বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
প্রকাশিতঃ 9:53 pm | February 26, 2024
গোলাম কিবরিয়া মন্ডল, কালের আলো:
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জোরালোভাবে কাজ শুরু করেছে সরকার। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। পণ্যের অবৈধ মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণকারী বেপরোয়া সিন্ডিকেটকে থামাতে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনায় জোর দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। সরকারের তরুণ এই প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ব্যবসায়ীদের স্বার্থে নয় জনস্বার্থে, ভোক্তার স্বার্থে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার করেছেন। বাজারে ‘বিগ ফিশ’ বা ‘রাঘব বোয়াল’ সিন্ডিকেট সমূলে মূলোৎপাটনে আন্তরিক থাকার কথা বলেছেন। বাজার ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে ইতোমধ্যেই তাঁর মন্ত্রণালয় নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও আগেই ঘোষণা দিয়েছেন আগামী ১ মার্চ থেকে বাজার ব্যবস্থাপনায় দৃশ্যমান পরিবর্তন আনার। কৃষিপণ্যের উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম ওয়েবসাইটে দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই মোতাবেক কাজও চলছে। কারসাজি বন্ধে চালের বস্তায় উৎপাদনের তারিখ, কী ধানের চাল ও দাম সেটি লেখা বাধ্যতামূলক করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাণিজ্য, খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি রূপরেখা প্রস্তুত করে কাজ শুরু করেছে। পাশপাশি পণ্যের দাম নয় সরবরাহে গুরুত্ব দিয়েছেন নতুন এ বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি জানেন বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকলে দাম নিয়ে সমস্যা তৈরি হবে না। ফলত এদিকে বিশেষ নজর রাখছে মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্যে নিয়ে আসতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। উৎপাদক বা আমদানিকারক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে সময়ের ব্যবধান কমিয়ে আনতেও উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন- ‘পুলিশিং করে বা ভোক্তা অধিকার দিয়ে বাজার ব্যবস্থাপনা করার পক্ষপাতি আমি নই। চাহিদা ও জোগানের সমন্বয়ের মাধ্যমে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চাই। ভয়ভীতি দেখিয়ে নয়, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। এ জন্য চালু করা হবে স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনা।’
জানা যায়, রোজার আগে বাজার সামলাতে ও ভোক্তাদের স্বস্তি নিশ্চিত করতে সম্মিলিতভাবে কাজ শুরু করেছে বাণিজ্য, খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়। গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদসহ তিন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় বাজার ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর নানা প্রসঙ্গে নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও কর ও শুল্ক ছাড় ও বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে তাদের আহ্বান জানিয়েছেন।
বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর গাইডলাইন মোতাবেক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সঙ্গে নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী টিটু। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি নিজের একাগ্রতা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসন থেকে টানা দ্বিতীয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে যথাযথভাবে চেষ্টা করছেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের আন্তরিক প্রয়াস এবং সর্বাত্মক ভূমিকার বার্তা দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। নিজের বিরামহীন কর্মতৎপরতা, সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ এবং বড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলে বাজার সিন্ডিকেটের লাগাম টানার প্রচেষ্টার মাধ্যমে শুরুতেই নজর কেড়েছেন কথায় সংযত ও বিনয়ী এ প্রতিমন্ত্রী। আন্ত:মন্ত্রণালয় টাস্কফোর্সের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কঠিন যাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ তরুণ তুর্কি নিজের নেতৃত্বের সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছেন, এমন অভিমত বিশ্লেষকদের।
কালের আলো/জিকেএম/এমকে