আমৃত্যু রেশন সুবিধার আওতায় ফায়ার সার্ভিস, উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে অপতৎপরতার নেপথ্যে
প্রকাশিতঃ 9:40 pm | December 29, 2022

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
আমৃত্যু রেশন সুবিধার আওতায় আসছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর মতোই ফায়ার সার্ভিসের প্রতিটি সদস্যের চাকরিকালীন রেশন সুবিধা বাড়িয়ে আজীবন করা হচ্ছে। চলতি বছরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আজীবন রেশন সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন। অর্থ বিভাগ থেকে এই সংক্রান্ত অফিস আদেশের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
শুধু তাই নয়, ফায়ার সার্ভিসের জনবলও ৩০ হাজারে উন্নীত করার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। আধুনিক প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ ফায়ার সার্ভিসের নবযাত্রা শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই। ফায়ার সার্ভিসের এসব উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ঈর্ষার অনলে পুড়ছেন একটি বিশেষ হল। কেবল অগ্নিকান্ড নয় যেকোনে দুর্যোগেই বন্ধুর মতোই জনগণের পাশে থেকে নিরলস সেবা প্রদানকারী এই সুশৃঙ্খল অধিদপ্তরের উন্নয়ন অভিযাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে শুরু হয়েছে নানামুখী অপতৎপরতা। তবে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপকৌশল হালে পানি পাচ্ছে না।
সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও পরিচ্ছন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ফায়ার সার্ভিসকে শ্রেষ্ঠতম অবস্থায় নিয়ে যেতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মাইন উদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ ও গতিশীল নেতৃত্বে বাঙালি জাতির ইতিহাসের মহানায়ক পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকার কথা জানিয়েছেন।
জানা যায়, ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর স্বশরীরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছিলেন, ‘বিপন্ন মানুষের পাশে বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো দাঁড়ান।’ সরকারপ্রধানের নির্দেশনা আক্ষরিক অর্থেই যেন বাস্তবায়ন করে চলেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। সততা, দেশপ্রেম ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব নিয়ে তাঁরা কাজ করে চলেছেন দেশের মানুষের কল্যাণে।
এরপর প্রায় ৭ বছর পর চলতি বছরের মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান অতিথি হিসেবে পাওয়ার বিরল সৌভাগ্য অর্জন করে তাঁরা। সেদিন গণভবন প্রান্ত থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক স্পর্শে নতুন প্রাণাবেগে উচ্ছ্বসিত-উদ্দীপ্ত হয়ে উঠেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

সূত্র জানায়, দীর্ঘ সময় যাবত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মীরা পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর মতো নিজেদের আজীবন রেশন সুবিধা প্রদানের দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু তাদের দাবি পূরণ হয়নি। অবশেষে
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মাইন উদ্দিনের নেতৃত্বের সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘গতি, সেবা ও ত্যাগ’ মূলমন্ত্র নিয়ে বিপদে সাধারণ মানুষের প্রধান ভরসার নাম হয়ে উঠা এই অধিদপ্তরের প্রতিটি সদস্যকে আমৃত্যু রেশন সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা দেন। বর্তমানে শুধুমাত্র চাকরিকালীন সময়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রেশন সুবিধা পাচ্ছেন। সরকারপ্রধানের এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সঙ্গে মানানসই হবে বলে মনে করছেন অধিদপ্তরটির নীতিনির্ধারকরা।
এ প্রসঙ্গে চলতি বছরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি, সারা জীবন আগুন ও ধোঁয়ায় কাজ করতে হয় বিধায় এই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অনেকেই অবসর বয়সে নানা রকম রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। এই কারণে আমরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আজীবন রেশন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি।
এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের জনবল ৩০ হাজারে উন্নীত করার কাজও হাতে নেওয়া হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হয়েছে। এতে করে অধিদপ্তরটির সকল সদস্যের উৎসাহ ও মনোবল বেড়েছে।

সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৫ মে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। তিনি খোলনলচে পাল্টে ফায়ার সার্ভিসকে ঢেলে সাজাতে একগুচ্ছ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। দক্ষ নেতৃত্বে বিপুল প্রাণাবেগের উচ্ছ্বলতার প্রাবল্যে তাঁর প্রতিটি উচ্চারণ দেশপ্রেম ও নির্ভীকতার ইঙ্গিতবহ।
চিন্তার ঔদার্য্য ও মানবিকতার প্রসারিত দৃষ্টিকোণে শুরুতেই বিএম কনটেইনার ডিপোর স্মরণাতীতকালের ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ১৩ ফায়ার ফাইটারকে তিনি ‘অগ্নিবীর’ খেতাবে ভূষিত করেন। অভিভাবকত্বের পরশে প্রতিটি সদস্যের পরিবারের পাশে দাঁড়ান।
একই সূত্র বলছে, বর্তমান ডিজির দূরদর্শী সিদ্ধান্তে গুরুতর আহত হওয়া ফায়ার সার্ভিসের অন্য সদস্যদের দ্রুত সিএমএইচে ভর্তির মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করায় তাঁদের জীবন রক্ষা পায়। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে একদিন-প্রতিদিন কাজ করে নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে অগ্রণী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মাইন উদ্দিন বিশ্বাস করেন ‘নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও সাহসের সঙ্গে কাজ করেই ফায়ার সার্ভিস দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে।’

সূত্র জানায়, ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মাইন উদ্দিনের সময়ে গত কয়েক মাসে ফায়ার সার্ভিসে দু’টি নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে মেধা ও যোগ্যতাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যোগ্যতাই চাকরির মাপকাঠি এই নীতিতে বিশ্বাসী ডিজি সুষ্ঠু ও সফলভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।
ফায়ার সার্ভিসকে আরও যুপোপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ ডিজির নেতৃত্বে অধিদপ্তরটির নানামুখী উন্নয়ন মহাকর্মযজ্ঞে একটি বিশেষ মহলের মাঝে ‘গাত্রদাহ’ তৈরি হয়েছে। তিনি অধিদপ্তরটির ভেতরে-বাইরে সুবিধাভোগী সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছেন। যোগ্যদের পুরস্কার ও অযোগ্যদের তিরস্কারের কৌশলের মাধ্যমে ফয়ার সার্ভিসকে সম্পূর্ণ সক্ষমতার এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে তাঁর দূরদর্শী প্রতিটি পদক্ষেপ প্রশংসিত হয়েছে।
সূত্র মতে, অধিদপ্তরের ডিজি একটি ‘টিম ওয়ার্ক’র মাধ্যমে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় সমর্পণ করেছেন ফায়ার সার্ভিসকে। তিনি অদম্য এই অগ্রযাত্রা সবার সহযোগিতা নিয়েই বজায় রাখতে চান। বিশেষ করে গাত্রদাহ তৈরি হওয়া মহল বিশেষকেও সঙ্গে নিয়ে দিনবদলের পানসিতে চড়ে ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মাইন উদ্দিন উন্নয়নের মহাসোপানে নিয়ে যেতে চান ‘বিপদের বন্ধু’ ফায়ার সার্ভিসকে।
জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.মাইন উদ্দিন কালের আলোকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক দিকনির্দেশনায়, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন ও সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী’র সরাসরি তত্ত্বাবধানে উন্নত বিশ্বের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের উন্নত ও ধনী বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় গর্বিত সহযাত্রী হতে চাই আমরা।’

কালের আলো/এসবি/এমএম