পুলিশ নীরবে-সরবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে : আইজিপি

প্রকাশিতঃ 6:31 pm | July 24, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

পুলিশ নীরবে-সরবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)।

তিনি বলেছেন, আমাদের সব সময় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। জঙ্গিবাদের থ্রেট এখনো যায়নি। সারা বিশ্ব থেকে এ থ্রেট না যাওয়া পর্যন্ত আমাদের দেশেও থ্রেট থাকবে।

রোববার (২৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ‘ইসলামের দৃষ্টিতে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব আইজিপি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই বলেছিলো জঙ্গিবাদ থেকে বাংলাদেশ কখনো বেরোতে পারবে না। আল্লাহর রহমত আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যেই জঙ্গিবাদকে নির্মূল করতে পেরেছি।

আইজিপি বলেন, আমাদের ইসলামি চিন্তাবিদ, মাওলানা, শায়খ যারা আছেন তারা টেররিজমের বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলেন না। গ্রামাঞ্চলে শীতকালে যখন ওয়াজ মাহফিল হয়, তারা সেখানে অনেক ধর্মীয় কথাবার্তা বলেন, মানুষকে ধর্মীয় অ্যাডভাইজ করেন, ভালো পথে চলার কথা বলেন, ইহকাল-পরকাল নিয়ে বলেন। আরেক গ্রুপ আছে যারা রাজনীতি করেন, তারা ওয়াজ মাহফিলে ধর্মীয় কথা বলেন, পাশাপাশি পলিটিকসও করেন। কিন্তু এই টেররিজমের বিরুদ্ধে কোনো কথা হয় না।

তিনি বলেন, ইসলামকে ব্যবহার করে নিরীহ মানুষকে গণহত্যা করা হয়, এ বিষয় নিয়ে তাদের কথা বলতে খুব একটা আগ্রহ দেখা যায় না। এই কারণ আমার অজানা। বিশ্বব্যাপী ইসলামকে জঙ্গি মতবাদ আখ্যা দিয়ে বিরাট অপপ্রচার রয়েছে-যে এই ধর্মটাই হচ্ছে জঙ্গি। এমন বাস্তবতায় আমাদের ইসলামি চিন্তাবিদদের এ নিয়ে কথা বলতে হবে। আলেমরা কেন এ নিয়ে কোনো কথা বলেন না এটা আমার প্রশ্ন!

ড. বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, ‘ইসলামি গবেষকরা কোরআনের ১৬৪টি আয়াতকে আলাদা করেছেন, যেখানে জিহাদের কথা বলা হয়েছে। আর এই ১৬৪ আয়াতকেই ব্যবহার করে আইএস, আইসিস, আল-কায়েদাসহ সকল জঙ্গি সম্প্রদায় মানুষ হত্যার মতো জঘন্য কাজ করে যাচ্ছে।

‘জিহাদ নিয়ে ১৬৪ আয়াতের তর্জমাসহ সঠিক ব্যাখ্যা করে সাধারণদের জিহাদ আর জঙ্গিবাদের পার্থক্য বুঝিয়ে দেবার দায়িত্ব ইসলামিক স্কলারদের, পুলিশ বা অন্য কারও নয়।’

ইসলামিক চিন্তাবিদরা চুপ থাকায় ইসলামের দিকনির্দেশনা নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে উল্লেখ করেন আইজপি। তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল আমাদের ইসলাম সম্পর্কে জানতে হলে মাওলানা বা পরিবারের মুরব্বিদের ওপর নির্ভর করতে হতো, কারণ তখন ইসলাম নিয়ে খুব একটা বইও ছিল না। যে কয়টা পাওয়া যেত তাও ছিল আরবি অথবা ফারসি ভাষায়। কিন্তু স্বাধীনতার পর অনেক বই বাজারে এসেছে, পাশাপাশি ইউটিউবে এখন অনেক ইসলামি কনটেন্ট পাওয়া যায়।

‘কিন্তু এখানেও একটি সমস্যা তৈরি হলো যে আমরা যুগ যুগ ধরে কোনো একটি বিষয়ে ইসলামের অনুশাসন হিসেবে যেসব নিয়ম পালন করে আসছি, আজকে ইউটিউবে একজন স্কলার বলছেন এটা ভুল, তিনি আবার অন্য নিয়মের কথা বলছেন। তাহলে আমরা এতদিন যে নিয়ম মেনে এসেছি সেটা ভুল- এর দায় কে নেবেন?’

পুলিশপ্রধান বলেন, ‘এর মূল কারণ হলো সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনো মডারেটর নেই, ইসলামি স্কলারদের মধ্য থেকে কেউ বলার নেই যে আপনি ভুল কথা বলছেন।’

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পরে আমাদের দেশের আ্যম্বাসিগুলো পরিবার ছাড়া আ্যম্বাসি ঘোষণা করা হলো। এরপর প্রতি সপ্তাহে ঘোষণা আসতে থাকলো বাংলাদেশে কারা কারা আসতে পারবে না। বিমানের মাধ্যমে তখন অনেক দেশ কার্গো বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সকলের সহযোগিতায় আমরা যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা হ্যান্ডেল করতে না পারতাম তাহলে দেশের অনেক ক্ষতি হয়ে যেত।

কালের আলো/বিএস/এমএম