জননিরাপত্তায় আস্থায় র‍্যাবের অর্জনে উচ্চকন্ঠ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 10:56 pm | March 19, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

জননিরাপত্তায় দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীতিতে সুদৃঢ় অবস্থান বিনির্মাণ করেছে এলিট ফোর্স র‌্যাব। বরাবরই র‌্যাবের অর্জনে উচ্চকন্ঠ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ব্যতিক্রম ছিল না র‌্যাবের ১৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও। জঙ্গিবাদ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সফল তৎপরতায় র‌্যাবের ভূমিকা অগ্রগণ্য বলেও মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রনায়কোচিত বার্তায় উজ্জীবিত-গৌরবান্বিত র‍্যাব

রোববার (১৯ মার্চ) র‌্যাব সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেছেন, ‘র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) দেশের গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, প্রতারণা বন্ধসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে এ বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে। র‌্যাব জঙ্গি, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারিদের কাছে একটা আতঙ্কের নামে পরিণত হয়েছে।’

র‌্যাবের কার্যক্রমের ফলেই ধর্ষণ, খুন, অপহরণের আসামিদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ভুক্তভোগী পরিবারের বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মানবিকবোধের জায়গা থেকে র‌্যাব দুস্থ, ও প্রতিবন্ধীদের পাশেও দাঁড়াচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় সর্বহারা জনসাধারণের পাশে থেকে কাজ করছে গণমুখী এ বাহিনী।’

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর অভিভাবকত্বে সুসংগঠিত র‍্যাব, স্মার্ট বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশে দৃঢ়প্রত্যয় ডিজির

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পূর্ব শর্ত। দেশের উন্নয়নের এই পূর্ব শর্তকে সঠিকভাবে ধারণ করে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, প্রতারণা বন্ধসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে র‌্যাব।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত সময়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনা করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে র‌্যাব। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের তিন হাজার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। র‌্যাব জঙ্গিবাদ দমনে মাঠ পর্যায়ে নজরদারির পাশাপাশি সাইবার জগতে সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। জঙ্গিবাদ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে র‌্যাব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে সফল তৎপরতা চালিয়েছে তাতে র‌্যাবের ভূমিকা অগ্রগণ্য।’

র‌্যাবের বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রশংসা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিবর্তিত আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সমাজে অপরাধের ধরনও পাল্টেছে। র‌্যাব এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে প্রস্তুত করছে। এ পর্যন্ত র‌্যাব তিন লক্ষাধিক সন্ত্রাসী, জঙ্গি, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক কারবারিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে ১৯ হাজারের বেশি দেশি-বিদেশি অস্ত্র।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘অপরাধ দমনে শুধু অভিযানিক প্রক্রিয়ায় সীমাবদ্ধ না থেকে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের মতো সময়োপযোগী সফল উদ্যোগও গ্রহণ করছে র‌্যাব। যার প্রতিফলন হচ্ছে র‌্যাব ডিরেডিকালাইজেশন কর্মসূচি নবদিগন্তের পথে।

তিনি বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের নিদর্শন সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করেছে র‌্যাব। একে একে আত্মসমর্পণ করেছে কক্সবাজার, মহেশখালী, বাঁকখালী অঞ্চলের দস্যুরা। এছাড়াও সুন্দরবন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার আত্মসমর্পণ করা ৪০৫ জলদস্যুকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছে র‌্যাব। ‘নবজাগরণ : অপরাধকে না বলুন’ কার্যক্রমের আওতায় অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে এমন বেকার শিক্ষাকার্যক্রম থেকে ঝরে পড়া শ্রেণির মানুষকে র‌্যাব কারিগরি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব:) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো.আমিনুল ইসলাম খান, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন অনুষ্ঠান মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এম মান্নান, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহাবুব আলী, সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদসহ সরকারের মন্ত্রী এমপিরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল হামিদুল হক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক এ কে এম নাজমুল হাসান, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এমএএএমকে