বিএনপিকে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিতঃ 4:09 am | February 11, 2018

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
দুর্নীতি মামলায় দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৫ বছরের দন্ড মাথায় নিয়ে কারাগারে যাওয়ায় বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে সক্রিয় থাকতে চাইছে দেশের সাবেক বিরোধী দল বিএনপি। এমনকি খালেদার কারাগারে যাওয়ার মধ্যেও এক ধরণের ইতিবাচক দিকের সন্ধান করছে দলটি!

কারাগারে থাকায় তাদের নেত্রীর জনপ্রিয়তাও বেড়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। ফলে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে সরব থাকার পক্ষেই মত রয়েছে দলটির শীর্ষ নেতাদের। তবে বিএনপি’র এমন পরিকল্পনাকে সন্দেহের চোখেই দেখছে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ।

‘কোমরভাঙা’ এ দলটি রাজপথে থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির নামে দেশে বিশেষ করে রাজধানীতে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে বলেও মনে করেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। ফলে তাদেরকে রাজপথেই মোকাবেলা করার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান। এর মাধ্যমে ‘ধর্মান্ধ’ জামায়াত-শিবিরের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে পরিচিত এ দলটিকে সমুচিত জবাব দিতেও চান তিনি।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ এ বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে এমন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়ার পাশাপাশি রাজপথ নিজেদের দখলে রাখার অঙ্গীকার করেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের এ সভাপতি।

মাত্র কয়েক ঘন্টার নোটিশে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সমাবেশে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননা ও ভাংচুরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাঁরা বলেন, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমানের হুকুমে যুক্তরাজ্য বিএনপি-জামায়াত বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননা ও বাংলাদেশী দূতাবাস ভাংচুর করেছে।

এ সময় বক্তারা তারেক রহমানকে ‘সন্ত্রাসের গডফাদার’ ও ‘দেশদ্রোহী’ উল্লেখ করে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে দলীয় নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করে তোলা এ বিক্ষোভ সমাবেশে এ ইউনিটের অন্তর্গত সব থানা-কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মিছিল নিয়ে যোগ দেন। ফলে সমাবেশ শুরুর আগেই মিছিলে মিছিলে একাকার হয়ে যায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর।

দীর্ঘদিন পর সংগঠনটির বড় রকমের এমন শোডাউনের মাধ্যমে সংসদের বাইরে থাকা বিরোধী দলকে সতর্ক সংকেত দেয়া হয়েছে বলেও মনে করেন সংগঠনটির তৃণমূলের কর্মীরা। বিক্ষোভ সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে নিজের মুগ্ধতা প্রকাশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মেদেরও নেতৃত্ব গুণের প্রশংসা করেন তিনি। দেশের স্পর্শকাতর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালনায় দক্ষতা ও সাফল্যের ছাপ রাখা মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি যারা বিকৃত করেছে তারা সভ্য মানুষ নয়। এটা আমাদের জাতির জন্য অত্যন্ত নেক্কারজনক ঘটনা। যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।’

সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন জনবিচ্ছিন্ন একটি দল। বাংলাদেশের জনগণ বিএনপির কোনো কর্মসূচির সায় দেয় না।’

দলীয় সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে সৈয়দ মিজানুর রহমান দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তৃণমূল থেকে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার উদ্যোগ নেন। সংগঠনটির প্রতিটি কর্মসূচিতেই বরাবরই বড় বড় শোডাউন করে তাক লাগিয়েছেন তিনি। ‘কর্মীবান্ধব’ ও পরিশ্রমী এ ছাত্রনেতা নেতা-কর্মীদের নানাভাবেই উজ্জীবিত করে রাখেন।

রাজপথে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান দৈনিক কালের আলোকে বলেন, ‘আদালতের ঐতিহাসিক এক রায়ে এতিমের টাকা মেরে খাওয়া খালেদা-তারেক নিজেদের কর্মফল ভোগ করেছেন। এ রায় প্রমাণ করেছে কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। এ রায় খালেদা-তারেকের মতো দুর্নীতিবাজদের জন্য একটি বড় বার্তা।

তিনি বলেন, যুগান্তকারী এ রায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইছে। তাঁরা নানা রকমের ফন্দি ফিকির আঁটছে। কিন্তু এ অপশক্তিকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগই যথেষ্ট।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ জননেত্রী শেখ হাসিনার ‘ভ্যানগার্ড’ হিসেবে কাজ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সংগঠনটির প্রতিটি নেতা-কর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন’ এমন আশাবাদ এ নেতার।

কালের আলো/এসএ

আরো পড়ুন : বাংলা‌দে‌শের জনগণ বিএন‌পির কোনো কর্মসূ‌চির সায় দেয় না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী