বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা, ইতিহাসের সাক্ষী সেই স্মৃতি জাদুঘরে ৮ দেশের সামরিক উপদেষ্টা
প্রকাশিতঃ 9:57 pm | August 16, 2023
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও বঙ্গোপসাগরের কূলে বসবাসকারী এই জনসম্পদের ইতিহাসে সর্বোত্তম আসনে অধিষ্ঠান তাঁর। উজ্জ্বল সূর্যের মতোই দেদীপ্যমান বাঙালি জাতির চির আরাধ্য পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রক্তাক্ত সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের রূপকার। মৃত্যুঞ্জয়ী বিশ্বের নেতা। আমাদের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, নদীর কলতান বা পাখির কুজন-কোথায় নেই বদ্বীপের এই স্বাধীন ভূখণ্ডের চিত্রকর! সবুজ-শ্যামল, আর সুনীল প্রান্তরে তিনি আছেন এবং থাকবেন অনন্তকাল।
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দিতে একাত্তরের পরাজিত পাকি শক্তি, ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল ৭৫’র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল সপরিবারে। সেই থেকে প্রতি বছর ১৫ আগস্ট আসে বাঙালির জীবনে জাতীয় শোক দিবস হয়ে। বিনম্র শ্রদ্ধায় বাংলাদেশের মানুষ স্মরণ করেন মহান জাতির পিতাকে। বাঙালির ইতিহাসের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত পাওয়া ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবার শ্রদ্ধায় হৃদয় অর্ঘ্য নিবেদন করেছেন ৮ দেশের সামরিক উপদেষ্টা। বুধবার (১৬ আগস্ট) সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এই শ্রদ্ধা নিবেদনে নেতৃত্বে ছিলেন দেশপ্রেমী প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল হামিদুল হক (এনএসডব্লিউসি, পিএসসি)।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো বাংলাদেশে নিযুক্ত আট দেশের সামরিক উপদেষ্টারা হলেন- অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্স অ্যাটাচে লেফটেন্যান্ট কর্নেল জন ডেম্পসি, চীনের ডিফেন্স অ্যাটাচে সিনিয়র কর্নেল ডু জিনশেং এবং সহযোগী ডিফেন্স অ্যাটাচে কর্নেল কিউ হাইমো, ভারতের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার মনমীত সিং সবরওয়াল, সহযোগী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা স্কোয়াড্রন লিডার অভুতোষ শর্মা, নেপালের মিলিটারি অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রোশন শুমশের রানা, রাশিয়ার সামরিক- বিমান ও নৌ-অ্যাটাচে কর্নেল সের্গেই ভিক্টোরোভিচ নাইদেনভ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিফেন্স অফিসার ও ডিফেন্স অ্যাটাচে লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিকোলাস এনজি।
ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি থেকেই থেকেই বাঙালি জাতিকে মুক্তির দিকনির্দেশনা ও স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন ইতিহাসের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু। এখান থেকেই বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছিলেন স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখণ্ড ও লাল-সবুজের পতাকা। অথচ এক রাতের নির্মম হত্যাযজ্ঞে বাঙালির চেতনার বাতিঘর হিসেবে পরিচিত ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের সেই বাড়িটি এখন বাঙালি জাতির শোকের জাদুঘর। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলাদেশে নিযুক্ত আট দেশের সামরিক কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখেন। স্মরণ করেন জাতির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় অবদানে ‘অজেয়’, নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালি জাতির মুক্তির কাণ্ডারি বঙ্গবন্ধুকে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল হামিদুল হক বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস, অভ্যুদয় সারা বিশ্বের জন্য বিস্ময়।’ উজ্জ্বল ফুলকলির মতো ফুটে, লাল গোলাপের মতো পরিস্ফুটিত হাজার বছরের এই শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে নিয়ে মর্মস্পর্শী মূল্যায়নে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার, স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকীতে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসেছি। আমার সঙ্গে বাংলাদেশে কর্মরত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মিলিটারি অ্যাটাচে, নেভাল অ্যাটাচে এবং সামরিক অ্যাটাচে যারা আছেন, তারাও এসেছেন। জাতির পিতার প্রতি যে শ্রদ্ধা সারাবিশ্বে বর্তমানে রয়েছে, সেটার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আমার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। আমাদের দেশে বিভিন্ন দেশের ডিফেন্স অ্যাটাচেরা কর্মরত আছেন, তারা আজকে এখানে এসেছেন।’
কালের আলো/এমএএএমকে