চুরি করা ল্যাপটপ বসুন্ধরা মার্কেটে বিক্রি করতেন তারা, দোকানিসহ গ্রেপ্তার ৭
প্রকাশিতঃ 5:31 pm | August 27, 2023
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
চুরি যাওয়া একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে অভিযান চালিয়ে ল্যাপটপ চোর চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগ। এই চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফাঁকা বাসাবাড়ি আগে থেকে রেকি করত। পরে সময়-সুযোগ বুঝে ফাঁকা বাসার গ্রিল কেটে ও তালা ভেঙে রুমে ঢুকে ল্যাপটপ, মোবাইল, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করতেন তারা। এভাবে গত দুই বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চলে চক্রটির কর্মকাণ্ড। আর চুরি করা ল্যাপটপগুলো তারা রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দোকানে বিক্রি করতো।
রবিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন।
এর আগে রাজধানীর লালবাগের একটি ভবনের ফাঁকা তিনটি বাসা থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, নগদ ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করে এ চোর চক্র। চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. সঞ্জীব, মো. হেলাল উদ্দিন, মো. রনি, মো. রিপন, মো. তরিকুল ইসলাম, মো. শামীম ও মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে সুমন। এর মধ্যে সুমন বসুন্ধরার দোকানদার। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৪৮টি ল্যাপটপ পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ ছয় লাখ ২৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার বলেন, চোর চক্রটি প্রথমে খালি বাসা রেকি করে। পরে ওই বাসা ফাঁকা থাকলে সেই বাসায় টার্গেট করে চুরি করে। মূলত যে বাসাগুলোতে সিকিউরিটি থাকে না এমন বাসা টার্গেট করে তারা।
জাফর হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে চোর চক্রের চারজনকে শনাক্ত করা হয়। এরপর চুরি যাওয়া একটি মোবাইলের সূত্র ধরে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দোকানে চোরাই ল্যাপটপ কেনাবেচার কথা জানা গেছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া দুটি ল্যাপটপসহ চোরাই ৪৮টি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার রনির কাছ থেকে কম দামে চোরাই ল্যাপটপ কেনেন দোকানদার সুমন।
ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার বলেন, গ্রেপ্তাররা শনিরআখড়ায় একটি কারখানায় কাজ করতেন। সেখান থেকেই এভাবে চুরি করার জন্য তারা এক হতেন। আর রাজধানীর কদমতলী, সূত্রাপুর, কলাবাগ, লালবাগ ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নাগরিকদের উদ্দেশ্যে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বাসা-বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগালে এমন চুরি থেকে কিছু রেহাই মিলতে পারে অথবা চুরি হলেও সহজেই চোরদের ধরা যাবে।
ল্যাপটপ চুরির পর কারও ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও কিংবা তথ্য ফাঁস করে দিতেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে জাফর হোসেন বলেন, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের দোকানটি চোরাই ল্যাপটপ কম দামে কিনতেন। এরপর সেগুলো ফরম্যাট দেওয়ার পর উইন্ডোজ দিয়ে বিক্রি করে দিত। তারা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস কিংবা ফাঁসের হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন না।
উদ্ধার হওয়া ৪৮ ল্যাপটপের মালিকানার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিআইডির ল্যাবে ডিজিটাল ফরেনসিক করে ল্যাপটপের মালিকানার তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
কালের আলো/এমএইচ/এসবি