অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালনে প্রস্তুতের দৃঢ় অঙ্গীকার বিমান বাহিনীর প্রধানের

প্রকাশিতঃ 9:38 pm | August 14, 2024

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

দেশের অভ্যন্তরীণ বিমান বন্দরসমূহের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে সহায়তায় দেশের বিমান বন্দরগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কুইক রিয়েকশন্স ফোর্সের সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের চলমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিমান বন্দর ও আশপাশের এলাকায় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালনের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাহিনীটির সদ্যরা।

সামগ্রিক পরিস্থিতি নিজ চোখে পর্যবেক্ষণে বুধবার (১৪ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন যশোর বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন। দৃঢ় অঙ্গীকার করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে দায়িত্ব দেবে সেই দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালনে নিজেদের প্রস্তুত থাকার কথা। তিনি বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা বদ্ধপরিকর।’ তিনি বিমান বন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের পরিচালনা ও নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিদর্শন করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

এর আগে গত রবিবার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান চট্টগ্রামে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এ কর্মরত বিমান বাহিনীর সদস্যদের অপারেশনাল কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

প্রথম থেকেই আমরা তৎপর ছিলাম
যশোর বিমানবন্দর পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন বলেন, ‘বিমান বাহিনী হিসেবে প্রথম থেকেই আমরা তৎপর ছিলাম। আমাদের কাজ হচ্ছে অ্যাভিয়েশন রিলেটেড এবং সিভিল এভিয়েশনেও আমাদের অনেক সদস্য আছেন, চেয়ারম্যানও আছেন। সেক্ষেত্রে আমরা প্রথমেই ভেবেছিলাম বিমানবন্দরটাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। বিশ্বের সঙ্গে বিভিন্ন মালামাল বহন করা হয়। বিমানবন্দরগুলোতে বিভিন্ন দেশের বিমান আসে। বিশেষ করে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিভিন্ন দেশের নামি-দামি অনেক বিমান থাকে। সেখানে যদি কোনো বিমানে কোনো প্রকার দুর্ঘটনা ঘটত তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে যেতে পারত। সেই কথা বিবেচনা করে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্দেশ দিয়েছিলাম। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, যশোরসহ সকল বিমানবন্দরে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।’

আকাশ প্রতিরক্ষার দায়িত্ব চলমান আছে
হাসান মাহমুদ খাঁন বলেন, আমাদের বিশেষ দায়িত্ব আকাশ প্রতিরক্ষা, এটি চলমান আছে। তবে এটি সব সময় সকলের দৃষ্টিগোচর হয় না। এ দায়িত্ব শান্তিকালীন, যুদ্ধকালীন সব সময় চলমান বিষয়। আমাদের এ সকল দায়িত্বের পরেও আমাদের সীমিত জনবল দিয়ে ঢাকাতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করেছি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, যশোর বিমান বন্দরের নিরাপত্তা কার্যক্রম শুরু থেকেই তদারকি করছে। এ ঘাঁটির নিরাপত্তা দল বিমান যাত্রীদের আগমন ও প্রস্থানকালে বাড়তি নিরাপত্তা ও সহযোগিতা প্রদানের পাশাপাশি বিমান নিরাপদ উড্ডয়ন ও অবতরণে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে। মতিউর ঘাঁটির টাস্কফোর্স ও স্ট্রাইকিং ফোর্স এ বিমান বন্দর পার্শ্ববর্তী এলাকায় সার্বক্ষণিক নজরদারিসহ বিমান পরিচালনার সকল কাজে কারিগরি ও প্রশাসনিক সহায়তা দিয়ে আসছে। বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ও বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের নিবিড় সমন্বয় ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে যশোর বিমান বন্দরে এ পর্যন্ত বিমান চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় কোন ব্যত্যয় সৃষ্টি হয়নি।’

যশোর বিমান বন্দরের নিরাপত্তা পরিবেশ ও সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান এর বিশেষ নিরাপত্তা দল বিমান বন্দর ও তার চতুর্দিকে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বিমান বন্দরের অভ্যন্তরে, আসা-যাওয়ার পথে ও রানওয়ের উভয়পাশে বিশেষ চৌকি স্থাপন করে মতিউর ঘাঁটির সদস্যরা নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। বিমান বন্দরে যানবাহন আসা যাওয়াকে সুশৃঙ্খলকরণে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজও এ ঘাঁটি সুচারুরূপে করে যাচ্ছে। বিমান বাহিনীর সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে যশোর বিমান বন্দরের সকল ফ্লাইট সময়মতো উঠা-নামাসহ নিরাপত্তা পরিবেশ ও সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।

বিমান বাহিনী খাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সকল বিমান ও হেলিকপ্টারসমূহ দেশের যেকোন ক্রান্তিলগ্নে সর্বাত্মক সহায়তার জন্য সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। জাতির বৃহত্তর প্রয়োজনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি এ ঘাঁটির দেশপ্রেমিক বৈমানিকরা দুঃসাহসিক হেলিকপ্টার অভিযানের মাধ্যমে যশোর শহরে অবস্থিত বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে আটকেপড়াদের সফলভাবে উদ্ধার করে।

বিমান বাহিনী প্রধানের পরিদর্শন কার্যক্রম চলাকালে সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিকল্পনা), বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের এয়ার অধিনায়ক, বিমান সদর ও ঘাঁটির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং যশোর বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপকসহ বিভিন্ন পদবির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এমএএএমকে