গ্রাম পর্যায়ে গড়ে তোলা হবে তিনশ ‘শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার’ : পলক
প্রকাশিতঃ 8:59 pm | October 12, 2022
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
গ্রাম পর্যায়ে তিনশ ‘শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার’ গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বুধবার (১২ অক্টোবর) শেখ রাসেল দিবস-২০২২ উপলক্ষে ঢাকার আগারগাঁওয়ের আইসিটি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ তথ্য জানান।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশে ১৩ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে সারাদেশে আরও ৫ হাজার নতুন শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তিনশ শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার এর উদ্বোধন করবেন।
তিনি বলেন, আজকের শিশুরা ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেদেরকে দক্ষ করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সবরকম সুবিধা পাবে। উন্নত প্রযুক্তির সমন্বয়ে একবারে গ্রাম পর্যায়ে এই তিনশটি শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার গোড়ে তোলা হবে।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আমরা যেসব দেশকে সভ্য বলি সেইসব দেশে পঁচাত্তরের ঘাতকরা পালিয়ে আছে। ওইসব দেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে। তারা তাদের লালন-পালন করছে। তাদেরকে আমরা কীভাবে সভ্য বলি? তাদের কাছে সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে খুনিদের ফিরিয়ে আনতে। তাদের ফিরিয়ে দিয়ে শাস্তি কার্যকর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে কথাসাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন, আইসিটি প্রমোশন ও গবেষণা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং মহাপরিচালক ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের খায়রুল আমিন, এটুআই প্রকল্পের পরিচালক যুগ্ম সচিব ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহীদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধুর মতো গণমানুষের নেতা হয়ে উঠত। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেত। শেখ রাসেল স্কুলে তার টিফিন সব বন্ধুদের খাওয়াতো। তার মনে মমত্ববোধের জায়গা ছিল অনেক।
তিনি বলেন, আমি ‘শেখ রাসেলের জন্য অপেক্ষা’ নামে একটি উপন্যাস লিখেছি। সেটার উপর একটি সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মিত হবে। আমার চোখে শেখ রাসেল একজন যোদ্ধা। তার দুইটা ছবিতে সেই কথা ফুটে উঠেছে।
অতিরিক্ত সচিব খায়রুল আমিন বলেন, শেখ রাসেল দুরন্ত ও প্রাণবন্ত শিশু ছিল। সেই শিশুর মতো আর কোনো শিশুর ভাগ্যে যেন এমন নির্মম ঘটনা আর না ঘটে। শেখ রাসেলের স্বপ্ন যেন সকল শিশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সেই চেষ্টায় করতে হবে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে ১৮ অক্টোবর সকাল ৬টায় বনানী কবরস্থানে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হবে।
সকাল সাড়ে ছয়টায় স্ব স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থা/প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।
এরপর সকাল সাড়ে সাতটায় মিনিটে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে পরিকল্পনা কমিশনের সামনে হতে বিআইসিসি প্রাঙ্গন পর্যন্ত সকলের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) হল অব ফেম-এ শেখ রাসেল দিবসের উদ্বোধন করবেন ও শেখ রাসেল পদক প্রদান করবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
দিবসটি উপলক্ষে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, হল অব ফেম-এ দুপুর ২:৩০ টায় ‘শেখ রাসেলের নির্মম হত্যাকান্ড ন্যায় বিচার, শান্তি ও প্রগতির পথে কালো অধ্যায়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বুদ্ধিজীবীগণ আলোচক হিসেবে অংশ্রগ্রহণ করবেন।
সন্ধ্যা ৬টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, হল অব ফেম-এ ‘কনসার্ট ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস’ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও জাতীয় অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শেখ রাসেলের উপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্রসমূহ প্রদর্শিত হবে। শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠান এবং চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।
এছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র ও ডিসপ্লে প্রকাশিত হবে। অন্যদিকে দেশের সকল বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
এছাড়াও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ চিত্রাংকন, দাবা, জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট, সাংস্কৃতিক ও জাতীয় স্কুল ব্যাডমিন্টন আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
উল্লেখ্য, ১৬ অক্টোবর রাত ৯টায় শেখ রাসেল দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে “Tragic End of Sheikh Russel: A Shame In Human History” শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানের শেষে শেখ রাসেলের উপর আরাভী বিনতে শফিক এর লেখা ‘অদম্য শেখ হাসিনা’ নামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মোড়ক উন্মোচন করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। এরপর শেখ রাসেল দিবসের লোগো উন্মোচন করা হয়। লোগো উন্মোচন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সেইসঙ্গে তিনি ‘অদম্য শেখ রাসেল’ মোবাইল অ্যাপের উদ্বোধন করেন।
কালের আলো/এসবি/এমএম