‘একজন শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে ১০ লাখ টাকাও নিয়েছে ভিকারুননিসা’
প্রকাশিতঃ 9:08 pm | December 05, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার পরে অভিভাবকরা নানা অভিযোগ করছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
মন্ত্রী বলেন, নিয়মের বাইরে তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়েছেন। এখানে নির্দিষ্ট সংখ্যক সিট আছে। সেটা না মেনে তারা অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে। আমরা জেনেছি, পুর্বে সেখানে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে ১০ লাখ টাকাও নেয়া হত। তারা যে পরিমান ছাত্র ভর্তির অনুমোদন পায় তার চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শাখা খোলার অনুমোদন দেই না অথচ তারা শাখা খুলে ফেলে। এই তথ্যগুলো কেউ বলে না। মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা অনেক তথ্য পাই কিন্তু কোন গার্ডিয়ান বা শিক্ষার্থী অভিযোগ করতে চান না, তারা ভয় পান। ফলে এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আমরা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পেয়েছি।
বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
তিনি বলেছেন, ঘটনার পর থেকে আমি অসংখ্য টেলিফোন পাচ্ছি, তারা (অভিভাবক) তাদের ক্ষোভের কথা জানাচ্ছেন। আমি বলেছি, এ বিষয়গুলো আগে বলেননি কেন? অনেক ক্ষমতাবান ব্যক্তি অথচ তারা আগে বলেননি। তারা বলেছে, আমরা সাহস পাইনি, কারণ আমরা বললে আমাদের মেয়েকে শাসাতে পারে, সেই কারণে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত, ব্যথিত এবং খুবই কষ্ট পেয়েছি। ঘটনার দিন আমরা দুপুরে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা কমিটি গঠন করে তদন্ত করবো। ফলে ঘটনার দিন সন্ধার পরই আমরা কমিটি গঠন করেছি।
মন্ত্রী বলেন, কমিটিকে তিনদিন সময় দিয়েছিলাম যাতে বিষয়টি দ্রুত বিস্তারিত জানতে পারি। কমিটি গঠনের পর থেকে কাজ করে আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন পেয়েছি। এই প্রতিবেদনে দোষি ব্যাক্তিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানে যেসকল অনিয়ম এবং অসঙ্গতিগুলো উঠে এসেছে। সেখানে অভিভাবকরা নানা ধরণের অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা ওই ঘটনার জন্য শুধুমাত্র তিনজন দায়ি ব্যাক্তিকে চিহ্নিত করেছি তা নয়, বরং আমরা সেই সঙ্গে অনেকগুলো অনিয়ম এবং অসঙ্গতি চিহ্নিত করছি। যে বিষয়গুলো অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পেয়েছি। ওখানে বহুদিন ধরে অধ্যক্ষ নেই, একজন ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বারবার তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও তারা নিয়ম না মেনে অধ্যক্ষ নিয়োগের ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে এটাও একটি বড় ধরণের অনিয়ম।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে শান্তি নগরের নিজ বাসা থেকে অরিত্রি অধিকারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, অরিত্রির বিরুদ্ধে ফাইনাল পরীক্ষায় নকলের অভিযোগ তুলে তার বাবাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরে অরিত্রির বাবাকে জানানো হয়, তার মেয়েকে টিসি দেয়া হবে। এছাড়াও তার বাবাবে নানা ধরণের কথা শুনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এ সময় প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল ও ভাইস-প্রিন্সিপাল অরিত্রির সামনে তার বাবাকে অপমান করেন। বাবার এই অপমান সহ্য করতে না পেরে অরিত্রি আত্মহত্যা করে বলে পরিবারের দাবি।
কালের আলো/এমএইচএ