ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা চায় হাইকোর্ট

প্রকাশিতঃ 4:02 pm | February 13, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলোঃ

গত ২০ বছরের ব্যাংকিং খাতের ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার(১৩ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

সঙ্গে বিগত বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে কী পরিমাণ অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, তা নির্ণয়ে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনের জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

এতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। রিটের শুনানিকালে আদালত বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে এরইমধ্যে অর্থনৈতিকভাবে একটি নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতি খুব দ্রুত বন্ধ করে অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে একটি শক্তিশালী জায়গায় নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আদালত আরো বলেন, সরকারি এবং বেসরকারী ব্যাংকে নিয়ম-নীতি মেনে ঋণ প্রদান করার কথা ছিলো।

যদি তা না মানা হয়, যারা যারা ঋণ গ্রহণ করেছেন এবং অর্থপাচার করেছেন তাদের তালিকা করে এবং তাদের আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধার করে একটি প্রতিবেদন করে আদালতে দাখিল করতে হবে।

এছাড়া, ওই আত্মসাতের অর্থ দেশ কিংবা বিদেশের যেখানেই থাকুক না কেন তা (আত্মসাৎকৃত অর্থ) ফিরিয়ে আনতে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তাও প্রতিবেদন উল্লেখ করতে হবে।

এর আগে, গত ২৩ জানুয়ারি ব্যাংকিং খাতে অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, বিভিন্ন প্রাইভেট ও পাবলিক ব্যাংক সমূহে ব্যাংক ঋনের ওপর সুদ মওকুফ সংক্রান্ত বিষয় তদন্ত এবং তা বন্ধে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য কমিশন গঠন করার অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ৫ মন্ত্রণালয়ের সচিবদের একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছাড়াও নোটিশপ্রাপ্ত অন্যরা ছিলেন, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং আইন মন্ত্রণালয় সচিব।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইআরপিবি) পক্ষে এ নোটিশ দেওয়া হয়। এতে ৭ দিনের মধ্যে ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত ও প্রতিরোধে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য ১৯৫৩ সালের ইনকোয়ারী কমিশন অ্যাক্টের অধীনে একটি কমিশন গঠনের অনুরোধ জানানো হয়েছিলো। কিন্তু সে নোটিশের কোন সদুত্তর না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

কালের আলো/এমএইচএ