পুলিশের ওপর হামলাকারী সবাইকেই আইনের মুখোমুখি করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 11:00 pm | February 04, 2018

কালের আলো রিপোর্ট:

বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গাড়ির বহরের সামনে থেকে গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে অতর্কিতে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। হামলা চালিয়ে পুলিশের দুটি রাইফেল ভেঙে ফেলাসহ প্রিজনভ্যান ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্য্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে হামলাকারীদের সনাক্ত করা হচ্ছে, হামলাকারী সবাইকে আইনের মুখোমুখি করা হবে।

রোববার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ তথ্য জানান। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে এসংক্রান্ত সম্পূরক প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি বেগম ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

হেফাজতের আল্লামা শফি আহমদের সঙ্গে সাক্ষাত প্রসঙ্গে জাসদের নাজমুল হক প্রধানের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সারা বাংলাদেশের আলেম সমাজের অত্যন্ত সম্মানীয় ব্যক্তি হচ্ছেন আল্লামা শফি আহমেদ। সবাই তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখেন। চট্টগ্রামে সরকারি কাজে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে অসুস্থ্যতার খবর জানতে পেরেই তার সঙ্গে দেখা করতে যাই। এখানে অন্য কিছু নেই।

সরকার দলীয় সদস্য মো. আবদুল্লাহ’র প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত পলাতক খুনী লে. কর্ণেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশীদের মালিকানাধীন ১৬ দশমিক ৯৪ একর এবং আরেক পলাতক খুনী রাশেদ চৌধুরীর সোয়া এক একর মিলিয়ে মোট ১৯ একর ভূমি বাজেয়াপ্ত করে খাস খতিয়ানভূক্ত করা হয়েছে।

তিনি জানান, কানাডায় অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর খুনী নূর চৌধুরী এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত খুনী মেজর (অব.) আবু মোহাম্মদ রাশেদ চৌধুরীকে দেশ দুটি থেকে ফেরত আনার লক্ষ্যে নিয়োগকৃত ল’ফার্মের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অন্যান্য পলাতক আসামিদের অবস্থান সনাক্ত করে গ্রেফতারের জন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে।

সরকারী দলের বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৭৬ সালের জুন-অক্টোবর সময়কালে তদানিন্তন জিয়াউর রহমান সরকার কতিপয় ঘাতকের চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে বিভিন্ন কূটনৈতিক পদমর্যাদায় বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে নিয়োগ এবং পরবর্তীতে পদোন্নতিও প্রদান করে।

জাতীয় পার্টির সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, মাদকদ্রব্যসহ অন্যান্য চোরাচালান প্রতিরোধ, বিভিন্ন প্রকার সীমান্ত অপরাধ দমন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় শাহপরীর দ্বীপ হতে ২৭১ কিলোমিটার রিং রোডসহ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।

সরকারী দলের মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, মিয়ানমার হতে যে সকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে তারা যাতে টেকনাফের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সরকার থেকে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে একটি সুনির্দিষ্ট ও সুপরিসর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোহিঙ্গারা যাতে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ১১টি চেকপোষ্ট স্থাপন করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের দৈনন্দিন চলাচল মনিটরিং করা হচ্ছে।

তরীকত ফেডারেশনের সদস্য এম এ আউয়ালের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে (২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত) বিভিন্ন দফতর কর্তৃক অবৈধভাবে আনীত সর্বমোট ৪ হাজার ১৩০ কেজি স্বর্ণ আটক করা হয়। উক্ত স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকে অস্থায়ীভাবে জমা করা হয়। পরবর্তীতে এবিষয়ে দায়েরকৃত মামলা নিষ্পত্তি সাপেক্ষে ওই স্বর্ণ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা করা হয়।