দুর্নীতি মামলার রায় মেনে নিতে খালেদা জিয়াকে এরশাদের আহবান
প্রকাশিতঃ 6:30 pm | February 02, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কী দন্ডিত হবেন না কী বেকসুর খালাস পাবেন এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে রাজনৈতিক অঙ্গণে। তবে এ অবস্থায় মামলার রায় যাই হোক তা মেনে নিতে খালেদা জিয়ার প্রতি আহবান জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ.এম.এরশাদ।
তিনি বলেছেন, আমি ৬ বছর জেলে ছিলাম। দু’টি নির্বাচন জেলে থেকে করেছি। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে সেই সময় আমাকে নির্বাচন করতে হয়েছিল। আমি রায় মেনে নিয়েছিলাম। বিএনপি’র উচিত হবে আদালত যে রায় দিবে সেই রায় মেনে নেয়া।’
শুক্রবার দুপুরে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরখরিচা এলাকার জামিয়া মাহমুদিয়া আরাবিয়া ইসলামিয়া’র খতমে কুরআনে কারীম ও খতমে বুখারী শরীফ উপলক্ষে আয়োজিত বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল শেষে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিশ্বাস নেই বলে মন্তব্য করে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এমপি বলেন, বিএনপি সহায়ক সরকারের কথা বলে। অথচ এ সরকার বলতে কিছু নেই। সংবিধান মোতাবেকই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এ ওয়াজ মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন জামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও গুলশান সেন্ট্রাল (আজাদ) মসজিদের খতিব আল্লামা মাহমুদুল হাসান। এ সময় ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান, দেশবরেণ্য ওলামা মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আনওয়ারুল হক, জামিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাসরুর হাসান, নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আবু সাঈদসহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভূমিকা কী হবে, এ বিষয়ে জানতে চাইলেন এরশাদ বলেন, ভবিষ্যত বলবে আমরা কীভাবে নির্বাচন করবো। ৩০০ আসনে আমরা ইতোমধ্যেই দলীয় প্রার্থীর ব্যবস্থা করেছি। তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছি। এখনো বলতে পারছি না জোট না এককভাবে নির্বাচন করবো। ক’দিন পর এ বিষয়টি নির্ধারণ হবে।
দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির রায় নিয়ে নিজের মতামত জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বলেন, ‘এ রায় নিয়ে আমার কোন মতামত নেই। আদালত যে রায় দিবে সেই রায় মেনে নিতে হবে।’
এ বিষয়ে নিজের উদাহরণ টেনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ.এম.এরশাদ বলেন, আমি ৬ বছর জেলে ছিলাম। দু’টি নির্বাচন জেলে থেকে করেছি। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে সেই সময় আমাকে নির্বাচন করতে হয়েছিল।
আমাকে বেগম জিয়া ৪২ টি মামলা দিয়েছিল। ওই সময় যে রায় হয়েছিল আমি মেনে নিয়েছি। আমার স্ত্রী-পুত্রকে জেলে নিয়েছিল খালেদা সরকার। জেলখানায় থেকে জাতীয় পার্টি নির্বাচন করেছে। কারগারে থেকে জাতীয় পার্টি ৫০ টি আসনে জয়ী হয়েছিল।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা ওইসব মামলা জামিনযোগ্য ছিল। কিন্তু এরপরেও তারা আমাকে জামিন দেয়নি। জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচনমুখী দল বলেই সেই সময় আমি নির্বাচন করেছিলাম।
এর আগে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরখরিচা মাঠে এসে পৌঁছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ.এম.এরশাদ। এ সময় দলীয় মহাসচিব এ.বি.এম.রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনের সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন মুক্তি, ময়মনসিংহ মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি জাহাঙ্গীর আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় চরখরিচা মাঠে এসে পৌঁছতেই তাকে শুভেচ্ছা জানান গুলশান সেন্ট্রাল (আজাদ) মসজিদের খতিব আল্লামা মাহমুদুল হাসানের ছেলে অলিউল্লাহ মাইমুন। পৃথকভাবে দলীয় নেতা-কর্মীরাও তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
পরে তাকে পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহসিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) এস.এ.নেওয়াজী পিপিএম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন খালেদাকে ‘ভাগ্য নির্ধারণী’ বার্তা এরশাদের
কালের আলো/এস আলম