জনগণের পাশে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার, গুজব সম্পর্কে সচেতন থাকার পরামর্শ সেনাপ্রধানের
প্রকাশিতঃ 12:22 am | August 04, 2024
কালের আলো রিপোর্ট:
গুজবে ভাসছে সোশ্যাল মিডিয়া। দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে গোয়েবলসীয় কায়দায় পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে গুজব আর অপপ্রচার। আর এই গুজব সন্ত্রাসের প্রাইম টার্গেট হয়ে ওঠছে দেশপ্রেমী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। দেশের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপকৌশলের মাধ্যমে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে ও অস্থিতিশীল করে তুলতে মরিয়া স্বাধীনতা বিরোধী চক্রটির লক্ষ্যবস্তু দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক এই বাহিনীটি। দেশের চলমান এমন পরিস্থিতিতে গুজব সম্পর্কে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
তিনি জনগণের স্বার্থে ও রাষ্ট্রের যেকোন প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে বলে দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। শনিবার (০৩ আগস্ট) সেনাসদরের হেলমেট অডিটোরিয়ামে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ গ্রহণকালে অনির্বাণ এক শিখার মতো অফুরন্ত শক্তি ও সাহসের বর্ণময় মন্ত্র তিনি গেঁথে দেন উচ্চ পদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের হৃদয়-মস্তিষ্কে। সেনাপ্রধানের কার্যকর এ দিকনির্দেশনায় অশান্বিত বাহিনীটির সবাই।
নিজেদের প্রবল সাহস, সততা ও আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যদিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দেদীপ্যমান করেছেন দেশের প্রতি দায়িত্ববোধকে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের জনগণের আস্থার প্রতীক। তিনি যেকোন পরিস্থিতিতে জনগণের জান-মাল ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রদান করেন। তাঁর ঐতিহাসিক এসব দিকনির্দেশনা প্রকারান্তরে নিজেদের বিবেক, মূল্যবোধ, রুচিবোধ ও দেশপ্রেমের গভীর দর্শনের বহি:প্রকাশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সম্প্রতি আন্দোলনের নামে জুলাই তাণ্ডবের মধ্যে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে গত ১৯ জুলাই মধ্যরাত থেকে দেশে কারফিউ জারি করা হয়। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনী। এবার তৃতীয় একটি পক্ষের উস্কানিতে রোববার (০৪ আগস্ট) থেকে অসহযোগের আহ্বান করেছে আন্দোলনকারীরা। এরই মধ্যে সেনা সদরে এই নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ হয়।
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এদিন তাঁর মূল্যবান বক্তব্যে সকল সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেশের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর আলোকপাত করে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন এবং তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলমান বিভিন্ন গুজব সম্পর্কে সচেতন থাকার পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি সততা, সত্যনিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়ণতার সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারাসহ সকল সেনানিবাস থেকে ফরমেশন কমান্ডাররাসহ সকল পদবির সেনাকর্মকর্তারা ভিডিও টেলিকনফারেন্স (ভিটিসি) এর মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, অনুষ্ঠানে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, আপনারা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দ্বারা পক্ষপাতদুষ্ট হবেন না এবং অন্ধভাবে বিশ্বাস করবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনারা যা দেখছেন তা সত্য নাও হতে পারে। গুজব এড়িয়ে চলুন। দেশে এখন একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যা স্বাভাবিক করার দায়িত্বে সেনাবাহিনীকে সারাদেশে নিয়োজিত করা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ভাঙচুরের হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্বও সেনাবাহিনীর বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি জানান, বেসারিক প্রশাসনের নির্দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের কর্তৃক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু সতর্কীকরণ ফায়ার করা হলেও তাতে কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি। শুধু ৫ জন বেসামরিক ব্যক্তির আহতের খবর পাওয়া গেছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সবার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের কারো মনে কোনো প্রশ্ন জন্ম নিলে সরাসরি আমাকে জিজ্ঞেস করবেন এবং কখনোই গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না।’
কালের আলো/এমএএএমকে