রাজারবাগে আযান-কেরাতের সুর-ছন্দ, ধর্মীয় মূল্যবোধকে লালন করার বার্তা আইজিপির
প্রকাশিতঃ 6:08 pm | April 14, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
রাজধানীর রাজারবাগে পুলিশ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) এখানেই জুম্মার নামাজ আদায় শেষেই সূত্রপাত হলো আযান-কেরাতের সুর-ছন্দে এক নির্মোহ আনন্দিত পরিবেশের। চলতি বছরের বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক আযান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণের আনুষ্ঠানিকতা।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন’র উপস্থিতিতে যশোর জেলা পুলিশের কনস্টেবল মো. ইসমাইল হোসেন মুন্না’র সুললিত কণ্ঠে আযানের সুমধুর ধ্বনি স্পর্শ করলো সবার হৃদয়কে। মধুর কলতানে কেরাতে প্রথম স্থান অধিকার করা ৩ এপিবিএন খুলনার নায়েক আবু মুসার কেরাত পবিত্র মাহে রমজানে তৈরি করলো নতুন এক ভাব-আবেগের।
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক আযান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতার অনিন্দ্যসুন্দর এই আয়োজনে বিজয়ী থেকে শুরু করে সব প্রতিযোগীদের ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানালেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের মাঝে ধর্মীয় চর্চা বাড়ানোর জন্য প্রতি বছর আযান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এবারের প্রতিযোগিতায়ও প্রতি বছরের ন্যায় সকল পুলিশ ইউনিট থেকে পুলিশ সদস্যরা অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্য থেকে অধিকতর যোগ্য প্রতিযোগীকেই নির্বাচন করা হয়েছে।’ একজন মানুষকে সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের দিকে পরিচালিত করার জন্য ইসলামী বিধানের প্রয়োগ ও অনুশীলন অনস্বীকার্য এই কথাটিও গুরুত্বের সঙ্গেই বুঝিয়ে দিলেন পুলিশপ্রধান।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, বরাবরের মতো এবারও সাড়ম্বরে আয়োজন করা হয় বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক এই প্রতিযোগিতার। উৎসবের আবহেই গোটা দেশ থেকে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট থেকে বাছাই করে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার জন্য পুলিশ সদস্যদের ঢাকায় পাঠানো হয়। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় চলতি বছর আযানে ২৬ জন, কেরাতে ২৭ জন ও রচনা প্রতিযোগিতায় ১৮ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক আযান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান। এ সময় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইসলাম মানবজীবনের একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান, পরিপূর্ণ পথ-পাথেয় এবং ধর্ম প্রতিপালনের মাধ্যমে মানুষের নৈতিক বিশ্বাস সুদৃঢ় হয় বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন পুলিশপ্রধান। তাই শুধুমাত্র আচরণে নয় বিশ্বাসেও ধর্মীয় মূল্যবোধকে লালন করারও বার্তা দেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আধুনিকতায় সমুজ্জ্বল থেকে প্রেম-প্রীতি, সাম্য-মৈত্রী ও সৌভ্রাতৃত্বের শাশ্বত সুন্দর নীতিকে তিনি উদ্ভাসিত করেন অপূর্ব সুন্দর বাক্যে।
তিনি ‘বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তায় ইসলামিক দর্শন ও বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এর প্রতিফলন’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তুর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ‘প্রতিযোগীরা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও তাঁর ইসলামী দর্শন সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছে।’
পুলিশপ্রধান প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আহবান জানান। এছাড়া বিজয়ীদের মেধার স্বীকৃতি হিসেবে তাদেরকে দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করানোর বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান। তিনি সুচারুভাবে প্রতিযোগিতার বিচার কাজ সম্পন্ন করার জন্য বিচারক মন্ডলীকে ধন্যবাদ জানান।
এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের স্বাগত জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘যারা বিজয়ী হতে পারেননি তারা আগামীতে আরও ভাল করার জন্য অনুশীলন অব্যাহত রাখতে হবে।’ পরে তিনি বিজয়ীদের মাঝে সনদপত্র ও পুরস্কার বিতরণ করেন।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, আযানে প্রথম হয়েছেন যশোর জেলা পুলিশের কনস্টেবল মো. ইসমাইল হোসেন মুন্না, দ্বিতীয় নোয়াখালী জেলা পুলিশের কনস্টেবল মো. মনিরুল ইসলাম এবং তৃতীয় হয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই মো. ওমর ফারুক
কেরাতে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন ৩ এপিবিএন খুলনার নায়েক আবু মুসা, দ্বিতীয় হয়েছেন মাদারীপুর জেলা পুলিশের এএসআই মো. আরিফুর রহমান এবং তৃতীয় হয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই মো. ওমর ফারুক
‘বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তায় ইসলামিক দর্শন ও বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এর প্রতিফলন’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম, দ্বিতীয় স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), ঢাকার উচ্চমান সহকারী শেখ রেজাউল কবীর এবং তৃতীয় হয়েছেন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এএসআই মো. মারুফুল ইসলাম।
কালের আলো/এমএএএমকে