স্বপ্নছোঁয়ার আনন্দে উদ্বেলিত নবীন ফায়ারফাইটাররা, দেশের সেবায় নিবেদিত থাকার নির্দেশ ডিজির

প্রকাশিতঃ 8:08 pm | May 03, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

সাত মাসের কঠোর এক প্রশিক্ষণ। রাজধানীর মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং কমপ্লেক্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে সাত সকালেই যেন ফুটেছে সব ফুল। স্বপ্নছোঁয়ার অপার আনন্দ মেধাবী ফায়ারফাইটারদের হৃদয়-মনে। কাঙ্ক্ষিত সাফল্যে উদ্বেলিত হওয়ার একদিন। অদম্য ফায়ারফাইটারদের চোখের তারায় তখন খেলা করছে দেশমাতৃকার সেবার অমিত সম্ভাবনার স্বপ্ন।

সেই স্বপ্নকে যেন আরও স্বার্থক ও মহিমান্বিত করলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও দেশপ্রেমের মন্ত্র গেঁথে দিলেন ওদের মস্তিষ্কে। শৃঙ্খলার মান ধরে রেখে ফায়ারফাইটারদের দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকার নির্দেশনা দিলেন।

আশাবাদী উচ্চারণে তিনি বললেন, ‘সাত মাসের দীর্ঘ প্রশিক্ষণে তোমরা যে শিক্ষা গ্রহণ করেছো, মাঠপর্যায়ে বাস্তবিক প্রয়োগের মাধ্যমে সেবার মানসিকতা নিয়ে দেশের সুরক্ষায় তোমরা তা কাজে লাগাবে।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন-‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স একটি সুশৃঙ্খল ও সেবাধর্মী ইউনিফরমধারী বাহিনী। তোমাদের প্রতিটি কাজে তাই শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। গতি, সেবা ও ত্যাগের মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত থেকে দেশের সুরক্ষায় তোমাদের কাজ করে যেতে হবে।’

শৃঙ্খলার মান বজায় রেখে সেবার দৃপ্ত শপথে বুধবার (০৩ মে) সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ শেষ করা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’র ৬১তম ব্যাচের ৪৪৯ জন নবীন ফায়ারফাইটারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন অমর-অব্যয় নির্দেশনাই প্রদান করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।

তিনি নিজের বক্তব্যের শুরুতে বাঙালি জাতির চির আরাধ্য পুরুষ, মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৫ আগস্ট তাঁর পরিবারের শহিদ সকল সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহিদদের এবং সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশ নিয়ে মৃত্যুবরণকারী অগ্নিবীরসহ সকল শহিদকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া উইং জানায়, নবীন ফায়ারফাইটারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অধিদপ্তরের পরিচালকরাসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা, নবীন ফায়ারফাইটারদের অভিভাবকরা, ৩৫৭ জন ফায়ারফাইটার সরাসরি মিরপুরে এবং ৯২ জন খুলনা থেকে অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন।

প্যারেড পরিদর্শন, তিন জনকে চৌকস পদক
এদিন সকাল ৯ টায় অধিদপ্তরের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রবেশ করলে বিউগলের সুর বেজে উঠে। এ সময় অধিদপ্তরের পরিচালকরা ও ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অধ্যক্ষ মহাপরিচালককে স্বাগত জানান। পতাকাবাহী কনটিনজেন্টসহ ৪টি কন্টিনজেন্টের সদস্যরা এ সময় মহাপরিচালককে সশ্রদ্ধ অভিবাদন জ্ঞাপন করেন। পরে তিনি প্যারেড পরিদর্শনের পাশাপাশি কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন এবং কনটিনজেন্ট সদস্যদের অভিবাদন গ্রহণ করেন। এরপর প্রশিক্ষণকালীন সার্বিক বিচারে শ্রেষ্ঠ হওয়া তিন জনকে চৌকস পদক পরিয়ে দেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা
কন্টিনজেন্ট সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির ভাষণ প্রদানকালে ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন চলতি বছর ফায়ার সার্ভিসের ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৩’ অর্জনের কথা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন। তিনি এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামালসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার নিজেদের দায়িত্ববোধকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া উইং জানায়, প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে একটি পতাকাবাহী কন্টিনজেন্টসহ মোট ৪টি কন্টিনজেন্ট অংশগ্রহণ করে। প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মো. সাইফুল ইসলাম। প্যারেড অ্যাডজুটেন্টের দায়িত্ব পালন করেন ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।

কালের আলো/এমএএএমকে