ব্যক্তিগত পছন্দের উর্ধ্বে উঠে সৎ-দক্ষদের সেনা নেতৃত্বে আনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রকাশিতঃ 8:41 pm | July 22, 2023
কালের আলো রিপোর্ট:
পিতা মুজিবের মতোই দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও অবিচল আস্থা, গভীর বিশ্বাস আর ভালোবাসাও অকৃত্রিম। নিজের দু’সহোদর শেখ কামাল ও শেখ জামাল ছিলেন সেনাবাহিনীর দক্ষ ও চৌকস কর্মকর্তা। টানা তিন মেয়াদে দেশপ্রেমী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই নিরবচ্ছিন্নভাবে তিনি কাজ করে চলেছেন।
চারবারের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন এই সরকারের নিবিড় পরিচর্যায় শতভাগ পেশাদার, দক্ষ ও আধুনিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে সেনাবাহিনী। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় স্বমিহমায় উদ্ভাসিত ও গৌরবমণ্ডিত এই বাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদের অনুষ্ঠানে সবকিছুর উর্ধ্বে থেকে নিরপেক্ষ বিচার বিশ্লেষণ করে যোগ্য নেতৃত্বকে খুঁজে বের করার কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
দৃঢ়ভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা বিশ্বাস করেন- ‘সুদৃঢ় নৈতিক মনোবল, সৎ এবং নেতৃত্বের অন্যান্য গুণাবলিসম্পন্ন অনুগত অফিসাররাই উচ্চতার পদোন্নতির দাবিদার। তাই যেসব অফিসার সামরিক জীবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ্য নেতৃত্ব প্রদানে সফল হয়েছেন, পদোন্নতির ক্ষেত্রে তাদের বিবেচনায় আনতে হবে।’
শনিবার (২২ জুলাই) ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে ‘সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৩’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব দিকনির্দেশনা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি চলতি বছরের সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রথম পর্বের এই পদোন্নতি পর্ষদে সেনাবাহিনীর কর্নেল ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদবির যোগ্য কর্মকর্তারা পরবর্তী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন।
জাতির পিতার হাতে গড়া এই সেনাবাহিনী জনগণের যে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে, সেটি ধরে রাখতে গুরুত্বারোপ করে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আধুনিক, উন্নত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সেনাবাহিনীকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে। এজন্য যোগ্য, দক্ষ, কর্মক্ষম ও দেশপ্রেমিক অফিসারদের হাতে এর নেতৃত্ব ন্যস্ত করতে হবে।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসারদের পদোন্নতির জন্য ট্রেসের (টেবুলেটেড রেকর্ড অ্যান্ড কম্পারেটিভ ইভালুয়েশন) মতো একটি আধুনিক পদ্ধতির ওপর জোর দেওয়া হয়, যা পেশাগত দক্ষতার বিভিন্ন দিকের তুলনামূলক মূল্যায়ন নির্দেশ করে। বিষয়টি বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিনির্ভর বলে মত দেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, নিরপেক্ষ মূল্যায়নের মাধ্যমেই পেশাগত দক্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন সম্ভব। আপনারা পদোন্নতির ক্ষেত্রে উন্নত চারিত্রিক গুণাবলির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন।’
দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রজ্ঞা, বিচার-বুদ্ধি এবং ন্যায়পরায়ণতার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস আছে। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে উঠে আপনারা ন্যায়-নীতির ভিত্তিতে উপযুক্ত নেতৃত্ব নির্বাচনে সর্বতোভাবে সফল হবেন।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে এসে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব:) তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ তাকে স্বাগত জানান।
সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদের উদ্বোধ করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
এ সময় সেনাবাহিনীর চীফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলম, এনডিসি কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো.আকবর হোসেন, আর্টডকের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহাম্মেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলমসহ সেনাবাহিনীর জেনারেল পদবীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সেনাসদস্যদের পেশাগত মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্ব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের পাশাপাশি সেনাসদস্যদের পেশাগত মানোন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সামগ্রিক উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। শুধু দেশের প্রতিরক্ষাকাজে নয় বরং সেনাবাহিনী দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবিচ্ছেদ্য অংশীদার। দেশের যেকোনও দুর্যোগে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ ২০২৩-এর সভাটি বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ সভায় আপনারা যোগ্য অফিসারদের পদোন্নতির জন্য নির্বাচন করবেন। আমি আশা করি, আপনারা সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচারের সঙ্গে এই পবিত্র দায়িত্ব পালন করবেন।’
সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, তার নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি আমাদের মহান স্বাধীনতা। এ ছাড়া জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ ও দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে স্মরণ করি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাইবোনদের সশ্রদ্ধ সালাম জানাই।
বঙ্গবন্ধু একটি পেশাদার ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের সেনাবাহিনীর জন্ম হয় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একটি পেশাদার, প্রশিক্ষিত ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালের ১১ জানুয়ারি কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি গড়ে তোলেন। তিনি কম্বাইন্ড আর্মস স্কুল এবং সেনাবাহিনীর প্রতিটি কোরের জন্য স্বতন্ত্র ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন।’
