ডিএমপির শর্ত মেনেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ ঢাকা
প্রকাশিতঃ 11:15 pm | July 28, 2023
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
নিজেদের পছন্দমতো দু’স্পটেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপিকে ২৩ শর্তে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছিলেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে দেওয়া হয় গোটা রাজধানী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তীক্ষ্ণ নজরদারির পাশাপাশি দু’দলের আন্তরিক সদিচ্ছায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা প্রকট হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ থেকেছে শুক্রবারের (২৮ জুলাই) ঢাকা। হাফ ছেড়ে বেঁচেছে ঢাকাবাসী।
জানা যায়, ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কুশলী নেতৃত্বে ‘টিম ডিএমপি’র সার্বিক পরিকল্পনা, কৌশল, সর্বোচ্চ সতর্কতা আর অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ঠেকাতে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারির ফলে সময় গড়াতেই থমথমে ঢাকায় চাপা আতঙ্ক কেটে যায়। একইদিনে দুই বড় দলের সমাবেশকে ঘিরে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট, সিসিটিভি ও ড্রোন দিয়ে পুরো এলাকা মনিটরিংসহ সব সংস্থার সঙ্গে সুসমন্বয় করে ‘টিম ডিএমপি’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। ওয়ার্কিং ডে বাদ দিয়ে দু’দল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আগের দিনেই তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন ডিএমপি কমিশনার।
অনেকেকেই বলছেন, গোটা রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিজেদের নেতৃত্বের মুন্সীয়ানার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের আগে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের নেতৃত্বে রাজধানীতে স্বস্তির সুবাতাস নিশ্চিতের চ্যালেঞ্জে আরও একবার উত্তীর্ণ হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তায় ‘অতন্দ্র প্রহরী’ হয়ে ডিএমপির সদস্যদের সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন নজর কেড়েছে সবার।
এদিকে, শনিবার (২৯ জুলাই) ঢাকার সব প্রবেশমুখে ‘শান্তিপূর্ণ অবস্থান’ কর্মসূচিতে অশান্তির শঙ্কা করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এজন্য আগে থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতোমধ্যে সকাল থেকেই ঢাকার সকল প্রবেশমুখে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, সড়কে যান চলাচলে কেউ বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মূল সড়কে কাউকে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না।
ডিএমপি সূত্র জানায়, ডিএমপির পক্ষ থেকে ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি ছাড়াও পুলিশের রায়ট কার ও জল কামানসহ রায়ট কন্ট্রোলের জন্য সব ধরনের ইকুইপমেন্টও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রবেশমুখগুলোতে একটি করে জল কামান ও একাধিক রায়ট কার রাখতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ থেকে শনিবার ঢাকা শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির সঙ্গে একযোগে এই কর্মসূচি পালন করবে যুগপতে যুক্ত ৩৬টি দল ও বিভিন্ন জোট।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, ঢাকার প্রবেশমুখে কেউ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে ডিএমপি আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। এজন্য সকাল থেকেই প্রবেশমুখগুলোতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
ডিএমপির একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রবেশমুখগুলোতে যে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে তা মোকাবিলার জন্য রাতেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। সড়কের পাশে কেউ অবস্থান কর্মসূচি পালন করলে কোনও বাধা না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে কেউ যদি সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে সড়কে অবস্থান নেয় তাহলে পুলিশ তাদের হটিয়ে দেবে।
কালের আলো/ওয়াইএ/এমকে