জামায়াত নেতাদের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ

প্রকাশিতঃ 4:15 pm | December 18, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের নেতাদের প্রার্থিতা বাতিলে সোমবার নির্বাচন কমিশনে যে আবেদনটি করা হয়েছে সেটি তিনদিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে সুযোগ দেওয়া কেন অবৈধ হবে না এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।

এর আগে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল রেজাউল হক চাঁদপুরী জামায়াতের ২২ নেতাকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে সুযোগ দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করেন। রিটে নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমীর, সেক্রেটারি জেনারেলসহ ২২ প্রার্থীকে বিবাদী করা হয়।

প্রসঙ্গত, তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর দায়ের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই জোটের শরিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসনে জামায়াতকে ছাড় দিয়েছে বিএনপি। ২০-দলীয় শরিক দল জামায়াতে ইসলামীকে ২২টি আসন দেয়া হয়েছে। যদিও জামায়াতকে আসন বণ্টনের শুরুতে ২৫টি আসনে ছাড় দেয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে জামায়াতে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানো জামায়াত এবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট করে দুটি আসনে জয়ী হয়। আর জোটের সিদ্ধান্তে দশম নির্বাচন বয়কট করে দলটি।

জামায়াতের ২২ আসন: জামায়াত নেতাদের মধ্যে চিঠি পেয়েছেন- দিনাজপুর-১ মোহাম্মদ হানিফ, দিনাজপুর-৬ মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী-৩ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান সরকার, সিরাজগঞ্জ-৪ মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৫ মাওলানা ইকবাল হুসাইন, ঝিনাইদহ-৩ অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, যশোর-২ আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন, বাগেরহাট-৩ অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ অধ্যাপক আবদুল আলীম, খুলনা-৫ অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ মাওলানা আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, ঢাকা-১৫ ডা. শফিকুর রহমান, সিলেট-৬ মাওলানা হাবিবুর রহমান, কুমিল্লা-১১ ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহের, চট্টগ্রাম ১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম ও কক্সবাজার-২ হামিদুর রহমান আযাদ।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে এক রিট পিটিশন দায়ের করেন। কয়েক দফা শুনানির পর হাইকোর্ট ২০১৩ সালের ১ আগস্ট এক রায়ে, জামায়াতকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন প্রদান আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও আইনগত অকার্যকর ঘোষণা করা হয়। তবে তখন থেকে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি নির্বাচন কমিশন।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর আওতায় রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছিল। দলটির নিবন্ধন নম্বর ছিল ১৪।

কালের আলো/এএ/এমএইচএ