চোখের জলে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রহিমা ওয়াদুদকে চির বিদায়

প্রকাশিতঃ 8:32 pm | May 07, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর চোখের জলে চির বিদায় নিলেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির মা রহিমা ওয়াদুদ। রোববার (০৭ মে) বাদ আছর রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে তাঁর নামাজে জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয়। তাঁর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে রহিমা ওয়াদুদের নামাজে জানাজায় মরহুমার জ্যেষ্ঠ সন্তান ও দেশের বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু, পানিসম্পদ বিষয়ক উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদসহ পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, তার প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকর্মীরাসহ অন্যান্যরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে বিভিন্ন স্তরের মানুষের পক্ষ থেকে মরহুমের কফিনে ফুলের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।

জানাজার আগে মমতাময়ী মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চান ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমার মা প্রায় ৪০ বছর শিক্ষকতা করেছেন। অগণিত ছাত্র-ছাত্রী তিনি রেখে গেছেন। ১৯৮৩ সালে আমাদের বাবা মারা যান। এরপর তিনি আমাদের মানুষ করেছেন। আমি ও আমার বোন ডাক্তার হয়েছি। আমার ছোট বোন ডা: দীপু মনি সরকারের সাবেক সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।’

ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু বলেন, ‘আমার মা অত্যন্ত অত্যন্ত সদালাপী ও ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি সব সময় দেশের কথা ভেবেছেন, দেশের জন্য কাজ করেছেন। তিনি অত্যন্ত দেশপ্রেমিক মানুষ ছিলেন। নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক ছিলেন। আমি আপনাদের কাছে তার জন্য দোয়া প্রার্থী।’

আগামী শুক্রবার (১২ মে) কলাবাগানের বাসায় মরহুমের আত্নার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এ মিলাদ মাহফিলে সবাইকে অংশগ্রহণ করতে বিনয়াবনত অনুরোধ জানান ডা. টিপু।

প্রসঙ্গত, ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের সহধর্মিণী ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির মা রহিমা ওয়াদুদ ছিলেন একজন আদর্শবান, সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। শিক্ষকতার জীবনে তিনি বহু শিক্ষার্থীর মানস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে শুরু করে সব মুক্তির আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন রহিমা ওয়াদুদ। তার মৃত্যুতে জাতি একজন নির্লোভ, দেশপ্রেমিক ও একনিষ্ঠ শিক্ষককে হারালো বলে মন্তব্য বিশিষ্টজনদের।

এর আগে শনিবার (৬ মে) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর কলাবাগানে নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন রহিমা ওয়াদুদ (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপু ও এক মেয়ে ডা. দীপু মনিসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

কালের আলো/ডিএস/এমএম