সেই কুশীলবদের ‘টার্গেট’ ছিল ‘মাইনাস শেখ হাসিনা’
প্রকাশিতঃ 10:06 am | July 16, 2022
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
সুদূরপ্রসারী এক আয়োজন। ঘৃণ্য আরেকটি ষড়যন্ত্র। দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে পুরোপুরি নির্বাসনে পাঠাতেই মঞ্চস্থ করা হয়েছিল কথিত চাঁদাবাজির নাটক। দেশ-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের অঙ্গুলী হেলনে প্রহসন ও বানোয়াট মামলায় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেফতার করা হয়েছিল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে।
আরও পড়ুন: অফুরান দেশপ্রেমেই অনন্য উচ্চতায় মুজিব কন্যা
বাঙালির আশা-ভাষার আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিভিন্ন অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। ফলে দেশকে পুরোপুরি রাজনীতি শুন্য করতেই সেদিন শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের এক হীন কূটকৌশল বাস্তবায়নে কলকাঠি নেড়েছিলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দিন আহমেদ, আইন ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) এমএ মতিন, দুদক চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী, ডিজিএফআইয়ের দুই কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার ফজলুল বারী ও মেজর জেনারেল এ টি এম আমিন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস, যেদিন অবরুদ্ধ হয়েছিল গণতন্ত্র
সেই সময়েই স্পষ্ট হয়ে উঠে মাইনাস টু নয় ‘মাইনাস শেখ হাসিনা’- তৃতীয় শক্তির উত্থানের প্রত্যাশা ছিল এই কুশীলবদের। এরপর বঙ্গবন্ধু কন্যার মুক্তির দাবিতে দেশের সর্বস্তরের মানুষ একট্টা হয়ে উঠে। ঢাকা শহরের ২৫ লাখ মানুষ তাঁর মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর করেছিল।
শেখ হাসিনাকে রাখা হয়েছিল জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত বিশেষ সাব-জেলে। সেখানে খাবারে ক্রমাগত পয়জন মিশিয়ে তাকে মেরে ফেলার টার্গেট করা হয়। স্লো পয়জনিংয়ের কারণে বন্দি শেখ হাসিনা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সবই ছিল তাকে এদেশের রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জঘণ্য ষড়যন্ত্র।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার আবেগময় সেই চিঠিই তরান্বিত করে মুক্তি আন্দোলনকে!
শেখ হাসিনার সাব-জেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের উদ্বেগ, গ্রেফতারের সংবাদ শুনে দেশের বিভিন্ন স্থানে চারজনের মৃত্যুবরণ, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের উৎকণ্ঠা বদলে দিয়েছিল রাজনৈতিক দৃশ্যপট। কারণ তখন আদালতের চৌকাঠে শেখ হাসিনা ছিলেন সাহসী ও দৃঢ়চেতা; দেশ ও মানুষের জন্য উৎকণ্ঠিত; সত্যকথা উচ্চারণে বড় বেশি সপ্রতিভ ছিলেন আজকের হ্যাট্টিক প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশবাসী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা জেগে উঠলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ষড়যন্ত্র মারাত্মক প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্র প্রত্যাশী দেশবাসীর ক্রমাগত প্রতিরোধ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুকন্যার আপোসহীন ও দৃঢ় মনোভাব এবং দেশবাসীর অনড় দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ১১ জুন দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগ ও নানামুখী ষড়যন্ত্রের পর তৎকালীন অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরায় ফিরে আসে। যুগপৎভাবে বিকাশ ঘটে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের।
কালের আলো/জিকেএম/এমএএএমকে