বঙ্গবন্ধুর অবদান উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঘাঁটি স্থাপন করেন এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভারত ও যুগোস্লাভিয়া থেকে নৌবাহিনীর জন্য যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে সে সময়ের অত্যাধুনিক সুপারসনিক মিগ-২১ যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, পরিবহন বিমান, এয়ার ডিফেন্স রাডার ইত্যাদি বিমানবাহিনীতে যুক্ত করেন। তিনি ১৯৭৪ সালেই একটি প্রতিরক্ষানীতি প্রণয়ন করেন। দুর্ভাগ্য, জাতির পিতাকে সপরিবার নির্মমভাবে হত্যার পর বাধাগ্রস্ত হয় দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা।’
সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে নানা উদ্যোগ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আমরা সরকার গঠন করি। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরি। সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করি। ১৯৯৮ সালে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ’ ও ‘মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’, ১৯৯৯ সালে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং’ এবং ‘আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করি। আমরাই সর্বপ্রথম ২০০০ সালে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীতে নারী অফিসার নিয়োগ করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে পুনরায় সরকার গঠনের পর প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন যুগোপযোগী সামরিক বাহিনী গঠনের লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করছি। ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করছি। ২০১৬ সালে ‘বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করেছি। জাতির পিতা প্রণীত প্রতিরক্ষানীতিকে যুগোপযোগী করে ‘জাতীয় প্রতিরক্ষানীতি, ২০১৮’ প্রণয়ন করেছি। সিএমএইচগুলোকে অত্যাধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরিত করেছি।’
সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস করার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সিলেটে ১৭ পদাতিক ডিভিশন, রামুতে ১০ পদাতিক ডিভিশন এবং বরিশালে ৭ পদাতিক ডিভিশন প্রতিষ্ঠা করেছি। এ ছাড়া বিগত চার বছরে আমরা বিভিন্ন ফরমেশনের অধীনে ৩টি ব্রিগেড এবং ছোট-বড় ৫৮টি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেছি। একই সঙ্গে ২৭টি ছোট-বড় ইউনিটকে অ্যাডহক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছি এবং ৯টি সংস্থাকে পুনর্গঠন করেছি। আমরা মাওয়া ও জাজিরায় শেখ রাসেল সেনানিবাস প্রতিষ্ঠা করেছি। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসের উদ্বোধন করেছি। রাজবাড়ী ও ত্রিশালে আরও নতুন দুটি সেনানিবাস স্থাপনের কার্যক্রম চলছে।’
‘চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে আর্মি এভিয়েশনের ফরোয়ার্ড বেস এবং লালমনিরহাটে এভিয়েশন স্কুল নির্মাণের কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আধুনিকায়নের ধারায় সেনাবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত বিভিন্ন সমরাস্ত্র, যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি বিশ্বমানের আধুনিক ও স্মার্ট বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সেনাবাহিনীর এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে’-যোগ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস উগ্রবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছি। ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’— জাতির পিতার এই মূলমন্ত্রকে পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হিসেবে মেনে চলছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। সব ধরনের বিবাদ-মতপার্থক্য আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চাই।’
সেনাবাহিনীর জেনারেলদের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা
সেনাবাহিনীর জেনারেলদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সব সময় দেশ ও জনগণের পাশে থেকেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অন্যান্য প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, জাতিসংঘ মিশনসহ বিদেশেও উচ্চমানের পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ আবারও সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে গৌরবের স্থানটি দখল করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া কালশী ফ্লাইওভার নির্মাণ, কেরানীহাট-বান্দরবান জাতীয় মহাসড়ক উন্নীতকরণ প্রকল্প, হালদা নদীর ভাঙনরোধ প্রকল্প, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণসহ উল্লেখযোগ্য প্রকল্প সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবার প্রশংসা অর্জন করেছে। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার ৩১৭ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পসহ নানা জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কার্যক্রম সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চলমান রয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানবন্দর রেলস্টেশন পর্যন্ত সমন্বিত পথচারী আন্ডারপাস নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে শিগগির শুরু করা হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। নারীর ক্ষমতায়ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নারী অফিসারদের পাশাপাশি আজ নারী সৈনিকরা দেশে ও বিদেশে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন, যা বহির্বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির প্রথম রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হবে জনগণের বাহিনী তথা পিপলস আর্মি’। তিনি সেনা কর্মকর্তাদের সৎ, সাহসী ও সুশৃঙ্খল চরিত্রের অধিকারী হতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তাই আপনাদের সব সময় লক্ষ রাখতে হবে যে জাতির পিতার কাঙ্ক্ষিত আদর্শ যেন নির্বাচনি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত অফিসারদের মধ্যে প্রতিফলিত হয় এবং সেনাবাহিনীর নেতৃত্বও যেন দেশপ্রেমিক ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের হাতেই ন্যস্ত হয়।
কালের আলো/এমএএএমকে