বিজয়ের গৌরবে উৎসবের রঙে বিজিবি স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার

প্রকাশিতঃ 5:34 am | December 17, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

বাঙালির জাতীয় জীবনে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল ও বিজয়ের দিন। বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে লাল-সবুজের বিজয় নিশান। দেশকে শত্রুমুক্ত করে বিজয় ছিনিয়ে এনে বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার অবিস্মরণীয় দিনে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) উৎসবের রঙ লেগেছিল সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রতিটি সদস্যের ভুবনে। শোক আর রক্তের ঋণ শোধ করার গর্ব নিয়ে উজ্জীবিত বিজিবি দিবসটি উদযাপন করে অন্য রকম অনুভূতি নিয়ে। ত্রিশ লাখ শহীদকে বিনম্র চিত্তে জানিয়ে দেয়-‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’।

আবার আপন সত্তাকে খুঁজে পাওয়ার দিনে, জীবন দিয়ে যুদ্ধ করে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ’র নির্দেশে বিজিবি সদর দপ্তরসহ বাহিনীর সব রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটসমূহে শ্রদ্ধাবনতচিত্তে গভীর শোক-শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করা হয় বাঙালি জাতির সূর্য সন্তানদের।

এদিন বাদ জুম্মা বাহিনীটির সব মসজিদে বিজয়ের মহানায়ক, ইতিহাসে চির অম্লান ও ভাস্বর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৭৫’র ১৫ আগস্ট কালো রাতে নিহত শহীদদের রূহের মাগফেরাত ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার শান্তি, জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও বিজিবির দুর্বার অগ্রগতি কামনা করে করা হয়েছে বিশেষ মোনাজাত।

অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধ ধারণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ও উচ্চারিত হয়েছে ডিজি মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদের নেতৃত্বাধীন সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার দেশপ্রেমিক বাহিনীটির প্রতিটি সদস্যের কন্ঠে কন্ঠে।

বিজয় দিবসের প্রত্যুষে সকাল সাড়ে ৬ টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্মৃতিস্তম্ভের বেদিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। পরে বিজিবি ডিজি সকাল ৮ টায় পিলখানাস্থ ‘সীমান্ত গৌরব’-এ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বিজিবি’র একটি চৌকস দল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিজিবি সদর দপ্তরসহ গোটা দেশে বিজিবি’র প্রতিটি ইউনিটের গেট ও গেট সংলগ্ন সড়ক, আশপাশের এলাকা এবং স্থাপনাসমূহে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যভিত্তিক বাহারি রঙের ব্যানার-ফেস্টুনে সাজানো হয়। এসবে যেন প্রতিফলিত হয় বিজয়ের প্রতিচ্ছবি। বিশ্ব মানচিত্রে পরাভব না মানা এক বিজয়ী জাতির আবির্ভাবের দিনে পিলখানাসহ বিজিবি’র সব ইউনিটে প্রীতিভোজের আয়োজন এবং বিজিবি সদস্য ও তাদের পরিবারসহ বিজিবি’র স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজনও করা হয়।

শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরের জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকেই ছুটে আসেন জাদুঘরে। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নানা ঘটনার ছবি ও দলিলে চোখ রাখেন। লাল-সবুজের সাজে শিশু-কিশোরদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় বাবা-মায়েদের উপস্থিতি নজর কাড়ে। বিজয়ের আনন্দ পৌঁছে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায়। আণবিক শক্তি কমিশনের বিপরীত পাশে সেখানে বিকেলে বিজিবি বাদকদলের অনবদ্য পরিবেশনা অনেকেই উপভোগ করেন বিজয় উন্মাদনায়।

বিজিবি সদর দপ্তর সূত্র জানায়, আনন্দের, অহঙ্কারের, আত্মমর্যাদায় গৌরবান্বিত হওয়ার দিনে বিজিবি’র উদ্যোগে যশোরের বেনাপোল, পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর সংলগ্ন আইসিপিতে বিজিবি-বিএসএফ জমকালো ‘জয়েন্ট রিট্রিট সিরিমনি’ পেয়েছে নতুন মাত্রা। পাশাপাশি রক্তস্নাত বিজয়ের ৫১ তম বার্ষিকীতে মানবিকতার উজ্জ্বল আভায় নিজেদের উপস্থাপন করে বিজিবি। সারাদেশের গরিব-দুস্থদের ১০ হাজার কম্বল বিতরণ ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাও দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। মহান বিজয় দিবসে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) বিভিন্ন এলাকায় বিজিবির কর্মসূচি উঠে এসেছে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও বিভিন্ন জেলার প্রতিবেদকদের পাঠানো খবরে।

আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর নবাবগঞ্জ পার্কে প্রায় দুই হাজার গরিব ও অসহায় মানুষকে শীতবস্ত্র ও চিকিৎসা সেবা দিয়েছে বিজিবি। বিজিবির কম্বল স্বস্তির উপলক্ষ তৈরি করেছে নবাবগঞ্জের মনোয়ার হোসেন বা কামরাঙ্গীরচরের সেলিনা বেগমদের। এই প্রতিবেদককে মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অভাবের সংসার। চরম কঠিন সময় যাচ্ছে। এই সময় বিজিবির কম্বল শীতে কষ্ট দূর করবে।’

এদিন শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানেরও আয়োজন করে বিজিবি। চিকিৎসক দেখিয়ে চাহিদাপত্র অনুযায়ী অনেকে পেয়েছেন ওষুধ।

চিকিৎসা নিতে আসা অসহায় রবিউল ফ্রি চিকিৎসা পেয়ে বেজায় খুশি। নিজেই বলছিলেন, ‘শ্বাসকষ্ট আমায় ছাড়ে না। সবসময় ডাক্তার দেখানোর সামর্থ্য নাই। বিজিবি সেই সুযোগ করে দিলো। ওষুধও দিলো। তাদের (বিজিবি) জন্য অনেক দোয়া।’

বিজিবির ঢাকা ব্যাটালিয়ন-৫’র উপ-অধিনায়ক মেজর মো. জাকারিয়া আজম বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নবাবগঞ্জ পার্কে দুই হাজার গরিব-দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আর সারাদেশে বিজিবির পক্ষ থেকে প্রায় ১০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এসবের পাশাপাশি বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।’

রাঙামাটি প্রতিবেদক জানান, কাপ্তাই হ্রদের বুকে চির নিদ্রায় শায়িত বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধিতে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। রাঙামাটির নানিয়ারচরের বুড়িঘাটে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিজিবি রাঙামাটি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তরিকুল ইসলাম।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাঙামাটি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের একজন মুন্সী আব্দুর রউফ। তিনি নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে শুয়ে আছেন। দেশকে শত্রুর হাত থেকে মুক্ত করতে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ যুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের এক কোম্পানি সৈন্যের সঙ্গে ল্যান্স নায়েক মুন্সী আবদুর রউফও ছুটে আসেন পার্বত্য চট্টগ্রামে। এই বুড়িঘাটের চৌকিতে ন্যস্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। মুন্সী আব্দুর রউফের অসীম সাহস ও বীরত্বপূর্ণ পদক্ষেপের ফলে শত্রুবাহিনী মহালছড়িতে মুক্তিবাহিনীর মূল অবস্থানের দিকে অগ্রসর হতে পারেনি। তিনি তার জীবন উৎসর্গ করে কর্তব্যপরায়ণতা ও দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।’

যশোর প্রতিবেদক জানান, যশোরের বেনাপোল চেকপোস্টে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) শুভেচ্ছা জানিয়ে মিষ্টি উপহার দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে সীমান্তের শূন্যরেখার গেটে ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে ১৪৫ বিএসএফকে মিষ্টির চারটি প্যাকেট উপহার দেওয়া হয়।

বিজিবির বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের সুবেদার নজরুল ইসলাম ভারতের পেট্রাপোল বিএসএফ ক্যাম্পের কমান্ডার এস আই শ্রী পাওয়ানের হাতে মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেন। এ সময় বিজয় দিবসের শুভেচ্ছাসহ কুশল বিনিময় করেন উভয় বাহিনীর সদস্যরা।

যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী জানান, সীমান্তে দায়িত্বরত দুই বাহিনী তাদের মাঝে বিরাজমান সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে বেনাপোল সীমান্তে বিভিন্ন জাতীয় ও ধর্মীয় উৎসবগুলোতে একে অপরকে মিষ্টিসহ বিভিন্ন উপহার দিয়ে থাকে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিবেদক জানান, এদিন বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চেকপোস্টে বিজিবি-বিএসএফ যৌথ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) একে অপরকে ফুল, ফল, গাছের চারা ও মিষ্টি উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করে।

