প্যারাস্যুটে বিমান বাহিনীর ত্রাণ কার্যক্রমে বানভাসীদের স্বস্তি
প্রকাশিতঃ 11:43 pm | August 23, 2024
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
চারিদিকে শুধুই পানি আর পানি। তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে বসতভিটা। স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলায় ৪৫ লাখ মানুষ। কোথাও কোথাও পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, সম্পদ বাঁচানোর চিন্তা বাদ দিয়ে প্রাণ বাঁচানোই মুখ্য হয়ে ওঠেছে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ; বিদ্যুৎ সংযোগও নেই। মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সার্ভিসও বন্ধ। পাহাড়ি ঢলের প্রবল চাপ ও অবিরাম বৃষ্টিতে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কার্যক্রমও।
এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) আকাশ পথে দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দিনভর ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালিয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে বাহিনীটির পক্ষ থেকে। হেলিকপ্টারে করে দুর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন। তিনি হেলিকপ্টার থেকে রিলিফ অপারেশন পর্যবেক্ষণ করেন। পরবর্তীতে আরও সুষ্ঠভাবে রিলিফ অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করতে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। পাশাপাশি তিনি জোর দেন আটকে পড়াদের উদ্ধার কার্যক্রমে। পরিদর্শনকালে দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি বলেছেন, বানভাসীদের রক্ষায় প্রস্তুত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যরা। ত্রাণ বিতরণে সরকারি-বেসরকারি সামরিক ও বেসামরিক সকলের সহযোগিতা অব্যাহত রাখারও আহ্বান জানান বিমান বাহিনী প্রধান।
জানা যায়, হেলিকপ্টার থেকে দুর্গত এলাকায় জনগণের জন্য প্যারাস্যুটের মাধ্যমে এদিন ফেলা হয় ত্রাণ। পানিবন্দী জীবনে যেটি স্বস্তি জুগিয়েছে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের। ফেনী, ফুলগাজী ও পরশুরামসহ বেশ কিছু এলাকায় দিনভর চলে এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম।
বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন বলেন, ‘আজকে আমরা অলরেডি ১০টি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ৬০০ থেকে ৭০০ প্যাকেট ত্রাণ এয়ার ড্রপ করেছি। আমি নিজে আজকে গিয়েছিলাম পরিস্থিতি দেখার জন্য। আসলেই সেখানে পরিস্থিতি ভয়াবহ। যতদিন না সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে ততদিন আমাদের এ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। পরবর্তীতে আমাদের মেডিকেল টিমও সেখানে যাবে।’
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস, এশিয়ান পেইন্টস, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এর ‘প্রকৃতি ও জীবন’সহ সামরিক বেসামরিক সংস্থা বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে ত্রাণসামগ্রী প্রদান করেছে। যেকোন সময় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিমান বাহিনীর বিমানসমূহ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ডিজাস্টার ম্যানেজম্যান্ট সেল চালু করা হয়েছে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত রয়েছে।
কালের আলো/এমএএএমকে