মুফতি কাজী ইব্রাহিমের ১৫ মাসের কারাদণ্ড

প্রকাশিতঃ 4:04 pm | January 16, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

করোনাভাইরাসের টিকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য আলোচনায় আসা কথিত ধর্মীয় বক্তা মুফতি কাজী ইব্রাহিম ‘মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য’ দেওয়ার মামলায় অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন।

অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করার পর সোমবার (১৬ জানুয়ারি) তাকে এক বছর তিন মাস ১৯ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে ঢাকার সাইবার ট্রাইবুনালের বিচারক এ কে এম জুলফিকার হায়াত।

এদিন এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে অভিযোগ পড়ে শুনিয়ে বিচারক নিয়ম অনুযায়ী আসামির কাছে জানতে চান, তিনি দোষী না নির্দোষ।

উত্তরে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ইব্রাহীম দোষ স্বীকার করে নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। দোষ স্বীকার করে নেওয়ায় বিচারক তাৎক্ষণিকভাবে সাজা ঘোষণা করে মামলার নিষ্পত্তি করে দেন।

উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছিল।

এরপর ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালমাটিয়ার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। হিসাব করলে দেখা যায়, গ্রেফতারের পর থেকে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তার এক বছর তিন মাস ১৯ দিনের কারাবাস হয়, যা দণ্ড হিসেবে প্রদান করেন আদালত।

ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, কাজী ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫/৩১/৩৫ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ ধারাগুলোর সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। যেহেতু তিনি দোষ স্বীকার করেছেন সেহেতু বিচারক সন্তুষ্ট হয়ে তার কারাভোগটাই সাজা হিসেবে দিয়েছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, কাজী ইব্রাহিম তার বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও খুতবার সময় মিথ্যা-উসকানিমূলক ও ভীতিপ্রদর্শন সম্বলিত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করেন। প্রচারিত ভিডিও সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে উসকানিমূলক ভিডিওগুলোতে প্রচারিত বক্তব্য তার নিজের বলে স্বীকার করেন।

তিনি ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা, আক্রমণাত্মক ও ভীতি প্রদর্শনমূলক বিভিন্ন ভিডিও প্রচার এবং প্রকাশ করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫/৩১/৩৫ ধারায় অপরাধ করেছেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়।

এরপর যখন তাকে গ্রেফতার করতে লালমাটিয়ার বাসায় যায় পুলিশ, তখন তিনি ফেসবুক লাইভে এসে ‘হিন্দুস্থানি দালাল ও র’র এজেন্ট তার বাসা ঘিরে রেখেছে বলে মন্তব্য করেন।

তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলাটি করেছিলেন ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মুন্সি আব্দুল লোকমান।

এ মামলায় তাকে আদালতে হাজির করে দুদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ড শেষে একই বছরের ২ অক্টোবর জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

তদন্ত শেষে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. হাসানুজ্জামান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

কালের আলো/এসবি/এমএম