নেটওয়ার্ক অন্যজনের থেকে আলাদা ও স্বয়ংসম্পূর্ণ। এতে ২৪ ঘণ্টা এই এলাকাগুলোয় পানি থাকে। এক জায়গা থেকে নোংরা পানি অন্য জায়গায় যাওয়ার সুযোগ নেই। এটা স্মার্ট পানি ব্যবস্থাপনার একটি অংশ। এখন আমরা বলতে পারি ৯০ ভাগ পানি স্বচ্ছ থাকে। ভবিষ্যতে এ স্বচ্ছতা ১০০ ভাগে নিয়ে যেতে চাই, বলছিলেন তাকসিম এ খান।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২৮ জুন) বিকেলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের কাছ থেকে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে প্রথম স্থান অধিকারের পুরস্কারের স্মারক ও সনদ গ্রহণ করেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী তাকসিম এ খান। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এসবি/এএএম