সামরিক নিয়মে এক কমান্ডে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সম্মান জানান নিজ নিজ দেশের জাতীয় পতাকাকে। এ সময় চৌকস গার্ড দল সশস্ত্র সালাম প্রদান করে। সীমান্তের দুই প্রান্তে উপস্থিত শত শত দর্শনার্থী জাতীয় পতাকাকে সম্মান দেখান। তারা দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন।

যৌথ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে থেকে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির সরাইল রিজিওয়নের ডেপুটি রিজিয়ন কমান্ডার কর্ণেল কাজী শামীম ও ৬০ বিজিবি ব্যাটা. অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিক হাসান উল্লাহ। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, ১২০ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন (ফটিকছড়ি)-এর অধিনায়ক রাথনেশ কুমার, বিএসএফ লঙ্কা মোড়া কোম্পানি কমান্ডার এসআই বিনদ সিং প্রমুখ।

দিনাজপুর প্রতিবেদক জানান, দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত চেকপোস্টে মিষ্টি উপহার দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছে বিজিবি। এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় চেকপোস্ট গেটের শূন্যরেখায় এই মিষ্টি বিনিময় করা হয়।

এ সময় বিজিবির হিলি আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার মাহবুবুর রহমান ভারতের হিলি বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডার ইন্সপেক্টর সুরেস চন্দ্র হাতে মিষ্টি ও উপহার তুলে দেন। বিএসএফের পক্ষ থেকেও বিজিবিকে মিষ্টি উপহার দিয়ে বিজয়ক দিবসের শুভেচ্ছা জানানো হয়। তারা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় সেখানে বিজিবি-বিএসএফের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

হিলি আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার মাহবুবুর রহমান বলেন, সীমান্তে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি বজায় রেখে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে দুই দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসবগুলোতে বিজিবি ও বিএসএফ একে অপরকে মিষ্টি ও বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকে।

জয়পুরহাট প্রতিবেদক জানান, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীকে (বিএসএফ) মিষ্টি উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে বিজিবি। এদিন দুপুরে বিজিবির কয়া ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার খন্দকার রায়হান আলী ভারতের বালুপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডার সুবাস চন্দ্রক মিষ্টি উপহার দেয়। এ সময় বিজিবি-বিএসএফ উভয় বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজিবির কয়া ক্যাম্প কমান্ডার খন্দকার রায়হান আলী বলেন, ‘সীমান্তে দু’বাহিনীর মধ্যে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখতে দুই দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসবে আমরা পরস্পর মিষ্টি, ফুল উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকি। তারই ধারাবাহিকতায় বিজয় দিবসে বিজিবির পক্ষে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার দেয়া হয়।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিবেদক জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩ বিজিবি ব্যাটলিয়ন ক্যাম্পে অসহায় দরিদ্র খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষদের মাঝে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ ও চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়।

এ সময় ৪০০ জন গরিব ও দুঃস্থ শীতার্তের মাঝে কম্বল এবং বিভিন্ন বয়সী ২৫০ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান ও ওষুধ বিতরণ করা হয়। এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মো. নাহিদ হোসেন।

পঞ্চগড় প্রতিবেদক জানান, বিজয়ের একান্ন পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে বিজিবি-বিএসএফের যৌথ ‘রিট্রিট সেরিমনি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন বিকেলে বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা ও ভারতের ফুলবাড়ী সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দু’দেশের বাহিনীর সদস্যরা চমকপ্রদ, মনোমুগ্ধকর ও জাঁকজমকপূর্ণ যৌথ প্যারেড প্রদর্শন করে। পরে দু’দেশের জাতীয় পতাকা একসঙ্গে নামিয়ে প্যারেড শেষ করা হয়। এই উপলক্ষ্যে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট এলাকা নানা রঙের বেলুন ও পতাকায় সাজানো হয়।

বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে বিজিবি-বিএসএফ ‘রিট্রিট সেরিমনিতে দু’দেশের বিপুল সংখ্যক সাধারণ দর্শনার্থী বিশেষ এই ‘রিট্রিট প্যারেড’ উপভোগ করেন। সবার মধ্যে ছিল আনন্দমুখর পরিবেশ। উভয় দেশের জাতীয় পতাকা নামানোর সময় সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানান। বিশেষ দিনে বিশেষ এই রিট্রিট প্যারেডকে স্মরণে রাখতে অনেককে সেলফি তুলতে দেখা গেছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রংপুর উত্তর পশ্চিম রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ বি এম নওরোজ এহসান ও বিএসএফের নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার আইজি শ্রী অজয় সিং উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এমএএএমকে