কতিপয় দুর্নীতিবাজদের জন্য দেশে সংকট তৈরি হচ্ছে : হাইকোর্ট
প্রকাশিতঃ 3:46 pm | November 03, 2022
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
কতিপয় দুর্নীতিবাজ লোকের কারণে দেশে সংকট তৈরি হচ্ছে বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। ই-অরেঞ্জের প্রতারণার বিষয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতিবেদনটি যথাযথ নয় উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন। বিএফআইইউ’র পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
শুনানির শুরুতে আদালত বিএফআইইউ’র আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা প্রতিবেদনে দেখালেন, তারা অনেক টাকা উত্তোলন করেছেন। তাহলে সেই টাকা কোথায় গেলো? তার প্রকৃত সুবিধাভোগী কারা? ওই টাকা কোথায় ব্যবহার হয়েছে? তা তো সুনির্দিষ্ট করে বলা নেই। আপনাদের এই প্রতিবেদনে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এই প্রতিবেদনে প্রকৃত চিত্র উঠে আসেনি। এটি খাপছাড়া।
আর পুলিশের রিপোর্টের বিষয়ে আদালত বলেন, তাদের রিপোর্টে পরিষ্কার করে, সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। আর দুদকের রিপোর্টে তারা পাশ কাটিয়ে গেছে।
এ সময় রিটকারীদের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম আদালতকে বলেন, রিপোর্টে সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে আসেনি, এজন্য পূর্ণাঙ্গ করে একটি রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশনা চাচ্ছি। একটা ভুঁইফোর প্রতিষ্ঠানের নামে এত টাকা লেনদেন হচ্ছে, এই টাকা কোথায় যাচ্ছে? কী কাজে ব্যবহার হচ্ছে? এর ভ্যাট ট্যাক্স দিচ্ছে কি না? সেটা তো এনবিআরের দেখা উচিত। আর বিএফআইইউর কাজটা কী?
তখন আদালত বলেন, এ সমস্ত লোকের কারণেই ঝামেলা হচ্ছে। দেশে কত উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গে গিয়ে দেখেছি, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ রাস্তাঘাটের কি উন্নয়ন হয়েছে! দেখলে মনে হবে না দেশের মধ্যে আছি। কতিপয় দুর্নীতিবাজ লোকের কারণে এখন সংকট তৈরি হচ্ছে। আমরা কাজ করছি জনগণের জন্য। দেশ সোনার বাংলা হোক সেটা আমরা চাই।
পরে আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৪ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করে দেন। এ সময়ের মধ্যে নতুন করে বিএফআইইউ, দুদক, পুলিশ প্রধানকে রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযোগের বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করে তাদের যথাযথভাবে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শত শত কোটি টাকার যে লেনদেন হয়েছে, তার থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে কিনা তা জানাতে এনবিআরের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়াও ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া মেহজাবীনের ভাই বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে ই-অরেঞ্জ থেকে ৭৭ কোটি টাকার পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. আফজাল হোসেন, মো. আরাফাত আলী, মো. তরিকুল আলম, সাকিবুল ইসলাম, রানা খান ও মো. হাবিবুল্লাহ জাহিদ নামের ছয়জন গ্রাহক চলতি বছরের মার্চ মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
কালের আলো/এবি/এমএম