বড় হামলার পরিকল্পনা ছিল নতুন জঙ্গি সংগঠন তাওহীদুল উলূহিয়্যাহর

প্রকাশিতঃ 5:15 pm | September 16, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দেশে বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা ছিল নতুন জঙ্গি সংগঠন তাওহীদুল উলূহিয়্যাহর। তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ (আল-জিহাদী) নামে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনটি গত ২-৩ মাস ধরে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তাদের মূল পরিকল্পনা ছিল আগামী বছর দেশে বড় ধরনের হামলা চালানো।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সংগঠনটির শীর্ষ তিন নেতাকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাওহীদুল উলূহিয়্যাহর শীর্ষ নেতা মো. জুয়েল মেল্লা (২৯), মো. রাহুল হোসেন (২১) ও মো. গাজিউল ইসলাম (৪০) নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর বারিধারায় অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট হেড কোয়ার্টারের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এটিইউয়ের ডিআইজি (অপারেশন্স) মোহা. আলীম মাহমুদ।

তিনি বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান পরিচালনা করে জুয়েলকে বাগেরহাট থেকে, জয়পুরহাট থেকে রাহুলকে ও রাজধানীর ভাসানটেক এলাকা থেকে গাজীউল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে জুয়েল এই সংগঠনের প্রধান। বাকি দুই জন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। সংগঠনটি ২-৩ মাস তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। তাদের পরিকল্পনা ছিল ২০২৪ সালে দেশে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা করা।

তিনি আরও জানান, অনেক দিন আগে এন্টি টেররিজম ইউনিটের অপারেশন উইংয়ের বিশেষ গোয়েন্দা দল জানতে পারে ’তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ (আল-জিহাদী)’ নামের একটি নতুন জঙ্গি সংগঠন তৈরি হয়েছে। সংগঠনটির সক্রিয় কয়েকজন সদস্য সংগ্রহের কাজ করছে। তারা সশস্ত্র উগ্রবাদী মতবাদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও নানামুখী সন্ত্রাসী হামলার ছক একে উসকানিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। নতুন এই সংগঠনের শীর্ষ নেতা ও অন্য সদস্যরা আইটি সম্পর্কে অধিকতর জ্ঞান অর্জন, বোমা তৈরি কৌশল শিক্ষা এবং সংগঠন পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

মোহা. আলীম মাহমুদ বলেন, এন্টি টেরররিজম ইউনিটের অপারেশন উইং গত ১৩ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী অভিযান শুরু করে। প্রথমে বাগেরহাটের রামপাল থেকে মো. জুয়েল মোল্লাকে (২৯) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে সংগঠনটির ৮টি পতাকা জব্দ করা হয়। তিনি ওই সংগঠনের শীর্ষ ব্যক্তি বলে জানা যায়। এর আগে উগ্রবাদী কাজে জড়িতের অপরাধে গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে ছিল বলেও জানা যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থেকে মো. রাহুল হোসেনকে (২১) গ্রেফতার হয়। তিনি সংগঠনটির দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তি। তিনি প্রচার-প্রচারণা, সদস্য সংগ্রহ ও বোমা ও অস্ত্র সম্পর্কিত বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল। এরপর রাহুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এটিইউ’র একই টিম ভাসানটেক এলাকা থেকে মো. গাজীউল ইসলামকে (৪০) গ্রেফতার করে। গাজীউল সংগঠনটির জন্য অর্থ ও সদস্য সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন।

ডিআইজি (অপারেশন্স) জানান, ইতিমধ্যে সংগঠনটি ’সাহেবে-কিরান বারাহ (দারুল জান্নাত)’ নামে সিক্রেট অনলাইন গ্রুপ ব্যবহার করে অসংখ্য সদস্য সংগ্রহ করেছে। তাদের কেউ কেউ নিষিদ্ধ ঘোষিত ’আনসার আল ইসলাম’ বা ’আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের’ অনুসারী হলেও নতুন সংগঠন গঠন করে নিজস্ব পরিকল্পনায় নিজেদের মতো করে দেশব্যাপী সশস্ত্র হামলা পরিচালনার পরিকল্পনা করে আসছিল। ইতিমধ্যে অসংখ্য যুবক এই সংগঠনের সদস্য হয়েছে। তাদের নামের তালিকা করে এন্টি টেররিজম ইউনিট তাদের গ্রেফতার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।

কালের আলো/এমএএইচইউ