তামিমের আচরণ বাচ্চা মানুষের মতো : সাকিব

প্রকাশিতঃ 11:12 am | September 28, 2023

কালের আলো ডেস্ক:

তামিম ইকবাল বিশ্বকাপ দলে নেই। বুধবার জাতীয় দল ভারতের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার পর দলে না থাকা এবং কেন বিশ্বকাপ থেকে সরে গেছেন, এক ভিডিওবার্তায় সেটা খোলাসা করেন দেশসেরা ওপেনার।

তামিমের কথার মূল বক্তব্য যদি ধরা যায় তবে বলা যায়, তাকে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে না খেলতে কিংবা নিচের দিকে খেলতে বলা হয়েছিল বিসিবির উচ্চপর্যায় থেকে। বিষয়টি ভালোভাবে নেননি তামিম। নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন।

কেন উত্তেজিত হয়েছিলেন, সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তামিম বলেন, ‘একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, আমি কোন মাইন্ডসেট থেকে আসছিলাম। হঠাৎ করে একটা ভালো ইনিংস খেললাম। আমি হ্যাপি ছিলাম। এর মধ্যে আবার এসব কথা, আমার পক্ষে নেওয়া আসলে সম্ভব না। আমি ১৭ বছর পর এক পজিশনে ব্যাটিং করছি, আমি কোনোদিন ৩-৪ নম্বরে ব্যাটিংই করিনি। এমন যদি হতো, আগেও করেছি, তাহলে একটা কথা ছিল।’

‘স্বাভাবিকভাবেই আমি কথাটা ভালোভাবে নেইনি। আমি উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ এই বিষয়টি আমি পছন্দ করিনি। আমার কাছে মনে হচ্ছে, আমাকে জোর করে অনেক জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। ইচ্ছে করে করে। এটা ঠিক হলো, আরেকটা নতুন জিনিস দেওয়া হলো। আমার তাই মনে হয়েছে’-যোগ করেন তামিম।

তামিম পরে অভিমান করে বলেন, এসব নোংরামির মধ্যে তিনি থাকতে চান না। তার চেয়ে বরং তাকে দলে না রাখলেই ভালো।

তামিমের এমন আচরণকে বাচ্চাসুলভ মনে করছেন সাকিব। দেশ ছাড়ার আগে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে (যেটি আজ রাত ১১টায় প্রচার হয়) তিনি বলেন, ‘রোহিতের (শর্মা) মতো ক্রিকেটার নাম্বার সেভেন থেকে এসে ১০ হাজার করে ফেলেছে। মাঝে মাঝে সেও যদি তিন-চারে খেলে, ব্যাটিংয়ে না নামে, খুব একটা কি সমস্যা হয়? এটা আসলে আমার কাছে মনে হয়, একদম বাচ্চা মানুষের মতো, “আমার ব্যাট আমি খেলবো। আর কেউ খেলতে পারবে না।”’

সাকিব বলেন, ‘আমি যেটা বললাম এটা আমার সঙ্গে কোনো আলোচনাই হয় নাই। তো এই প্রশ্ন কোথা থেকে আসছে আমি জানি না। আর যদি কেউ এমন কিছু বলে থাকে, আমি নিশ্চিত যেই বলেছে সে অথরাইজ মানুষ, এটা আগে থেকেই আলাপ করে রাখছিল যাতে করে সেটা জানা থাকলে দুই পক্ষের জন্যই ভালো হয়। এই রকম বলাতে খারাপ কিছু আছে আমি তো মনে করি না। এটা কেউ তো খারাপের জন্য বলবে না আমি নিশ্চিত।’

‘আমি নিশ্চিত এই কথাটা কেউ বলে থাকে সে টিমের কথা চিন্তা করেই বলেছে যে এরকম যদি আমরা কম্বিনেশন করি, এই রকম যদি আমরা চিন্তা করি এমন অনেক কিছুই আসে একটা ম্যাচকে কেন্দ্র করে। এ রকম কম্বিনেশন বানালে কি হতো, এ রকম কম্বিনেশন বানালে কি হতো। ওই হিসেবে কেউ যদি চিন্তা করে আগের থেকেই ক্লারিফিকেশন করে রাখতে চায় আমার তো মনে হয় যে আলোচনার কোনো দোষের আছে। এমন প্রস্তাব যদি কেউ দিয়ে থাকে এটাতে কি কোনো দোষের আছে? নাকি এমন কোনো প্রস্তাবই দেওয়া যাবে না যে একজনকে আমি বলব তুমি তোমার যা ইচ্ছা কর।’ -যোগ করে বলেন সাকিব।

তামিমকে টিমম্যান না মনে করে সাকিব বলেন, ‘পারসোনাল এচিভমেন্ট দিয়ে আপনি কি করবেন আসলে। আপনার নিজের নাম কামাবেন, তার মানে আপনি নিজের কথা চিন্তা করছেন। আপনি দলের কথা চিন্তা করছেন না। আপনি দলের কথা চিন্তা করছেন না মোটেও। মানুষ এই পয়েন্টগুলোই বোঝে না। আপনাকে যখন প্রস্তাবটা দেওয়া হয়েছে, কেন প্রস্তাবটা দেওয়া হয়েছে আপনার টিমের কোথা চিন্তা করেই দেওয়া হয়েছে। টিমের এভাবে হলে হয়তো টিমের জন্য ভালো হবে। সে কারণেই প্রস্তাবটা দেওয়া হয়েছে, যদি দেওয়াও হয়ে থাকে। এটাতে খারাপের কি আছে?

‘বিষয়টি মেনে অবশ্যই আলোচনার রয়েছে, না আমি পারব, আমি এটা পারব, তোমার কি লাগবে। তুমি বল আমাকে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব দলের জন্য। তাহলেই আপনি টিমম্যান। অন্যথায় ওইভাবে চিন্তা করলে আপনি টিমম্যানই না। আপনি খেলছেন ব্যক্তিগত রেকর্ড এবং সাফল্যের জন্য। নিজের ফেম এবং নেমের জন্য, টিমের জন্য না।’-যোগ করেন সাকিব।

কালের আলো/ডিএস/এমএম