সহিংসতায় মূল টার্গেট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নাশকতাকারীদের রাখা হচ্ছে পাঁচ তারকা হোটেলে

প্রকাশিতঃ 3:33 pm | November 02, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সহিংসতায় মূল টার্গেট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেছেন, আড়াইহাজারে পুলিশের ওপর সহিংসতার ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবাই বিএনপির পদদারী নেতা। ওইদিনের সহিংসতায় তাদের মূল টার্গেট ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সহিংসতা করার জন্য অর্থের জোগানদাতার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ সময় আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে যারা নাশকতার সঙ্গে জড়িত তাদের রাজধানীর পাঁচতারকা হোটেল বা বিভিন্ন হোটেলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। যারা নাশকতাকারীদের এ ধরনের সুযোগ দিচ্ছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরা র‌্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার ভোরে র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর গুলশান এলাকায় পাঁচতারকা হোটেল ওয়েস্টিনে অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেফতার করে। গত ৩১ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মহাসড়কে নাশকতা, সহিংসতা ও পুলিশ সদস্যদের কুপিয়ে জখম করার ঘটনার তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তির হলেন– মো. জুয়েল আহম্মেদ (৫২), মো. ইফসুফ আলী ভূঁইয়া (৬৯), মো. মাসুম শিকারী (৪৫), হাবিবুর রহমান সেলিম (৪৮), মো. শফিউদ্দিন ভূঁইয়া (৫১), মো. শফিউদ্দিন ভূঁইয়া (৪৮), মো. মাসুকুল ইসলাম রাজিব (৫৩), মো. শাকিল মিয়া (৪০), মো. আরমান মোল্লা (৪৬) ও মো. হাবিবুর রহমান (৫৪)।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ, গণমাধ্যমের ফুটেজ, মামলার এজহার ও সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্লেষণ করে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় নাশকতা ও সহিংসতা চালিয়ে পুলিশ সদস্যদের কুপিয়ে জখমের ঘটনায় সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।’

নাশকতাকারীরা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক গোয়েন্দা তথ্য থেকে আমরা জানতে পারি, তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। সেখানে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের টার্গেট। যেমন- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তিন সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভীত-সন্ত্রস্ত হয়। এটা তাদের জন্য একটি ইস্যু ছিল। ২৮ অক্টোবরের পরবর্তী সময়েও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য একটাই, ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা।’

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় চোরাগুপ্তা হামলা হয়েছে। যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত নেই। একটু নিরিবিলি পরিবেশ পেলে, সেখানেই তারা হামলা করছে, যাতে সাধারণ জনগণ গাড়ি বের করতে ভয় পায়। ব্যবসায়ীরা যেন বের হতে ভয় পান। এ বিষয়টি আমরা লক্ষ্য করছি।’

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘পাঁচ তারকা হোটেলে জেনেশুনে কেউ যদি কাউকে আশ্রয় দিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা নাশকতাকারীদের মদদ দিচ্ছে, অর্থায়ন করছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি চলমান। কারা পেছন থেকে কাজ করছে এসব বিষয়ক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কীভাবে তারা পাঁচ তারকা হোটেলে এলো, কীভাবে রুম পেলো, এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাঁচ তারকা হোটেলে বসে কীভাবে নাশকতা-সহিংসতার পরিকল্পনা করছিল সেসব বিষয়ও খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা।’

কালের আলো/বিএস/এমএইচ