বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ‘জয়েন্ট ট্রেনিং ডকট্রিন’ অনুমোদন প্রধানমন্ত্রীর, নিশ্চিত হবে প্রশিক্ষণ সুবিধাদির সর্বোচ্চ ব্যবহার

প্রকাশিতঃ 9:56 pm | November 21, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

একটি উন্নত ও আধুনিক সশস্ত্র বাহিনীর স্বপ্ন দেখেছিলেন বাঙালির স্বপ্নপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বপ্ন বাস্তবায়নে শুরু করেছিলেন অবিরাম কর্মযজ্ঞ। কিন্তু এক অন্ধকার রাতে ঘৃণিত ঘাতকের তপ্ত বুলেট স্তব্ধ করে দেয় বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের দ্ব্যর্থহীন বজ্রকণ্ঠকে। শোককে শক্তিতে পরিণত করার প্রতীতিতে অটল তাঁর কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন-আধুনিকায়নের অগ্রযাত্রাকে সমৃদ্ধির বন্দরে নোঙর করতে গ্রহণ করেন প্রখর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনায় প্রণয়ন করেন ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’। সমানতালে চলতে থাকে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন।

বাঙালি জাতির আস্থার প্রতীক এই বাহিনীটির অনুন্নয়নের অচলায়তন ভেঙে দক্ষ, প্রশিক্ষিত ও গতিশীল সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলতে দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকময় ঐশ্বর্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত ‘জয়েন্ট ট্রেনিং ডকট্রিন- বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস ২০২৩’ অনুমোদন দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের উদ্যোগে প্রস্তুত হওয়া ডকট্রিনটির আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন ও মোড়ক উন্মোচন করেন সরকারপ্রধান।

জানা যায়, প্রতিনিয়তই আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতির চিত্রে নতুন নতুন উপাদান যুক্ত হচ্ছে। নতুন মেরুকরণের পাশাপাশি ঘটছে সমীকরণের পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বহুমাত্রিক সময়োপযোগী সক্ষমতা অর্জন করছে। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ সুবিধাদির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতে আধুনিক কর্মপোযোগী এই মৌলিক ডকট্রিনটি প্রভাবকের ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যৌথ প্রশিক্ষণকে যুগোপযোগী ও কার্যকর করতে প্রণীত সময়োপযোগী ডকট্রিনটি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে উন্নয়নের মহাসড়কে উজ্জ্বল ও মহিমান্বিত স্মার্ট সশস্ত্র বাহিনীর দুর্বার পথচলায় বঙ্গকন্যার সরকারের সাফল্যের পালকেও সংযোজন করেছে নতুন মাত্রা। এর মাধ্যমে আধুনিক ও দক্ষ সশস্ত্র বাহিনী উপহারে নিজের ওয়াদাও রক্ষা করেছেন তিনি। কার্যকর এই পদক্ষেপের গতিধারায় কঠোর প্রশিক্ষণ ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে নিজেদের গৌরব সমুন্নত রেখে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ জাতীয় স্বার্থের মৌলিক প্রতিরক্ষাব্যূহ দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী আরও যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে ওঠবে।

আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে যুগোপযোগী, দক্ষ এবং এর যৌথ আভিযানিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনীর আভিযানিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য যৌথ প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সঠিক নির্দেশনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রশিক্ষণ পরিদপ্তর প্রস্তুত করে এই ‘জয়েন্ট ট্রেনিং ডকট্রিন- বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস ২০২৩’।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব:) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, যৌথ প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য, প্রশিক্ষণের ধারণা, সমন্বয়, কর্মপদ্ধতি ও প্রশিক্ষণ সুবিধাদির সর্বোচ্চ ব্যবহারের আদ্যোপান্ত সন্নিবেশিত হয়েছে এই মৌলিক ডকট্রিনটিতে। ডকট্রিনটি প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সীমিত সম্পদের যথাযথ ব্যবহার এবং জাতীয় মূল্যবান সম্পদের কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ, পেশাদারিত্ব এবং দক্ষতা অর্জনে সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়তা করবে, বলছে আইএসপিআর।

কালের আলো/এমএএএমকে